×

ভিডিও

৩২ কোটি টাকার লিচু বিকিকিনির সম্ভাবনা মেহেরপুরে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:৫২ পিএম

https://www.youtube.com/watch?v=fM8PSgB-7LY

ফল ও শাকসবজিতে বরাবরই মেহেরপুর জেলার সুনাম রয়েছে। এ জেলার ফল একদিকে যেমন দেখতে ভালো, অন্যদিকে খেতেও বেশ সুস্বাদু। চলতি মৌসুমে ব্যাপক মুকুল ধরেছিল লিচু গাছগুলোতে। গুটিও ধরেছে প্রচুর। তবে বৃষ্টি না থাকায় কিছু গুটি ঝরে যাচ্ছে। তারপরও প্রায় ৪০০ টন লিচু উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে মেহেরপুরে, যার বাজার মূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা। যা গত কয়েক বছরের রেকর্ড।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, স্থানীয় মোজাফফর জাতসহ চায়না-৩, বোম্বাই, আটি ইত্যাদি জাতের লিচু মিলে জেলায় ৩০০ হেক্টর জমিতে লিচু গাছ আছে। প্রাকৃতিক কোনো ধরনের দুর্যোগ না হলে ৪০০ টন লিচু উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য ৩০ থেকে ৩২ কোটি টাকা।

জানা যায়, ভৌগোলিক ও আবহাওয়াজনিত কারণে মেহেরপুরের লিচু অন্য জেলার আগেই বাজারজাত করা যায়। দাম ভালো পাওয়ার কারণে ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে লিচু চাষ। মেহেরপুরের লিচুর কদর হিমসাগর আমের মতোই। লিচু ক্ষণকালীন ফল। তবে আগাম উৎপাদন ও অধিক দামের কারণে লিচু চাষে কৃষকরা অধিক উৎসাহী হয়ে পড়েছে।

এই জেলায় উৎপাদিত লিচু দেশি ও আটি মোজাফফর জাতের (গুটি লিচুও বলা হয়ে থাকে) চাষ আছে। তবে হাইব্রিড লিচুর মধ্যে আতা বোম্বাই সর্বশ্রেষ্ঠ। কারণ মাংসল, রসালো, সুমিষ্ট ও ছোট বিচির ও টকটকে লাল এই লিচু বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ লিচুর অন্যতম।

প্রথমে ব্যক্তি উদ্যোগে কেউ কেউ বাড়ির আঙ্গিনায় শখের বসে চাষ করে। এই লিচুর চাষ বর্তমানে সম্প্রসারিত হয়েছে। উদ্যান উন্নয়ন বিভাগ থেকে টিএস-৪ ও চায়না ১৪ প্রজাতির লিচু এখন ব্যাপকভাবে বাগান তৈরি হয়েছে। এগুলোও উন্নত জাত এবং বোম্বাই লিচু হিসেবে সর্বত্র পরিচিত। আর মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে উঠবে মোজাফফর জাতের লিচু। তার দিন ১৫ পরেই বোম্বাই লিচু পাকা ধরবে। ও বাজারে পাওয়া যাবে।

সরজমিন মেহেরপুরের বিভিন্ন লিচু বাগান ঘুরে দেখা গেছে, লিচুর ভারে ডাল নুইয়ে পড়েছে। জেলা শহরের নতুনপাড়ার লিচু চাষি হেকমত আলী ভোরের কাগজকে জানান, তার ৫ বিঘা জমিতে লিচুর বাগান। লিচুগাছে ফুল আসার আগেই গত জানুয়ারি মাসে ৫ লাখ টাকায় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন বাগান।

লিচু বাগান ক্রেতা মাবুদ আলী জানান, তিনি তিনটি লিচু বাগান কিনেছেন প্রায় ৫ লাখ টাকায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে অন্তত ৮ লাখ টাকার কেনাবেচা হবে। তিনি জানান, এই একটি মাত্র ফল এক মাস সময় যত্ন করতে হয়। লিচুর বড় শত্রু বাঁদুড় আর চামচিকা। লিচুতে রং ধরলেই এক রাতেই চামচিকা লিচু কেটে নষ্ট করে দেবে। এ জন্য রাত জেগে বাদুড়, চামচিকা প্রতিরোধ করতে হয়। অতিরিক্ত তাপদাহও লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে যায়। ঝাউবাড়িয়া গ্রামের লিচু চাষি আব্দুল মান্নান জানান, তার তিন বিঘা জমিতে লিচুর বাগান। চলতি বছরসহ পরবর্তী দুই বছরের জন্য আগাম ফল বিক্রি করে দিয়েছেন সাড়ে পাঁচ লাখ টাকায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার ভোরের কাগজকে বলেন, মেহেরপুরে ৮০ ভাগ বাগানে আটি লিচু চাষ হয়। এই লিচুর বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে- আটি মোজাফফর জাতের লিচু আগাম পাকে। সংখ্যায় বেশি ধরে। পোকার আক্রমণ কম হয়। ফলের ৭০ ভাগই রসালো। জেলায় ৩০০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ আছে। ৪০০ টন লিচু উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য ৩০-৩২ কোটি টাকা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App