কাগজ প্রতিবেদক : পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও চাকরিচ্যুত বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহাল, হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ও কুশীলবদের চিহ্নিত করতে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনসহ ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে বিডিআর কল্যাণ পরিষদ। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা হত্যকান্ডের ঘটনার দিনটিকে ‘পিলখানা ট্র্যাজেডি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করার দাবিও জানান পরিষদের নেতারা।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এ দাবি জানানো হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিডিআর কল্যাণ পরিষদের উপদেষ্টা সাবেক জেসিও ফখরুল ইসলাম। এ সময় পরিষদের সমন্বয়ক ফরিদ হোসেনসহ অন্যান্য সমন্বয়ক ও চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্যে বলা হয়, তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার একটি দেশকে সন্তুষ্ট করতে, সেনাবাহিনীর সামর্থ্য ক্ষুণ্ন ও বাংলাদেশ রাইফেলসকে (বিডিআর) ধ্বংস করে নিজেদের ক্ষমতাকে সুদৃঢ় করতে সুপরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ড’ ঘটিয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হয়েছেন। ফ্যাসিস্ট সরকার প্রহসনের বিচারের নামে আলামত ধ্বংস ও নিরীহ ৫৪ বিডিআর সদস্যকে নিরাপত্তা হেফাজতে হত্যা করেছে। তথাকথিত ‘বিডিআর বিদ্রোহ’ নামে সংজ্ঞায়িত করে ১৮ হাজার ৫২০ জন বিডিআর সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়েছে। বর্তমানে হাজার হাজার বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জানানো ৯টি দাবির মধ্যে রয়েছে- পিলখানার পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে কথিত বিদ্রোহ না বলে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যায়িত করতে হবে। ওই ঘটনায় গঠিত সব প্রহসনের বিশেষ আদালতকে নির্বাহী আদেশে বাতিল করতে হবে। চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের সুযোগ-সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ও কুশীলবদের চিহ্নিত করতে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। পিলখানায় শাহাদাতবরণকারী ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে শহীদের মর্যাদা দিতে হবে।

বিডিআর কল্যাণ পরিষদের নেতারা বলেন, যেসব নিরীহ বিডিআর সদস্যকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে তাদের তালিকা করে পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, হত্যাকাণ্ডে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগকারী বিডিআর সদস্যদের আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জামিন অথবা মামলা থেকে অব্যাহতিসহ চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহালের ব্যবস্থা করতে হবে।