জাতিসংঘের গভীর সমুদ্রবিষয়ক চুক্তিতে অনুসমর্থন
হজের খরচ কমানোর প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের
প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কাগজ প্রতিবেদক : সমুদ্র রক্ষা এবং গভীর সাগরে সম্পদ আহরণ ও সুষ্ঠু ব্যবহার সংক্রান্ত জাতিসংঘের ‘বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটি অব এরিয়াস বিয়ন্ড ন্যাশনাল জুরিসডিকশন’ (বিবিএনজে) চুক্তিতে অনুসমর্থনের প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর এই চুক্তিতে সই করে বাংলাদেশ। চুক্তির মাধ্যমে সবাইকে গভীর সমুদ্রে ভাসমান সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
জাতিসংঘের এ চুক্তির শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে মেরিন প্রটেকটেড অঞ্চলে সম্পদ আহরণ করা যাবে না, উন্নয়নশীল দেশগুলো যাতে গভীর সমুদ্রে সম্পদ আহরণ করতে পারে, সেজন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে হবে, অতিরিক্ত মাত্রায় মাছ ধরা যাবে না, পরিবেশের ওপর প্রভাব পর্যালোচনা করতে হবে, সমুদ্রদূষণ রোধ করতে হবে এবং গবেষণার জন্য অর্থ ব্যয় করতে হবে। গভীর সমুদ্রের সংরক্ষণ এবং টেকসই ব্যবস্থাপনায় সম্পূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম করার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর সক্ষমতা বিনির্মাণ এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তাকে চুক্তিতে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘের নিয়ম অনুযায়ী, যে কোনো দেশের তটরেখা বা উপকূল থেকে ৩৫০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত যে সমুদ্র, সেটির ওপর ওই দেশের সার্বভৌম অধিকার রয়েছে। এর মধ্যে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত পানিতে ভাসমান অর্থাৎ মাছসহ অন্যান্য সম্পদ এবং সমুদ্রের তলদেশে যে সম্পদ রয়েছে, সবকিছুর মালিক ওই দেশ। কিন্তু ২০০ নটিক্যাল মাইলের বাইরে শুধু সমুদ্রের তলদেশে যে সম্পদ রয়েছে, সেটির মালিক ওই দেশ। উপদেষ্টা পরিষদ মনে করে, চুক্তিতে অনুসমর্থন করা হলে, বাংলাদেশের পক্ষে এ সংক্রান্ত বিষয়ে ন্যায্য হিস্যা অর্জন করা সম্ভব হবে। এই প্রেক্ষাপটে বৈঠকে চুক্তিটি অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
হজের খরচ কমানোর প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের : আসন্ন হজের খরচ কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। সে জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যৌক্তিক পর্যায়ে একটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবে তারা। গত বছরের চেয়ে আসন্ন হজ প্যাকেজের মূল্য কমানো সম্ভব বলে মনে করে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে এ তথ্য জানিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, মুসলমানদের জন্য হজ একটা বড় ব্যাপার। কিন্তু হজের মতো পবিত্র কাজেও একটি সিন্ডিকেট দেখতে পাই। তারা কারসাজি করে হজের প্যাকেজ মূল্য বাড়িয়ে তোলে। হজের যে খরচ, সেটি যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনা যায়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে।
গত বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করে তৎকালীন সরকার। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার সর্বনিম্ন প্যাকেজ ছিল পাঁচ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। আর বেসরকারিভাবে সর্বনিম্ন প্যাকেজ ছিল প্রায় পাঁচ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এ বছর এখনো হজের প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়নি। এখন প্রাক-নিবন্ধন চলছে। আগামী রবিবার থেকে চূড়ান্ত নিবন্ধন শুরু হয়ে চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। এ বছর এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন বাংলাদেশি পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন। সৌদি সরকার আরো আগেই বাংলাদেশের জন্য এই কোটা ঘোষণা করেছে। হজের খরচ কমানোর প্রস্তাবকে সাধুবাদ জানিয়েছেন হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (হাব) প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও বর্তমান সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাওলানা ইয়াকুব শরফতী। তারা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এ দাবি জানিয়ে আসছি। এই সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে হাজিদের কল্যাণ হবে। যারা বাড়তি খরচের কারণে হজে যেতে পারেনি, তারা সেই সুযোগ পাবে। হাজিদের কল্যাণে আমরা এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে হাবের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করব।