×

ভিডিও

হঠাৎ কেন বেপোয়ারা কুকি-চিন?

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম

বছরখানেক চুপ থাকার পর পাহাড়ে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। বান্দরবানে তিনটি ব্যাংকে ডাকাতির পর থানচি থানা ও আলীকদমে যৌথবাহিনীর চেকপোস্টে আক্রমণের পর আবারও আলোচনায় নিষিদ্ধ এ গোষ্ঠীটি। তবে এই ঘটনাগুলোকে স্বাভাবিক বলে মনে করছেন না নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা। তাদের ধারণা, এতে তৃতীয় পক্ষের ইন্ধন থাকতে পারে। 

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা আরও ধারণা করছেন, গোষ্ঠীটির ভেতরে নেতৃত্বের দ্বন্দ্বও তৈরি হয়েছে। পাহাড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথেষ্ট উদ্যোগ ছিল না বলেও দাবি তাদের। এজন্য সরকারকে আরও কৌশলী হওয়ার পরামর্শ বিশ্লেষকদের।

জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের প্রশিক্ষণ ঘিরে দেশজুড়ে আলোচনায় আসে কেএনএফ। সে ঘটনার পর ২০২২ সালের শেষদিক থেকে অনেকটা নীরব হয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এমনকি শান্তি আলোচনায় দাবি-দাওয়া নিয়েও আলোচনায় বসে তারা। 

এ বিষয়ে চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরিতে আগামী ১৬ এপ্রিল আবারও আলোচনার কথা ছিল। এরমাঝেই ব্যাংক ডাকাতিতে সশস্ত্র অবস্থান জানান দেয় কেএনএফ। গত ৪ এপ্রিল মঙ্গলবার রাতে তারাবি নামাজের সময় বান্দরবানের রুমা শাখা সোনালী ব্যাংক ও আশেপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে শতাধিক সশস্ত্র দুর্বৃত্ত। 

গত ৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে অপহৃত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে রুমা বাজার থেকে উদ্ধার করে র‍্যাব। এর পরপরই থানচি থানা থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনেন স্থানীয়রা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই গোলাগুলি চলে।

এর রেশ কাটতে না কাটতেই আলীকদমের ২৬ মাইল ডিম পাহাড় এলাকায় যৌথবাহিনীর চেক পোস্টে হামলা হয়। সবগুলো ঘটনার সঙ্গেই কেএনএফ জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

আলোচনা চলাকালে এমন হামলায় গোষ্ঠীটির নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব এবং তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনের বিষয়টি সামনে চলে আসছে। 

বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) হিসেবে যাত্রা শুরু করে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। কিন্তু এনজিও থেকে সশস্ত্র গোষ্ঠীতে পরিণত হয়ে রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের ৬টি উপজেলায় অস্থিতিশীল এক পরিস্থিতি তৈরি করেছে এই গোষ্ঠীটি। পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান-কেন্দ্রিক বম, পাঙ্খোয়া, লুসাই, খুমী, ম্রো, খিয়াং–এই ছয়টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর উন্নয়নে কুকি চিন ন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (কেএনডিএর) যাত্রা শুরু হয় ২০০৮ সালে। পরে ২০১৬ সালে কেএনএফ নামে এই গোষ্ঠীটি সশস্ত্র হয়ে ওঠে।

এই গোষ্ঠীর নেতৃত্বে শুরু থেকেই আলোচনায় ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং এক সময়ের জনসংহতি সমিতির ছাত্র সংগঠন পিসিপির কেন্দ্রীয় নেতা নাথান বম। মূলত তার নেতৃত্বে বান্দরবানের দুর্গম এলাকায় পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সীমান্ত ও সেখানকার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে কাজে লাগিয়ে অস্ত্র সংগ্রহ এবং প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে কেএনএ। এরই মধ্যে পাহাড়ের অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় নাথান বমের। ২০১৮ সালে তিনি বান্দরবান থেকে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীও হন।

২০২১ সালে নাথাম বমের নেতৃত্বাধীন এই গোষ্ঠীর পাহাড়ে টাকার বিনিময়ে জঙ্গিদের সহায়তার বিষয়টি সামনে আসে।বর্তমানে এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রায় পাঁচ শতাধিক সদস্য সক্রিয় রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App