রেলওয়ের দুর্নীতি বন্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি রেল উপদেষ্টার
প্রয়োজনে টাস্কফোর্স গঠন
প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কাগজ প্রতিবেদক : রেলওয়ের দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, আমি সবাইকে বলে দিয়েছি এবার যদি আমরা ব্যর্থ হই তাহলে সংশ্লিষ্ট সবারই কিন্তু ভয়ানক পরিণতি হবে। তিনি বলেন, এটা কোনো বানে ভাসা সরকার না, এটা মধ্যরাতের নির্বাচনের সরকার না, এটা কোনো থানার ওসির সরকার না। এটা আমাদের ছাত্র-জনতার রক্তে অর্জিত সরকার। এ সময় রেলের বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধে প্রয়োজনে টাস্কফোর্স গঠনের কথাও বলেন তিনি।
গতকাল সোমবার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পাওয়ার পরে প্রথমদিন রেল ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ, বাংলাদেশ রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী।
পরিসংখ্যান দিয়ে কাউকে মূল্যায়ন করা হবে না জানিয়ে রেলপথ উপদেষ্টা আরো বলেন, রেলওয়ে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এটাকে সেবা দিয়ে মূল্যায়ন করতে হবে। সেবার মান বাড়াতে হবে, যাত্রীদের সুবিধা দেখতে হবে।
টিকেট কালোবাজারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষ কাউন্টারে গেলে টিকেট পায় না। কিন্তু আবার ট্রেনে উঠতে গেলে আলাদাভাবে টিকেট পাওয়া যায়। এটা আগে চললেও এখন চলতে পারে না। জানা গেছে, রেলওয়ে কয়েকজন লোক আছে তারা ফোন নম্বর দিয়ে এ কাজটি করে থাকে। সাধারণ মানুষ কাউন্টারে গিয়ে টিকেট পায় না। এখন আমি বলে দিয়েছি প্রয়োজনে এ বিষয়ে একটা টাস্কফোর্স গঠন করতে। ওই ফোন নম্বরগুলো যেন ব্লক করে দেয়। ওরা যেন আর কখনো কোনো টিকেট কিনতে না পারে। এটাও বলে দিয়েছি, যে আইডি ও মোবাইল নম্বর দিয়ে টিকেট কাটা হয়েছে ও যিনি ট্রেনে ভ্রমণ করছেন তার সঙ্গে মিলছে কিনা তা দেখতে হবে।
ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা নিয়ে আরো একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, জানিয়ে রেলপথ উপদেষ্টা বলেন কয়টার ট্রেন কয়টায় যায় এটা বন্ধ করতে হবে। কিছু কারিগরি সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু এটা দূর করতে হবে। রেলের জমি নিয়ে নয়-ছয় বন্ধ করতে হবে। রেলের জমি কার কার হাতে আছে সেটা দেখতে হবে। আশা করি এসব বিষয়ে আমার কাছে পাঠানো হবে।
রেলের দুর্নীতি বন্ধের বিষয়ে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির বলেন, আসলে দুর্নীতি তো মাথা থেকে শুরু হয়, তারা পিয়ন-ড্রাইভারের মাধ্যমে টাকা নেয়। এটা আর বরদাস্ত করা হবে না। আমি বলেছি, আমাকে যদি কেউ টাকা দিতে চায়, তাহলে সরাসরি আমার অফিসে এসে সামনা সামনি দেবেন। আমি কারো মাধ্যমে টাকা নেবো না। আমি রেলের সচিবকে সঙ্গে রাখবো এবং টাকা নেয়ার রিসিট দেব। আশা করি তারা বুঝতে পারছেন। আমি কাস্টমসে চাকরি করেছি, হাজার হাজার কোটি টাকা লোন দিয়েছি। বিদ্যুৎ বিভাগে সচিব হিসেবে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প করেছি। ওনাদের খোঁজ নিতে বলেছি, আমাকে কীভাবে টাকা দিতে হয় সে পদ্ধতিটা জানতে বলেছি। সুতরাং, ওপর থেকে কোনো রকম দুর্নীতি হবে না। ওপর থেকে যদি দুর্নীতি না হয়, তাহলে তারাও এ সিস্টেম মেনে নেবেন। আগে তো আমাদের এসব চেয়ারে বসা লোকজনের কাছেই টাকা আসত। এখন তো প্রয়োজন নেই।
আন্তঃদেশীয় ট্রেন মৈত্রী, মিতালী ও বন্ধন কবে থেকে চলবে এ বিষয়ে রেলপথ উপদেষ্টা বলেন, আমরা প্রস্তুত, তবে ভারতের পক্ষ থেকে এখনো এ তিনটি ট্রেন চালানোর বিষয়ে কোন সিগনাল আমরা পাইনি। তারা অনুমতি দিলে এ তিনটি ট্রেন চালবে।