×

ভিডিও

দাউদকান্দিতে যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা, গ্রেপ্তার ৩

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৩, ০৩:৫৯ পিএম

https://www.youtube.com/watch?v=7vVbZzbeGEQ

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে আলোচিত তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেন হত্যা মামলার ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। রবিবার (৭ মে) বেলা ১১ টায় সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- কুমিল্লার তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের খুরশিদ মিয়ার ছেলে মো. ইসমাইল (৩৬), একই উপজেলার মনাইরকান্দি গ্রামের মো. আক্তার হোসেন শিকদারের ছেলে এবং তিতাস উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহীনুল ইসলাম সোহেল শিকদার (৪০), ও দাউদকান্দি উপজেলার গোপচর গ্রামের মৃত. বজলুর রহমানের ছেলে শাহ আলম ওরফে পা কাটা আলম (৩৬)।

এর আগে গত ৩০ এপ্রিল রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরীপুর পশ্চিম বাজার সংলগ্ন মসজিদের সামনে তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেন (৪৫) খুন হন। ওই দিন রাত আটটার দিকে তিন বোরকা পরিহিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী গৌরীপুর পশ্চিম বাজার সংলগ্ন মসজিদের পাশে একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় জামাল হোসেনের উপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। অতঃপর জামাল গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। আহত জামালকে ঘটনাস্থলের উপস্থিত লোকজন গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ২ মে নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ ৭/৮ জন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দাউদকান্দি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আসামিরা দৌঁড়ে পালানোর সময় একজনের বোরকার মুখের আবরণ খুলে যায় ও একজনের সাথে আরেকজনের ধাক্কা লেগে একজন আসামির হাত থেকে তার সাথে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রটি মাঠিতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে অস্ত্র কুড়িয়ে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

র‌্যাব জানায়, আমরা ঘটনাস্থলের আশেপাশের আরো কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখতে পাই ঘটনাস্থলে আসার যে রাস্তা আসামিরা ব্যবহার করেছে সেই একই রাস্তায় ঘটনাস্থল ত্যাগ না করে সামান্য পরিবর্তিত রাস্তায় তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে এই ফুটেজটি বিশ্লেষণ করে আমরা আসামিদের হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুইটি বোরকা ও দুইটি হিজাব উদ্ধার করতে সক্ষম হই এবং বোরকা উদ্ধারের নিকটবর্তী একটি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আমরা দেখতে পাই তিনজন ব্যক্তি যাদের মুখমন্ডল দেখা না গেলেও অবয়ব দেখে বোঝা যায় তারা দ্রুতগতিতে হেঁটে চলে যাচ্ছে।

ভিডিও ফুটেজ, গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারী বোরকা পরিহিত ব্যক্তিদেরকে আমরা মোটামুটি নিশ্চিতভাবে সনাক্ত করতে পেরেছি। তবে তদন্ত ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি মাথায় রেখে এই মূহূর্তে তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না।

র‌্যাব আরো জানায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ৬ মে দিনে ও রাতে অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রাম জেলার আগ্রাবাদ এলাকা, ঢাকা জেলার রায়েরবাগ এলাকা ও কালশী, মিরপুর এলাকা হতে উক্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারনামীয় ৩ নং আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জামালের হত্যার বিষয়ে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। মূলত এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো. ইসমাইলের বিরুদ্ধে ২ টি হত্যা মামলাসহ মোট ৩টি মামলা, শাহীনুল ইসলাম সোহেল শিকদারের বিরুদ্ধে ৩টি হত্যা মামলাসহ মোট ৯টি মামলা ও মো. শাহ আলমের বিরুদ্ধে ১টি হত্যা মামলাসহ মোট ১০টি মামলা রয়েছে।

উল্লেখ্য, এ মামলার এজাহারভুক্ত ৯ জন আসামির মধ্যে ৩ গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এজাহারনামীয় ১ নং আসামি সুজন ও ২ নং আসামি আরিফ নেপালে, ৫ নং আসামী বাদল দুবাইতে, ৬ নং আসামী শাকিল ভারতে, ৮ নং আসামী অলি হাসান সৌদি আরবে পালিয়েছে ও ৯ নং আসামী কালা মনির পলাতক অবস্থায় আত্নগোপনে রয়েছে। বিদেশে অবস্থানরত আসামীদের দেশে ফেরাতে এবং হত্যার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে র‌্যাবের প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের দাউদকান্দি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App