র্যাঙ্কিংয়ে সুসংবাদ পেলেন লিটন-মিরাজ
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
লিটন-মিরাজ
পাকিস্তানের মাটিতে স্বাগতিকদের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই করে সিরিজ জিতে নিয়েছে টাইগাররা। ব্যাটে বলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে সিরিজসেরার পুরস্কার জিতে নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে খাদের কিনারা থেকে তুলে এনে ম্যাচসেরা হয়েছেন লিটন দাস। তারই পুরস্কার হিসেবে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে বড় লাফ দিয়েছেন দুই টাইগার। অলরাউন্ডারদের র্যাঙ্কিংয়ে ক্যারিয়ার সেরা ৭ নম্বরে উঠে এসেছেন মিরাজ। অন্যদিকে ১২ ধাপ এগিয়ে ব্যাটারদের তালিকায় প্রথমবারের মতো ১৫ নম্বরে উঠে এসেছেন লিটন। বল হাতে দুর্দান্ত হাসান, তাসকিন ও নাহিদও বড় লাফ দিয়েছে। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের পাশাপাশি টেস্টে রেটিং বেড়েছে টাইগারদের। ১৩ পয়েন্ট বাড়লেও ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে নবম স্থানে রয়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।
রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৩৮ রানের ইনিংস খেলা লিটন উঠে এসেছেন ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ অবস্থানে। ১২ ধাপ এগিয়ে ১৫ নম্বরে উঠেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। ৬৮৮ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে তিনি এখন টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যাটসম্যান। টেস্ট র্যাঙ্কিং ইতিহাসে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে ওপরে উঠেছিলেন তামিম ইকবাল। ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পর ১৪ নম্বরে উঠেন এই বাঁ-হাতি ওপেনার। লিটনের পরেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ১৭ নম্বর স্থানে আছেন মুশফিকুর রহিম। প্রথম টেস্টে ১৯১ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হলেও তার অবস্থানে পরিবর্তন আসেনি। এছাড়া শেষ টেস্টে ৭৮ রানের ইনিংস খেলা মিরাজ ১০ ধাপ এগিয়ে ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৭৫ নম্বরে উঠেছেন। মিরাজের রেটিং পয়েন্ট ৪২৫, যা তার ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ। অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়েও ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠেছেন মিরাজ, ৩ ধাপ এগিয়ে সাতে উঠেছেন স্পিনিং অলরাউন্ডার।
বল হাতে দ্বিতীয় টেস্টে পারফর্ম করার পুরস্কার পেয়েছেন দুই পেসার হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানাও। রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানকে ধসিয়ে দেন বাংলাদেশের তিন পেসার। ২৩ ধাপ এগিয়ে প্রথমবার বোলারদের র্যাঙ্কিংয়ে ৯৭ নম্বরে উঠে এসেছেন নাহিদ রানা। ১১ ধাপ এগিয়ে তাসকিন রয়েছেন ৮৫ নম্বরে। তাসকিনের রেটিং পয়েন্ট ২৬৪, এটিই তার ক্যারিয়ার সেরা। ক্যারিয়ার সেরা ৩৬৭ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে হাসানের বর্তমান অবস্থান ৫৭ নম্বরে, এগিয়েছেন ১৬ ধাপ। বল হাতে একধাপ পিছিয়ে ২৯ নম্বরে সাকিবের অবস্থান। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে শীর্ষে আছেন তাইজুল ইসলাম। এই বাঁ-হাতি স্পিনারের অবস্থান ১৯ নম্বরে।
পাকিস্তান সফরে খেলার সুযোগ না পাওয়া এই স্পিনারের র্যাঙ্কিংয়ে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এরপরই মিরাজের অবস্থান, একধাপ এগিয়ে ২২ নম্বরে আছেন এই অলরাউন্ডার। পাকিস্তান সফরে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হওয়া সাকিব আল হাসান পিছিয়েছেন দুই ধাপ, আছেন ৪৫ নম্বরে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লর্ডসে জোড়া সেঞ্চুরি করে জো রুট তার শীর্ষস্থান আরো পাকাপোক্ত করেছেন। বোলারদের র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থানে আছেন যথারীতি রবিচন্দ্রন অশ্বিন। টেস্টে শীর্ষ অলরাউন্ডারও রবীন্দ্র জাদেজা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ে আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে তালিকায় রেটিং বেড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। গতকাল শেষ হওয়া দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে পাকিস্তানকে ২-০ ব্যবধানে হারায় টাইগাররা। ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে নিজেদের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন না হলেও ১৩ রেটিং বেড়েছে বাংলাদেশের। ৬৬ রেটিং নিয়ে নবম স্থানে আছে টাইগাররা। সিরিজ শুরুর আগে নবম স্থানে থাকা বাংলাদেশের রেটিং ছিল ৫৩। বাংলাদেশের কাছে সিরিজ হেরে লজ্জার ইতিহাস গড়ল পাকিস্তান। র্যাঙ্কিংয়ে দুই ধাপ পিছিয়ে অষ্টম স্থানে নেমে গিয়েছে তারা। সেসঙ্গে তাদের রেটিং গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৭৬-এ। ক্রিকেটের প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি জানিয়েছে, ১৯৬৫ সালের পর এটিই পাকিস্তানের সর্বনিম্ন রেটিং। বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের রেটিং পার্থক্য মাত্র ১০।
উল্লেখ্য ২০২২ সালের মার্চ থেকে ঘরের মাঠে টেস্টে জয়হীন রয়েছে পাকিস্তান। এ সময় ১০টি টেস্টের মধ্যে ৬টিতে হার ও ৪টিতে ড্র করেছে পাকরা। র্যাঙ্কিংয়ে পাকিস্তানের অবনতিতে একধাপ করে উন্নতি হয়েছে শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ৮৩ রেটিং নিয়ে শ্রীলঙ্কা ষষ্ঠ এবং ৭৭ রেটিংয়ে সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে ক্যারিবীয়রা। ১২৪ রেটিং নিয়ে তালিকার শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।
এদিকে আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সূচি অনুযায়ী এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের সামনে এখন পর্যন্ত আরো চার টেস্ট বাকি। সেপ্টেম্বরেই ভারতের বিপক্ষে আছে দুই টেস্ট। আর নভেম্বরে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে থাকছে বাকি দুই টেস্ট। সবমিলিয়ে ১০ টেস্টে শেষ হবে বাংলাদেশের ২০২৩-২৫ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রের খেলা। বাকি টেস্টের চারটিতেই কোনো পয়েন্ট না হারিয়ে জিতে নিলে টাইগারদের সামনে কাগজে কলমে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার ক্ষীণ সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে।