জয়ের লক্ষ্যে প্রত্যয়ী জামালরা
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কাগজ প্রতিবেদক : ভুটানের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে ইতোমধ্যেই দেশটিতে অবস্থান করছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। মাঠে নামার আগে অনুশীলনে নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছেন হাভিয়ার কাবরেরার শিষ্যরা। অনুশীলনে ভুটানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচেই জেতার প্রত্যয় জানিয়েছেন তরুণ ফুটবলার সাদউদ্দিন। তিনি জানান, ভুটানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচই জিততে হবে। যদিও অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার তপু বর্মন মনে করলেন ২০১৬ সালের স্মৃতি। এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ভুটানের মাঠে সেবার ৩-১ গোলে হেরে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে ‘ছিটকে’ গিয়েছিল বাংলাদেশ। আগামী ৫ ও ৮ আগস্ট স্বাগতিকদের বিপক্ষে মাঠে নামবে জামাল ভূঁইয়ারা।
গতকাল প্রথম টার্ফে অনুশীলন করেছেন মিরাজুল-মিতুল-জামালরা। আগের দিন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পাহাড়ে হাইকিং করেছে তারা। প্রস্তুতি নিয়ে যেমন তুষ্টি আছে, ভুটানের বিপক্ষে গত চার ম্যাচের পরিসংখ্যানেও আছে অনুপ্রেরণার রসদ। সবশেষ ব্যাঙ্গালুরুতে হওয়া সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে তাদের ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। এর আগের তিন ম্যাচেও ভুটানের বিপক্ষে জয়ের গল্প লিখেছিল দল। সাফল্যের এই ধারা সাদউদ্দিন ধরে রাখতে চান যে কোনো মূল্যে।
তিনি জানান, ‘আমাদের জিততে হবে, এটাই লক্ষ্য। ভুটান ভালো দল, আগের চেয়ে উন্নতি করেছে। তবে আমাদের লক্ষ্য একটা, জিততে হবে এবং সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা মাঠে নামব। আবহাওয়া অনেক বড় ব্যাপার। বাংলাদেশে এখন খুব গরম, এখানে ঠাণ্ডা পড়ছে। তবে আমরা পেশাদার খেলোয়াড়, যত দ্রুত সম্ভব মানিয়ে নিয়ে মাঠে ভালো পারফর্ম করার চেষ্টা করব। আগের দিন পাহাড়ে ট্রেনিং করেছি, আজ (গতকাল) মাঠে (টার্ফে) প্রস্তুতি, সবাই সুস্থ আছে, নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া নিয়ে কাজ করব। গত দুই মাস আমরা ফুটবলের বাইরে ছিলাম, এ মুহূর্তে তাই নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া অনেক প্রয়োজন, এটার জন্য অনুশীলন করছি।’
এদিকে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার তপু বর্মনের মনে উঁকি দিচ্ছে ২০১৬ সালের হতাশার স্মৃতি। এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ভুটানের মাঠে সেবার ৩-১ গোলে হেরে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে ‘ছিটকে’ গিয়েছিল বাংলাদেশ। ওই হারের কারণে প্রায় দুই বছর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ মেলেনি বাংলাদেশ দলের।
আট বছর আগে বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে দেয়া ম্যাচে ভুটানের জয়ের নায়ক ছিলেন চেনচো গাইয়েলতসেন। ধারালো এই ফরোয়ার্ড আছেন এবারের দলেও। তপু তাই সতর্ক।
তপু জানান, ‘ভুটানের বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচ আমরা খেলেছি সাফে, ব্যাঙ্গালুরুতে ওদেরকে তখন আমরা ৩-১ গোলে হারিয়েছিলাম। কিন্তু আমার একটা জিনিস মনে আছে, ওদের মাঠে শেষ ২০১৬ সালে একটা ম্যাচ খেলেছিলাম, যেটায় আমরা হেরেছিলাম, নিশ্চিতভাবেই ভুটান নিজেদের মাঠে শক্তিশালী দল। কিছুদিন আগেও ভুটান এখানে (নিজেদের মাঠে) হংকংকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল। এটা মাথায় রেখেই আমাদের মাঠে নামতে হবে এবং ওরা ওদের ঘরের মাঠে কতটা শক্তিশালী, সেটা আমাদের মাথায় আছেও। ওদের দলেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় আছে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চেনচো গাইয়েলতসেন, এটা খেলোয়াড়দের মতো কোচিং স্টাফরাও জানে, এটা নিয়ে আমরা বিশদভাবে কাজ করব, তাহলে আমাদের ভালো হবে।’
ভুটানে মূলত দুটি দিকের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের জন্য। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা ও টার্ফে খেলা। সহাকারী কোচ হাসান আল মামুন জানিয়েছেন, কন্ডিশন ও মাঠের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার পাশাপাশি প্রতিপক্ষের শক্তি, দুর্বলতা নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তারা। অতীতের তেতো স্মৃতি মনে রাখলেও এবার তপুর চাওয়া সব বাধা মাড়িয়ে অভিষ্ঠ চূড়ায় ওঠা। তিনি বলেন, ‘ভুটান স্বাভাবিকভাবে উঁচু দেশ। এখানকার উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আমরা হাইকিং করেছি। আমার মনে হয়, এটা গুরুত্বপূর্ণ একটা সেশন ছিল এবং উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার জন্য এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এখানে আমরা একটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছি, সেটা হচ্ছে যে কোনোভাবে এই ম্যাচগুলো আমাদের জিততে হবে। সব খেলোয়াড়কে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আমরা সবাই ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে প্রস্তুত হচ্ছি।’