×

ভিডিও

শান্তিগঞ্জে ধান কাটা শেষ পর্যায়ে: ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:২৮ পিএম

https://www.youtube.com/watch?v=7qlZDfQpE_A

বৈশাখের মাঝামাঝি সময় থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার আগাম সতর্কতা দিয়েছিলো আবহাওয়া অফিস। এই সংবাদে উদ্বিগ্ন শান্তিগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা। তাই, হাওরে থাকা কষ্টে ফলানো সোনার ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন উপজেলার ছোট বড় ১৮টি হাওরের কয়েক হাজার কৃষক। অন্যান্য সব কাজ ফেলে ‘মাথা বেঁধে’ মাঠে কাজ করছেন তারা। রোজা, তারপর ঈদ। এমন সময়ও ধান তুলতে ব্যস্ত ছিলেন কৃষক-কৃষাণীরা। দ্রুত ধান কাটা শেষ করতে প্রতিটি হাওরে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনের ব্যবহার করছেন কৃষকরা। এতে যেমন দেখা দেয়নি শ্রমিক সংকট, তেমনি দ্রুত শেষ হচ্ছে ধান কাটার কাজ। প্রতিটি হাওরে খলা (ধান শুকানোর জায়গা) তৈরি করে ধান শুকাচ্ছেন কৃষকরা। গো-খাদ্য হিসেবে সংগ্রহ করছেন খড়।

কৃষকরা জানান, চলতি মাসের শেষের দিক থেকে সুনামগঞ্জ-সিলেটে ভারী বৃষ্টিপাতসহ কাল বৈশাখী হওয়া আশঙ্কা করেছে আবহাওয়া অফিস। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে জানানো হয়, হাওরের ধান যেনো দ্রুত কাটা হয়। এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে বিভিন্ন জায়গায় মাইকিংও করা হয়। এজন্য কৃষক মনে একটি শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই, যত দ্রুত সম্ভব কৃষকরা ধান কেটে শেষ করার চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যে উপজেলার প্রায় ৮৮ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস।

আজ উপজেলার ডাবর সংলগ্ন বইষগাঁও হাওর, দেখার হাওরের আস্তমা অংশ, বীরগাঁওর পাখিমারা হাওরে গিয়ে দেখা যায়, ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কৃষকরা। হাওরের অধিকাংশ ধান কেটেছেন তারা। ইতিমধ্যে কাটা ধান মাড়াই করে রোদে শুকাতেও শুরু করেছেন অনেক কৃষক।

ডাবরের কৃষক শরীফ মিয়া জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি দু’চারদিনের মধ্যে টানা বৃষ্টিপাত শুরু হবে। যদি বন্যা হয়ে যায় অথবা আর রোদ না উঠে তাহলে আমার সব ধান নষ্ট হবে। তাই রোদ থাকতে থাকতে ধান কেটে শুকিয়ে দ্রুত ঘরে তোলার চেষ্টা করছি। তার সাথে একমত পোষণ করেন পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের শত্রুমর্দন বাঘেরকোনা গ্রামের কৃষক তারিফ মিয়া ও পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের টাইলা গ্রামের কৃষক সাজিদুর রহমান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার সোহায়েল আহমদ জানান, ইতোমধ্যে আমাদের উপজেলার ৮৮ শতাংশ ধান কাটা শেষ। এ বছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে আশা করছি। ২৩ এপ্রিল থেকে লাগাতার বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা ছিলো, সেজন্য উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে কৃষকদের সচেতনায় একটি মাইকিং করা হয়েছিলো।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে শান্তিগঞ্জের উপজেলার দেখার হাওর, সাংহাই হাওর, জামখলা হাওর, খাই হাওর, কাউয়াজুরী হাওর, পিপড়াকান্দি হাওর, নাগডরাসহ ছোট বড় ১৮টি হাওরে বোরো ফসল চাষ করেছেন উপজেলার কয়েক হাজার প্রান্তিক কৃষক। এতে ২২ হাজার ১৯৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। যারমধ্যে হাওরে হাইব্রিড ধান ৭ হাজার ৫ শত হেক্টর, উফশী ১০ হাজার ৭৬৪ হেক্টর, ব্রি ২৮ ১১শ হেক্টর ও স্থানীয় ১৪৫ হেক্টর এবং হাওরের বাইরে হাইব্রিড ১ হাজার ১ শত ও উফশী ৩ হাজার ১ শত হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি। এ বছর ধান উৎপন্ন হবে ১ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৮ মেট্রিক টন এবং চাল ৯৪ হাজার ৫৩২ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ৩৭৮ কোটি ১২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার বেশি বলে ধারণা করছে কৃষি বিভাগ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App