সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের সংবাদ সম্মেলন
পিলখানা হত্যাকাণ্ড ভারত ও আ.লীগের চক্রান্ত
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কাগজ প্রতিবেদক : ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড। আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা এই ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন। সেনাবাহিনীর অনেক কর্মকর্তার ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। এই পরিকল্পনায় যুক্ত ছিল দেশের কিছু বিশ্বাসঘাতক এবং প্রতিবেশী দেশ ভারতের চক্রান্ত ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে সেনাবাহিনীর তদন্ত আদালতের প্রতিবেদনের বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মতিন।
সেনা তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মতিন বলেন, শেখ হাসিনা পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টায় রাজধানীর বনানীতে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের বাসায় বিডিআরের ডিএডি হাবিব, ডিএডি জলিল, ল্যান্সনায়েক রেজাউল, হাবিলদার মনির, সিপাহি সেলিম, কাজল, শাহাবউদ্দিন, একরাম, আইয়ুব, মঈন, রুবেল, মাসুদ, শাহাদত ও জাকির (বেসামরিক) বৈঠক করেন। এর আগে-পরেও বিডিআর সদস্যরা বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন। সুবেদার গোফরান মল্লিক নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। শুধু অপারেশন ডাল-ভাতের জন্য বা রেশন বাড়ানোর দাবিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই ঘটনার মাধ্যমে বাংলাদেশকে দুর্বল করে প্রতিবেশী ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর উদ্দেশ্য ছিল। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকও এ ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত।
তিনি জানান, ২০০৮ সালের ১৭-১৮ ডিসেম্বর ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের বাসাতেও হাবিলদার মনির, সিপাহি শাহাব, সিপাহি মনির বৈঠক করেন। নির্বাচনের আগের দিন সন্ধ্যায় বিডিআর দরবারসংলগ্ন মাঠে সিপাহি কাজল, সেলিম, মঈন, রেজা এবং বেসামরিক ব্যক্তি জাকিরসহ কয়েকজন বৈঠক করেন। তদন্তে নেমে সেনা তদন্ত কমিটি নানারকম বাধার মুখে পড়ে। সংশ্লিষ্ট অনেক সংস্থা ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের’ নির্দেশনার কথা বলে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাকে।
তিনি বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের রেশ ধরেই ৫ মে শাপলা চত্বরের গণহত্যা, ভোটারবিহীন নির্বাচন, শিক্ষাব্যবস্থা ও বিচারব্যবস্থা ধ্বংস, দুর্নীতির মহোৎসব, গুম-খুনের অবাধ রাজত্ব। এ ঘটনায় অনেকে চাকরি হারান, অনেকে পদোন্নতি বঞ্চিত হন। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যাযজ্ঞের বিচার না হলে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় না আনা হলে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পাওয়া নতুন স্বাধীনতা মুখ থুবড়ে পড়বে। শত্রæ সব জায়গায় বিরাজমান। একেকদিন একেক বেশে আসবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোরশেদুল হক, কর্নেল (অব.) আবদুল হক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আমিনুল ইসলাম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সৈয়দ কামরুজ্জামান প্রমুখ।