×

ভিডিও

জলদস্যুদের কড়া পাহারায় নাবিকরা ঈদের নামাজ পড়লেন জাহাজেই!

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৮ পিএম

সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ জিম্মি হওয়ার একমাস হল আজ। ঘটনার পরপরই জাহাজের মালিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারের তৎপরতায় জিম্মি ২৩ নাবিক ও তাদের পরিবারের মনে আশা ছিল, হয়তো ঈদের আগেই তারা মুক্ত হয়ে দেশে ফিরবেন।


তেমন হলে হয়তো এবারের ঈদ হতে পারত তাদের জীবনের সেরা ঈদ। কিন্তু তা হয়নি। জলদস্যুদের কড়া পাহারায় নাবিকরা ঈদের নামাজ পড়েছেন জাহাজেই। সারা দেশে যখন সবাই ঈদের আনন্দে মাতোয়ারা, তখন তাদের পরিবারগুলো দিন কাটছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায়।


সম্প্রতি পরিবারের কাছে পাঠানো অডিও বার্তায় জাহাজের এক জ্যেষ্ঠ নাবিকের কণ্ঠেও ঝরে পড়ল সেই আক্ষেপ। বার্তার শুরুতেই এই নাবিক বলেন, 'মনে প্রাণে দোয়া করছিলাম, এবারের ঈদটা যেন বাসায় করতে পারি। কারণ, এবার আমাদের সঙ্গে ঈদ করতে অপেক্ষা করছে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। এভাবেই তাদের কষ্টের অনুভূতি অডিও বার্তায় প্রকাশ করলেন এই নাবিক।


জিম্মি অবস্থায় একমাস নাবিকদের কীভাবে কেটেছে, তার কিছুটা প্রকাশ পেয়েছে এই নাবিকের অডিও বার্তায়। তিনি বলেন, 'মূলত ক্যাপ্টেন মো. আব্দুর রশিদ স্যারের সুন্দর ম্যানেজমেন্ট এবং সব নাবিকের ধৈর্য ও সুন্দর মন-মানসিকতার ফলে শুরু থেকেই সোমালিয়ার জলদস্যুদের সঙ্গে আমাদের একটা ভালো বোঝাপড়া হয়েছিল। তাছাড়া একবার জিম্মি হয়ে গেলে তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করা ছাড়া আর কিছু করা সম্ভব নয় বলে জানান ঐ নাবিক। 


'শুরুতে জলদস্যুরা বাংলাদেশী নাবিকদের সাথে কঠোর আচরণ করলেও যখন তারা আশ্বস্ত হল, তখন তারা নামাজ-রোজা জন্য কিছুটা ছাড় দিয়েছে বলেও জানান ঐ নাবিক। ফলস্বরূপ দিনে কেবিনে ভিতর এবং রাতে সবাইকে ব্রিজে থাকার অনুমতি দেয় জলদস্যুরা। এছাড়াও সপ্তাহে একদিন স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুমতিও দেয়।'


ভিন্ন এক পরিবেশে বন্দি অবস্থায় প্রতিকূলতার সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করেছেন সবাই, এই নাবিকের কণ্ঠে তার কিছুটাও ফুটে উঠেছে। নাবিকরা জানায়, 'পরিস্থিতির কারণে এখন সবাই দুম্বার মাংস খেতেও অভ্যস্ত হয়েছি, তেমনি সপ্তাহে একদিন এক ঘণ্টা করে পানি ব্যবহার করতে অভ্যস্ত হয়েছি। কবে নাগাদ মুক্ত হবো সেটা ভাবতে ভাবতে সারারাত নির্ঘুম কাটানোর অভ্যাসও আমাদের হয়ে গেছে। 


ঐ অডিও বার্তায় নাবিকরা জানান, 'আমরা আশা করব পুরো দেশবাসীর দোয়ায় এবং সরকারের হস্তক্ষেপে খুব শিগগির দস্যুদের সঙ্গে মুক্তিপণের বিষয়ে একটি ফয়সালার মাধ্যমে দ্রুতই অবসান ঘটবে এই জিম্মিদশার।'


নাবিকরা আশা প্রকাশ করেন 'ইনশাআল্লাহ, ঈদের পর আবার ঈদ হবে আমাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে, প্রিয় মাতৃভূমিতে, প্রিয় বাংলাদেশে। অডিও বার্তার শেষ মুহূর্তে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে বাংলাদেশি জাহাজের জিম্মি হওয়া নাবিকরা সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন। 

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App