×

ভিডিও

একটি আইফোনে কত লাভ করে অ্যাপল?

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৪ পিএম

আইফোন মানেই সাধারণ মানুষের কাছে আভিজাত্যের প্রতীক, আর দাম তার আকাশচুম্বী। বর্তমান সিরিজে লাখ টাকার নিচে ব্র্যান্ড নিউ আইফোনের দাম ভাবাই যায় না। আইফোনের এমন আকাশচুম্বী দাম দেখে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে একটি আইফোন বিক্রি করে কত মুনাফা করে অ্যাপল? বিশ্বের সবচেয়ে দামি স্মার্টফোন তৈরিতে শ্রমিকদের রয়েছে নানা অভিযোগ। 


শখের দাম লাখ টাকা। শখের ফোন হিসেবে আইফোনের চাহিদা থাকে সবসময় তুঙ্গে। বিশ্বের জনপ্রিয় কোম্পানি এ্যাপলের লভ্যাংশ কোন অংশে কম নয়। সম্প্রতি ইনভেস্টোপেডিয়া ও ফোর উইকসের প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে আইফোন বিক্রি থেকে অ্যাপলের মুনাফার তথ্য। একটি অ্যাপল আইফোন-১৪ প্রো ম্যাক্স তৈরি করতে অ্যাপলের খরচ হয়েছিল ৫০০ ডলার। আর তারা বাজারে এ আইফোন বিক্রি করেছে ১ হাজার ১০০ ডলার করে। অর্থাৎ শুধু একটি আইফোন বিক্রি করে অ্যাপলের মুনাফা ৬০০ ডলার।


মুনাফার পাশাপাশি কর্মীদের কীভাবে কম বেতন দিয়ে নিজেদের লাভের ভাগ ঠিক রাখছে আইফোন সেটিও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। যেসব কর্মী আইফোনের চীনের কারখানায় কাজ করেন তাদের প্রতি ঘণ্টার গড় বেতন মাত্র ১২ ডলার। মূলত সস্তায় আইফোন তৈরির জন্যই চীনকে বেছে নিয়েছে অ্যাপল।


একটি আইফোন অ্যাসেম্বল করতে একজন কর্মীকে টানা ১৭ ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হয়। যারা এ ধরনের কাজ করে থাকেন তাদের দৈনিক আয় মাত্র ৩০ ডলার। অর্থাৎ যন্ত্রপাতির হিসাব বাদ দিলে মাত্র ৩০ ডলারের কাজ করিয়ে প্রতিটি কর্মীর থেকে দিনে একটি করে আইফোন বানিয়ে নিচ্ছে অ্যাপল।

 

সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইফোনের পেছনের লেখা ‘ডিজাইনড বাই অ্যাপল ইন ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাসেম্বেলড ইন চায়না’ লেখাটি অনেকের মনে প্রশ্ন জাগায় সিলিকন ভ্যালি ছেড়ে অ্যাপল কেন চীনে এলো? মূলত যুক্তরাষ্ট্রে শ্রম আইন কঠোর হওয়ার কারণে সস্তা শ্রমের খোঁজে চীনের দিকে অভিযাত্রা অ্যাপলের। বিভিন্ন সময়ে জানা গেছে, ফক্সকন কর্মীদের এত বেশি পরিমাণ চাপের মধ্যে রাখে যে কারখানায় আত্মহত্যার ঘটনা অহরহ ঘটে।


২০১০ সালে হতাশাগ্রস্ত হয়ে প্রায় ২ ডজন কর্মী আত্মহত্যার চেষ্টা চালান এবং এদের মধ্যে ১৪ জন কর্মী মারা যান। মারা যাওয়া কর্মীদের সুইসাইড নোট থেকে জানা যায়, লাগাতার কাজের চাপ এবং কর্তা ব্যক্তিদের প্রতিদিনকার অপমানের ফলশ্রুতিতে দীর্ঘদিন ধরে হতাশায় ভুগছিলেন তারা। সেই হতাশা থেকেই আত্মহননের পথ বেছে নেন এসব কর্মী।


আইফোনের প্রধান নির্বাহী টিম কুক জানিয়েছেন, গত এক দশকে শুধু আইফোন বিক্রি করে অ্যাপল আয় করেছে দেড় ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি। দিন যত যাচ্ছে আইফোন বিক্রি তত বাড়ছে; যার প্রমাণ মেলে গত বছর স্যামসাংকে হটিয়ে আইফোনের এক নাম্বার স্মার্টফোনের জায়গা দখল করে নেয়া থেকে।


প্রতিবার নতুন মডেলের সিরিজে ধাপে ধাপে দাম বাড়িয়েছে আইফোন। যেখানে বছর খানেক গায়ে আইফোন-৭ এর অফিশিয়াল দাম ছিল ৪৪৯ ডলার, সেখানে আইফোন-১৫ প্রো ম্যাক্সের সর্বনিম্ন অফিসিয়াল দাম ১ হাজার ৩৯৯ ডলার। হু হু করে আইফোনের দাম বাড়লেও সে হিসাবে এসব কারখানায় থাকা কর্মীদের বেতন বা সুযোগ সুবিধা বাড়েনি। এতে করে অ্যাপল প্রতিটি আইফোন বিক্রি করে স্মার্টফোনের দুনিয়ায় স্মরণকালের সেরা মুনাফা তুলে নিচ্ছে।


টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, গত এক দশকে স্যামসাং মোট ৮০০ মিলিয়ন স্মার্টফোন বাজারে শিপমেন্ট করেছে। অন্যদিকে এক দশকে আইফোনের এ শিপমেন্টের পরিমাণ ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন।

 

২০২৩ সালে অ্যাপল মোট ২৩৫ মিলিয়ন আইফোন শিপমেন্ট করেছে। ২০১৩ সালের সঙ্গে তুলনা করলে ১০ বছরে আইফোনের শিপমেন্ট বেড়েছে ৫৩ শতাংশ। এভাবেই দিনকে দিন বিক্রি বাড়ছে আইফোনের; আর লাভের হিস্যার পাহাড় গড়ছে বিশ্বের এক নাম্বার টেক কোম্পানি অ্যাপল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App