×

ভিডিও

গাজায় একসাথে চার সন্তান হারিয়ে দিশেহারা বাবা-মা!

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৩ এএম

বেথলেহেম, অধিকৃত পশ্চিম তীরে হানান আল-কিক বেইট জালা হাসপাতালের বিছানায় অসুস্থ সন্তানের পাশে বসে আছেন এক মা! ফ্যাকাশে মুখ, দূর থেকে চোখের পানি স্পষ্ট দেখা যায়। কেউ সালাম দিলে অভিবাদন জানানোর একটু হাসি জোগাড় করার চেষ্টা করছে… 


ক্লান্ত ঐমহিলার পাশে বসে আছেন তার স্বামী, নাম মাজেন।বয়স ৫৫ বছর। গাজার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মচারী যিনি তার কাজ ছেড়ে অধিকৃত পশ্চিম তীরে এসেছেন, যেখানে তাদের এক ছেলে ফাদির চিকিৎসা চলছে।


পঞ্চাশ বছর বয়সী মহিলা হানান বলেছেন, যখন তিনি এবং মাজেন তাদের সন্তান ফাদির শয্যার পাশে তাদের দেখাশোনা করছেন, তার সুস্থতার জন্য দোয়া করছেন ঠিক সেই সময় গাজায় ইসরায়েলের বুলেটের আঘাতে আরও চারটি সন্তান শহীদ হয়েছেন।


এই দম্পতির সাত সন্তান ছিল। ৪ মেয়ে ও ৩ছেলে। এখন তাদের মাত্র তিনটি সন্তান রয়েছে । যখন এক সন্তানের চিকিৎসার জন্য হানান ও মাজেন গাজা ত্যাগ করছিলেন তখন ৩টি সন্তানকে ইসরাইলের বুলেটের হাত থেকে বাঁচাতে আশ্রয় শিবিরে রেখে  গিয়েছিলেন। কিন্তু দখলদার ইসরাইল আশ্রয়শিবিরে হামলা করলে ঔ ৩ সন্তানের সবাই নিহত হয়।


অক্টোবরে যখন গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হয়, তখন হানান ও মাজেন এক দুর্ঘটনায় আহত তাদের সন্তানের চিকিৎসার জন্য উদ্বিগ্ন ছিল। এরপর অসুস্থ সন্তান নিয়ে তারা তেল আবিবের তেল হাশোমার হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাদের সন্তানের অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। 


হানান তার বাচ্চাদের সাথে প্রতিদিন যতবার পারত কথা বলত। যখন হানান তাদের সন্তানদের খবর নেয়ার জন্য ফোন করতেন। হানান বলেন,

আমি যখন তাদের ফোন করতাম তখন ভয়ে ফোনে কাঁপতে কাঁপতে তারা আমার সাথে কথা বলতো। যখনই আশেপাশে কোন হামলার শব্দ শুনতে পেত তখন তারা  চিৎকার করে কাঁদতে থাকতো যা আমি শুনতে পেতাম।


বাচ্চারা কাঁদতে কাঁদতে বলতো 'মা, আমরা মারা যাচ্ছি,। "হানান বলেন, তখন আমি তাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করতাম। 

তাদের আমি বোঝানোর চেষ্টা করতাম এই যুদ্ধ দ্রুত থেমে যাবে। তোমরা ভয় পেয় না। তোমাদের কোন বিপদ হবে না।  

হানান তার চোখ থেকে পানি মুছতে মুছতে এগুলো বলছিলেন। 


হানান আরও জানান, 

আমার সন্তানরা আমাকে ফোনে বলতো ---'মা, আমরা শহীদ হব। আর আমরা যদি শহীদ হয়ে যায় তাহলে আপনারা  কাঁদবেন না। অথবা যদি আমাদের শরীরের কোন অঙ্গ হারিয়ে ফেলি তাহলে কষ্ট পাবেন না, কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই বলছিলেন হানান। 


মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আবার ঝাঁপিয়ে পড়ে। একদিন হানান শুনতে পান যে তার সন্তানরা যেখানে আছেন সেখানে ইসরায়েলি হামলায় ১৬ জন নিহত হয়েছে। 


হানান এবং মাজেন আইসিআরসি ও প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কাছে ফোন করে জানতে পারেন তাদের ৪সন্তানের সবাই শহীদ হয়েছে। 


হানান সন্তানদের কথা বলতে বলতে কাঁদতে থাকে। হানান জানান, তার বাচ্চারা  তাদের  ভাই ফাদির সুস্থ হওয়ার এবং বাসায় ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করছিল…বলে আবারো কাঁদতে লাগলেন। 


হানান জানান এখন গাজায় ফিরতে চান না তিনি। সেখানে এখন তাদের কেউ নেই, কিছু নেই...


টাইমলাইন: ইরান–ইসরায়েল উত্তেজনা

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App