স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে তামাক নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা বাস্তবায়নের দাবি
প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কাগজ প্রতিবেদক : স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে তামাক নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা বাস্তবায়নে জোর দাবি জানিয়েছে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো। সংগঠনের প্রতিনিধিরা বলছেন, দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকা প্রকাশ। এই নির্দেশিকার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহে তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে।
‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ ও সফলতা’ শীর্র্ষক অভিজ্ঞতা বিনিময় সভায় এ দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট, এইড ফাউন্ডেশন, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, নাটাব ও ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সম্মিলিত গতকাল বুধবার উদ্যোগে গতকাল আগারগাঁও এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর অডিটোরিয়ামে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এবং ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক সাইদুর রহমান। প্যানেল আলোচক ছিলেন, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী (যুগ্মসচিব) মো. আখতার উজ জামান, এনজিও ব্যুরোর পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন ও মঈনউল ইসলাম, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের সিনিয়র কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, এইড ফাউন্ডেশন প্রধান নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠাতা তারিকুল ইসলাম পলাশ এবং সিটিএফকের প্রোগ্রাম ম্যানেজার আব্দুস সালাম মিয়া। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা।
সভায় বক্তারা বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বেসরকারি সংস্থা ও সুশীল সমাজ ইতোমধ্যেই তামাক নিয়ন্ত্রণে সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া দেশের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাতে এবং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক চুক্তি এফসিটিসি বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সভায় বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের প্রতিনিধিসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বেশ কিছু পরামর্শ তুলে ধরেন। সেগুলো হলো এনজিও ব্যুরোর মাধ্যমে বাংলাদেশের সব এনজিও/বেসরকারি সংস্থাকে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধূমপানমুক্ত সাইনেজ স্থাপনের মাধ্যমে ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করার নির্দেশনা দেয়ার বিষয়ে পরামর্শ দেয়া; তামাক নিয়ন্ত্রণে যে সব প্রতিষ্ঠান কাজ করে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের ওয়েবসাইটে তাদের নাম প্রকাশ এবং ভবিষ্যতে বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে জর্দা গুলসহ অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্যের উৎপাদনকারী ও বিক্রেতাদের একটি নির্দিষ্ট তথ্য তালিকা তৈরির ব্যবস্থা করা। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধনের জন্য অগ্রসর হওয়া এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রোগ্রাম অনুমোদন বাস্তবায়নের পরামর্শ দেয়া। এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ বস্তবায়ানের জন্য এনজিও ব্যুরোর সব বেসরকারি সংগঠনকে চিঠি পাঠানোর পরামর্শ দেয়া। তামাক নিয়ন্ত্রণ সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান বাস্তবায়নে সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের উদ্যোগ নেয়া। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিদের টাস্কফোর্স কমিটির সভাগুলোতে অংশগ্রহণ ও দায়িত্ব পালনের বিষয়টি নিশ্চিতকরণ। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন কার্যক্রম মনিটরিং এবং তামাক নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত অন্যান্য কাজের সঙ্গে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট/বেসরকারি সংস্থাগুলোকে যুক্ত করা, তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের বিষয়টি আরো বেশি প্রচারের উদ্যোগ নেয়া এবং সহায়ক উপকরণ প্রকাশ ও প্রচার। তামাক নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নির্ধারিত বাজেট বরাদ্দ এবং সুনির্দিষ্ট খাতে ব্যয় নিশ্চিত করা।