×

ভিডিও

যে স্থানের মানুষেরা নাম ধরে ডাকে না, আজও শিস বাজিয়ে কথা বলে!

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৪ পিএম

এখানকার মানুষেরা কাউকে নাম ধরে ডাকে না, একে অপরকে সুরে সুরে ডাকে। সেজন্য এই গ্রামটি সারা বিশ্বে ‘হুইসলিং ভিলেজ’নামে পরিচিত। বলছি- ভারতের মেঘালয়ের রাজধানী শিলং থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে পূর্ব খাসি পাহাড় জেলায় অবস্থিত কংথং গ্রাম যা এখন সারা বিশ্বে ‘হুইসলিং ভিলেজ’নামে পরিচিতি পেয়েছে। এখানকার বাসিন্দারা সারাদিন মুখ দিয়ে শিস বাজিয়ে কিংবা ভিন্ন ভিন্ন সুরে একে অপরকে ডাকে, যোগাযোগ করে, কিংবা খবর আদান প্রদান করে।


কংথং গ্রামের লোকদের এই ভিন্ন ভিন্ন সুরকে বলা হয় জিঙ্গারওয়াই লাভবি, যার অর্থ- ‘মায়ের গান। এখানে বসবাসকারী গ্রামবাসীদের দুটি নাম রয়েছে, একটি সাধারণ নাম এবং অন্যটি গানের সুরের নাম। এ ছাড়া গানের নামের দুটি সংস্করণ রয়েছে, একটি দীর্ঘ গান এবং অন্যটি ছোট গান। ছোট গান সাধারণত বাড়িতে ব্যবহৃত হয়। এই গ্রামে প্রায় ৭০০ জন গ্রামবাসী থাকে। অর্থাৎ ৭০০ জনের জন্য ৭০০ রকম ভিন্ন ভিন্ন সুর শোনা যায় এখানে। কংথং গ্রামের বাসিন্দারা জানান, কাউকে সম্বোধন করার জন্য যে ‘সুর’ব্যবহার করা হয়- তা মূলত সন্তানের জন্মের পর পরই মায়েরা তৈরি করে থাকেন। তারা দুটি উপায়ে সুর ব্যবহার করে, দীর্ঘ সুর এবং ছোট সুর। বাড়িতে অবস্থানকালে তারা নিজেদের মধ্যে ছোট ছোট সুর ব্যবহার করেন।


এই গ্রামে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এভাবেই পরস্পরকে ডাকা হচ্ছে। তারা এও জানে না যে- কবে থেকে এমন রীতি শুরু হয়েছিল! তবে এই প্রথা সমস্ত গ্রামবাসীরই খুব পছন্দের। তারা জানান, এই সুর যেহেতু মায়ের তৈরি করা, তাই এতে তাদের আবেগ মিশে রয়েছে। তারা এই পদ্ধতিতেই একে অন্যের সঙ্গে কথা বলতে পেরে তারা ভীষণ খুশি।


আরও আজব অবস্থা দেখা যায় তুরস্কের উত্তরাঞ্চলে পাহাড়ঘেরা প্রত্যন্ত গ্রাম কুসকয়- তে। কৃষ্ণ সাগরের উপকূলবর্তী গ্রামটির বাসিন্দারা কথা বলেন পাখির শিস বাজিয়ে, সুরে সুরে। তারা কথা বলার জন্য কোন শব্দ ব্যবহার করেন না, একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পাখির মতো শিস বাজিয়ে। আর এই পাখির মতো শিস বাজিয়ে তৈরি করা এই ভাষাটির নাম 'কুস দিলি'। শিস দিয়ে তৈরি বলেই একে বলা হয় ‘পাখির ভাষা, আর এই গ্রামকে বলা হয় কুসকয় বা ‘পাখির গ্রাম।


এই পাখির ভাষার প্রচলন প্রায় ৫০০ বছর ধরে। গ্রামবাসীরা তাদের পূর্বসূরিদের থেকে এ ভাষা পেয়েছে বলে জানা যায়। গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা এ ভাষায় কথা বললেও, তাদের প্রধান ভাষা তুর্কি। তবে সেখানে পাহাড়ি এলাকা এবং বাসিন্দাদের বাড়িগুলোর দূরত্ব বেশি হওয়ায় তারা যোগাযোগের ক্ষেত্রে শিস ব্যবহার করেন বেশি।


ইউনেস্কোর তথ্যমতে, তুরস্কের এই গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পাখির ভাষা অর্থাৎ শিস বাজিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গেছে, বিশ্বে ৮০টিরও বেশি সংস্কৃতির মানুষ শিস বাজিয়ে কথা বলে থাকে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App