×

ভিডিও

সারা জীবনে একবারও ঘুমায় না! তাহলে এরা বাঁচে কীভাবে?

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫১ এএম

ঘুমাতে কে না ভালোবাসে? ছুটির দিনে কিংবা অবসর মিললেই ঘণ্টা দুয়েক বেশি ঘুমান অনেকে। কাজের চাপে বা ক্লান্তিতে প্রায়ই দু'চোখ জড়িয়ে আসে। কিন্তু জানলে অবাক হবেন যে, আমাদের পৃথিবীতে এমন একটি প্রাণী রয়েছে- যে কখনোই ঘুমায় না! কিন্তু কে সেই প্রাণী? কি তার পরিচয়? চলুন আর সময় নষ্ট না করে এখনই জেনে নেই এই বিস্ময়কর প্রাণীর সম্পর্কে।


কখনোই না ঘুমিয়ে জীবন কাটিয়ে দেয়া সেই বিস্ময়কর প্রাণীটি হচ্ছে আমাদের সবার অতি পরিচিত প্রাণী পিঁপড়া। এটিই বিশ্বের একমাত্র প্রাণী, যারা কখনোই ঘুমায় না। পিঁপড়ার সারাদিন কাটে ব্যস্ততা আর ছোটাছুটিতে। হাজারো কাজ আর পরিশ্রমে সময় কাটে তাদের। 


তবুও তাদের চোখে ঘুম নেই। তাই বলে বলে পিঁপড়ারা বিশ্রাম নেয় না এমন কিন্তু নয়। দিনে প্রায় ২৫০ বার বিশ্রাম নেয় তারা। প্রত্যেকবার বিশ্রাম নেয়ার সময় হলো মাত্র ১ মিনিট। আর এতেই দেহে শক্তি পেয়ে যায় তারা। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে- পিঁপড়া কেন ঘুমায় না? তাহলে চলুন সেটাও জানা যাক।


আসলে পিঁপড়ার চোখের কোনো পাতা নেই। তাই তারা চোখ বন্ধ করতে পারে না। তবে পাতা না থাকায় তাদের দেখতে কোনো সমস্যা হয় না। অধিকাংশ পিঁপড়ার দুটি চোখ থাকে, প্রতি চোখে কয়েকটি লেন্স থাকে যার সাহায্যে এরা খুব ভালো দেখতে পায়। মানুষ ঘুমের জন্য একসঙ্গে ব্যয় করে ৬/৭ ঘণ্টা সময়। কিন্তু পিঁপড়া যখন ১ মিনিটের জন্য গভীরভাবে বিশ্রাম নেয়, সেই সময়ই তার ঘুমের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। 


পুরো দিনে ১ মিনিট করে মোট ২৫০ বার গভীর বিশ্রাম নেয়ার অর্থ হলো- প্রায় ৪ ঘণ্টা বিশ্রাম করা। আর এই ৪ ঘণ্টার বিশ্রামে পিঁপড়া তার ঘুম পুষিয়ে নেয়। বিশ্রামের সময় পিঁপড়ার ম্যান্ডিবল ও অ্যান্টেনার সঞ্চালন কমে যায়। তাই এই দশাকে গভীর বিশ্রাম দশা বলে।


আরও আজব ব্যাপার হলো পিঁপড়ার কোন ফুসফুস এবং কান নেই। পিঁপড়ার শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়াটি মানুষের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন। পিঁপড়ার শরীরে অসংখ্য ছিদ্র থাকে। এই ছিদ্রগুলোর সংযোগ ঘটে নালি বা টিউবের মাধ্যমে। শরীরে অক্সিজেন প্রবেশ করার পর এই নালি বা টিউবের মাধ্যমেই পিঁপড়ার পুরো শরীরে অক্সিজেন ছড়িয়ে পড়ে আর এর মাধ্যমেই অনবরত পিঁপড়ার শ্বাস প্রশ্বাস চলতে থাকে। 


এছাড়া পিঁপড়ার হাঁটু এবং পায়ে রয়েছে এক বিশেষ ধরণের সেনসিং ভাইব্রেশন। আর আশেপাশের ভাইব্রেশন মানে কম্পনের সাহায্যে পিঁপড়া শব্দ শোনে। এর মাধ্যমে তারা আশপাশের পরিস্থিতি বুঝতে পারে। এর মাধ্যমেই বিপদ আগে থেকেই আঁচ করতে পারে পিঁপড়া। বিপদ টের পেলে তারা এক বিশেষ ধরণের কেমিক্যাল সিগন্যাল আদান প্রদান করে নিজেদের মধ্যে। 


খাবারের সন্ধান পেলে পিঁপড়ারা এক বিশেষ কেমিক্যাল ফেরোমোন নির্গত করে সঙ্গীদের সংকেত দেয়।  এই কেমিক্যাল-এর সাহায্যে তারা নিজেদের মধ্যে সংবাদ আদান প্রদান, বিপদ দেখলে সাবধান করে দেয়া এবং একে অপরকে খাবারের সন্ধান দিয়ে থাকে। 


পোকামাকড়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় মস্তিষ্কের অধিকারী হলো পিঁপড়া। তাদের পাকস্থলীও ২টি। একটি খাবার খাওয়ার জন্য, আর অন্যটি খাবার জমানোর জন্য।  পিঁপড়ার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো তাদের শক্তি। তারা নিজেদের ওজনের চাইতেও ১০০ গুণ ভারী ওজন বহন করতে পারে। বিশ্বে মোট পিপড়ার সংখ্যা এক ট্রিলিয়নের বেশি। জানলে আরো অবাক হবেন- বিশ্বের সব মানুষের ওজন এবং সব পিঁপড়ার ওজন একত্র করলে সমান সমান হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App