×

খবর

সালথার নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ

অধ্যক্ষকে হাতুড়িপেটা করে সই নেয়া হলো পদত্যাগপত্রে

Icon

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আরিফুল ইসলাম, সালথা (ফরিদপুর) থেকে : ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুন্দীতে অবস্থিত নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমানকে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় কয়েকজন হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে তার কাছ থেকে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কলেজে এই ঘটনা ঘটে। এদিকে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা একটি শ্রেণি কক্ষে অধ্যাক্ষকে আটক রেখে তার স্বাক্ষর নিচ্ছেন এবং টানাটানি করছেন। শোনা যায়, শিক্ষার্থীরা বলছেন, স্যার আপনি স্বাক্ষর করেন আর কলেজটা বাঁচান।

প্রত্যক্ষদর্শী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কাজী ফিরোজ আহমেদ বলেন, আমি রুমে বসে বই পড়ছিলাম, হট্টগোল শুনে এগিয়ে গিয়ে দেখি স্যারকে রুমের মধ্যে আটক রাখা হয়েছে। কয়েকজন শিক্ষার্থী ও বহিরাগত তাকে ঘিরে ধরেছে। আমাকে যেতে নিষেধ করলেও আমি ভেতরে প্রবেশ করি।

স্যারকে এবং স্যারের ছেলেকে ওরা অনেক নাজেহাল করেছে। এরপর জোর করে স্বাক্ষর নিয়েছে। প্রতিবাদ করলে আমার ওপর চরাও হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে আমি চুপ থাকি। আমরা এই জঘন্য ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানান, অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান কলেজে যোগ দেয়ার পর থেকে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের দোসর হিসেবে দুর্নীতি-অনিয়ম করে আসছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমর্থন না করে পুলিশ দিয়ে কলেজের ছাত্রদের হয়রানি করেছিলেন। স্বৈরাচারের পতনের পর থেকে আমরা এই দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করে আসছি, মানববন্ধনও করেছি। অবশেষে বৃহস্পতিবার (গতকাল) তিনি নিজ ইচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। এতে আমরা খুশি।

নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ ভুক্তভোগী ওবায়দুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার (গতকাল) সকালে আমি এবং আমার ছেলে কলেজে ঢুকার সময় স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা কাইয়ুম মোল্লা ও কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য কামরুল গাজীর সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য অছাত্র লালন, মনির এবং কয়েকজন ছাত্র জোর করে আমাদের গাড়ি থেকে নামিয়ে একটি বাগানের মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তারা আমাদের বাপ-বেটাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পরে কিছু অছাত্র আর কিছু ছাত্রদের দিয়ে জোর করে আমার কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়।

তিনি আরো বলেন, আন্দোলনরতরা বেশির ভাগ অছাত্র। মূলত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কামরুল গাজী ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কয়েক মাস আগে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার একটি ভুয়া বিল জমা দেন আমার কাছে। আমি ওই বিলে সই না করায় ক্ষিপ্ত হন তিনি। এরপর থেকে কামরুল গাজী ও কাইয়ুম মোল্লা আমার পিছু লাগে। শেষ পর্যন্ত আমাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই নিল। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই এবং হামলাকারীদের বিচার দাবি করছি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য কামরুল গাজী বলেন, আমি ফরিদপুর অফিসে আছি। আমি তো এসব বিষয় কিছুই জানি না। অধ্যক্ষ শুধু আমার নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। কাইয়ুম মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনিচুর রহমান বালী বলেন, অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমানের পদত্যাগ দাবিতে ১ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীরা একটি মানববন্ধন করে। খবর পেয়ে আমিসহ সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে যাই। তখন শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে তেমন কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। পরে ঘটনাটি আমরা মিমাংসা করে দেই। এ সময় শিক্ষার্থীরা আর কোনো আন্দোলন করবে না বলে লিখিত দেয়।

কিন্তু হঠাৎ সন্ত্রাসী কায়দায় অধ্যক্ষকে মারধর ও তার কাছ থেকে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নিয়েছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। বর্তমান সরকারও এর বিরোধী। তবে জানতে পেরেছি, স্থানীয় কামরুল গাজী ও কায়ুম মোল্লা নামে দুই ব্যক্তির ইন্ধনে শিক্ষার্থী ও কিছু দুষ্কৃতকারীরা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

৭০ হাজারের বেশি রুশ যোদ্ধা নিহত ইউক্রেনে

৭০ হাজারের বেশি রুশ যোদ্ধা নিহত ইউক্রেনে

এবার সালমান শাহ-শাবনূরের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন সামিরা

এবার সালমান শাহ-শাবনূরের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন সামিরা

যেভাবে হবে পুলিশ সংস্কার

যেভাবে হবে পুলিশ সংস্কার

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত
নির্বাহী সম্পাদক: এ কে সরকার

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App