কাগজ প্রতিবেদক : কোটা সংস্কার থেকে সরকার পতনের আন্দোলনে সহিংসতার সময় সারাদেশে ১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশের গুলিতে আহতদের মধ্যে চারশর বেশি ব্যক্তি তাদের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘর্ষে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলাসহ তাদের খোঁজ-খবর নেন তিনি।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলতি আগস্ট মাসের শুরুতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিলে সারাদেশে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলন সহিংস হয়ে উঠলে এ সময় পুলিশ ও সরকার দলীয় সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। আন্দোলন চলাকালে ৫ আগস্ট ঢাকামুখী লং মার্চের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপরও জ্বালাও-পোড়াও এর ঘটনার মধ্যে হতাহতের খবর আসে। তবে সরকার পতনের আগে-পরে মিলিয়ে কতজন নিহত বা আহত হয়েছেন তা নিয়ে এখনো সরকারি ভাষ্য আসেনি। এর মধ্যেই স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আন্দোলনের সময় নিহত হওয়ার এ তথ্য দিলেন।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, এ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে ১ হাজারের বেশি নিহত হয়েছেন ও চারশর বেশি ছাত্র-জনতা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। অনেকের এক চোখ অন্ধ হয়ে গেছে, অনেকে দুচোখেরই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। তিনি বলেন, দৃষ্টিহীনদের চিকিৎসা দিতে সেবা ফাউন্ডেশেন নামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। যাদের চোখে সমস্যা হয়েছে তাদের তালিকা ওই প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে।

তারা বলেছে যত শিগগিরই সম্ভব চিকিৎসার জন্য দেশে চিকিৎসক নিয়ে আসবে। ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু ইনস্টিটিউট, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল এবং দিনাজপুরে তাদের চিকিৎসা হবে। এছাড়া সংঘর্ষের সময় পায়ে আঘাত পেয়েছেন এমন ব্যক্তিদের চিকিৎসার বিষয়েও কথাবার্তা হচ্ছে, যোগ করেন নূরজাহান বেগম।

নূরজাহান বেগম বলেন, অনেকে পায়ে আঘাত পেয়েছেন, অনেকের পা কেটে ফেলতে হয়েছে। আমরা বিভিন্ন দাতা সংস্থার সঙ্গে কথা বলছি, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। যাতে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশ থেকে চিকিৎসকদের টিম নিয়ে আসা যায়। সেটা নিয়ে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা এখানে এলাম ও দেখলাম পুলিশের অনেক আহত সদস্য চিকিৎসাধীন আছেন। অনেকে পায়ে আহত হয়েছেন। অনেকে মাথায় আঘাত পেয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে এবং আমি যতটুকু তাদের কাছ থেকে শুনেছি তাদের ভালোমতো চিকিৎসা চলছে। এখানে আহত একজন ছাত্র সমন্বয়ক ভর্তি আছেন, তারও এখানে চিকিৎসা চলছে। এ সময় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দারসহ চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।