×

খেলা

পিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালে ডর্টমুন্ড

Icon

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালে ডর্টমুন্ড
কাগজ ডেস্ক : উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে গতকাল রাতে সেমিফাইনালের ফিরতি লেগের ম্যাচে ঘরের মাঠ পার্ক দি প্রিন্সেসে জার্মান ক্লাব ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরেছে ফরাসি জায়ান্ট পিএসজি। ডর্টমুন্ডের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন জার্মান তরকা ডিফেন্ডার হুমেলস। ৫০ মিনিটে সতীর্থের কর্নারে হেডে গোল করে ডর্টমুন্ডকে ফাইনালের টিকেট উপহার দেন হুমেলস। এতে দুই লেগ মিলিয়ে ২-০ ব্যবধানে ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের আশা গুঁড়িয়ে এক দশক বছর পর উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠল জার্মান ক্লাবটি। ডর্টমুন্ড শেষবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল খেলেছিল ২০১২-১৩ মৌসুমে। ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে তারা হেরে গিয়েছিল চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী বায়ার্ন মিউনিখের কাছে। আগামী ২ জুন অনুষ্ঠেয় এবারের আসরের ফাইনালে সেই বায়ার্ন অথবা প্রতিযোগিতার রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে দলটি। ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসরে দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের সুযোগ এখন ডর্টমুন্ডের সামনে। একমাত্র শিরোপাটি তারা জিতেছিল ২৭ বছর আগে। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে মিউনিখে অনুষ্ঠিত ফাইনালে জুভেন্টাসের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। অনেকটা বীরোচিত উত্থান বলা চলে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের। গ্রুপ পর্বে শুরুটা হয়েছিল মৃত্যুকূপ থেকে। তার পর সব বাধা পার করে সেমিফাইনাল। অথচ তাদের কাছে প্রথম লেগে ১-০ গোলে পরাজিত পিএসজিকেই ফেবারিট হিসেবে ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় লেগে পাল্টে গেল পুরো চিত্র। ফরাসি জায়ান্টদের বিদায় করেই ১১ বছর পর ইউরোপ সেরার শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে ডর্টমুন্ড। ডর্টমুন্ডের জন্য গল্পটা রূপকথার হলেও পিএসজির জন্য আরো একবার চ্যাম্পিয়নস লিগের হতাশা বাড়ল। ২০১১ সালে কাতারি মালিকের কাছে ক্লাবের দায়িত্ব যাওয়ার পর শুধুমাত্র চ্যাম্পিয়নস লিগের সাফল্যের জন্যই সব অর্থ ব্যয় করেছে পিএসজি। একই সঙ্গে দলের তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পের জন্যও পিএসজির হয়ে এটাই শেষ সুযোগ ছিল। এবারের মৌসুমে পিএসজির সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার পর ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমবাপ্পে। সাত বছরের পিএসজি ক্যারিয়ারে ক্লাবকে সবচেয়ে বড় শিরোপা উপহার দিতে না পারা এমবাপ্পের নিজের জন্যও একটি বড় ব্যর্থতা। পার্ক দি প্রিন্সেসে ম্যাচের শুরুতে পানসে ছিল দুই দলই। তবে ম্যাচের প্রথম আক্রমণটা করে ডর্টমুন্ড। তৃতীয় মিনিটে প্রথম লেগের একমাত্র গোলদাতা নিকলাস ফুয়েলখুগের হেড অনায়াসে ঠেকান জানলুইজি দোন্নারুম্মা। পরের মিনিটে গনসালো রামোসের প্রচেষ্টা সহজেই ঠেকান ডর্টমুন্ড গোলরক্ষক গ্রেগর কোবেল। এরপর প্রথমার্ধে আর তেমন গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি দুই দলের কেউ। দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে এমবাপ্পের গোলের উদ্দেশ্যে নেয়া শট আটকে দেন রামোস। এর মিনিট তিনেক পরই গোল পেয়ে যায় ডর্টমুন্ড। সতীর্থের কর্নারে হেডে গোল করে ডর্টমুন্ডকে এগিয়ে নেন জার্মান ডিফেন্ডার হুমেলস। গোল খেয়ে পাল্টা আক্রমণ করতে থাকে পিএসজি। তবে ৬২তম মিনিটে দুর্ভাগ্যের ফেরে গোল পায়নি দলটি। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নুনো মেন্দেসের জোরাল শট পোস্টে লাগে। ৬৫তম মিনিটে উসমান দেম্বেলে ফাউলের শিকার হলে বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি-কিক পায় পিএসজি। মার্কো আসেন্সিওর শট প্রতিহত হয় রক্ষণ দেয়ালে। ম্যাচের ৭০ শতাংশ সময় বল পায়ে রাখা পিএসজি ঘুরে দাঁড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টাই করে। আক্রমণের ঝড় বইয়ে দিয়ে গোলমুখে কিলিয়ান এমবাপে-ভিতিনহা-গনসালো রামোসরা নেন মোট ৩১টি শট। কিন্তু গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর ঘটনাবহুল দ্বিতীয়ার্ধে তাদের চারটি শট আটকে যায় পোস্ট ও ক্রসবারে। ম্যাচ শেষে পিএসজির অধিনায়ক মারকুইনহোস বলেছেন, ‘আমরা যথেষ্ঠ ভালো খেলতে পারিনি। তারা গোলটি দিয়েছে কর্নার থেকে। বিপরীতে আমরা অনেক বেশি সুযোগ তৈরি করেছি, দেখতে গেলে তাদের থেকে বেশি। কিন্তু ম্যাচটি বের করে আনতে পারিনি। সবসময়ের মতোই ফাইনালে খেলতে চেয়েছিলাম, কাছাকাছিও পৌঁছে গিয়েছিলাম। আজ আমাদের জেতা উচিত ছিল, আরো বেশি প্রতিরোধ করা উচিত ছিল। কিন্তু তার কিছুই হয়নি।’ কোচ এনরিকে বলেন, ‘আমি মনে করি না যে এই ম্যাচে আমরা বাজে খেলেছি। ছয়বার আমাদের শট বারে লেগেছে। ফুটবলে মাঝে মাঝে এমন কিছু বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে যা খুবই অন্যায়। ৩১টি শট টার্গেটে করলেও এর থেকে একটি গোলও আদায় করতে পারিনি। এই লড়াইয়ে ফুটবল আমাদের সঙ্গে অন্যায় করেছে। আমাদের এটা মেনে নিতে হবে। ডর্টমুন্ডকে অভিনন্দন জানাচ্ছি ফাইনালে খেলার জন্য।’ তিনি আরো বলেন, ‘এই দল নিয়ে আমি দারুণ গর্বিত, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কোচ হিসেবে এই পরাজয়ের প্রথম দায়ভার আমার। কিন্তু তারপরও দলের মানসিকতায় আমি খুশি।’ ম্যাচ শেষে নিজের হতাশা প্রকাশ করেছেন এমবাপ্পে। জানিয়েছেন, দলের জন্য সর্বস্ব দিয়ে খেলেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত কিছুই করতে পারেননি- যা করেছেন তা যথেষ্ট ছিল না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App