চট্টগ্রামে আটক বাহামার নারী শুধুই বাহক
কোকেন পাচারে নাইজেরিয় চক্র
প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কোকেনসহ ধরা পড়া বাহামার নাগরিক স্টাসিয়া শান্তে রোলি (৫৪) শুধুই একজন বাহক। আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ী চক্রে জড়িত হয়ে তিনি বাংলাদেশের রুট ব্যবহার করেছেন। নাইজেরিয়ান ওই চক্রের মাধ্যমে তিনি ৩ কেজি ৯০০ গ্রাম ওজনের কোকেন নিয়ে এসেছিলেন। চট্টগ্রামে অবস্থান করার জন্য অনলাইনে একটি এজেন্সির মাধ্যমে নাইজেরিয়ান চক্রটি একটি হোটেলের রুম বুকিং করে। ওই হোটেলের গাড়ি গিয়ে স্টাসিয়া শান্তে রোলিকে বিমানবন্দর থেকে নিয়ে আসে। কোকেন পাচারের বিষয়ে স্টাসিয়া শান্তে রোলির সঙ্গে যোগাযোগ করা ঢাকার দুজন নাইজেরিয়ান নাগরিককেও আটক করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক কোকেন চোরাচালানকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এড়ানোর জন্য ঢাকার পরিবর্তে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর বেছে নেয়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত ১২ জুলাই থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কোকেন বাহক স্টাসিয়া শান্তে রোলির জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। গত ১৩ জুলাই সকাল ৮টায় তিনি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে পৌঁছান। কোনো ব্যাগেজ ছাড়া তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করে চট্টগ্রামের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন। গত ১৫ জুলাই রোলি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার ব্যাগেজ ক্লেইম করার পরে রেইডিং টিমের সদস্যরা কাস্টামস হাউসের সহযোগিতায় ব্যাগটি প্রথমে স্ক্যান করে। পরে তার ব্যাগটি তল্লাশি করে একটি কার্টনের ভেতর থেকে ৭টি আয়তকার প্যাকেট আটক করা হয়। প্রতিটি প্যাকেটে প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম হিসাবে মোট ৩ কেজি ৯০০ গ্রাম কোকেন উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে কোকেন পরীক্ষায় পজেটিভ ফলাফলের ভিত্তিতে রোলিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার পাসপোর্ট ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। কোকেনের পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজন নাইজেরীয় নাগরিককে ঢাকা থেকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের সঙ্গে রোলির হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ হয়েছে। মাদক বহনকারীদের দেশে প্রবেশের প্রয়োজনীয় ইনভাইটেশন, হোটেল বুকিং ও ভিসা পাওয়ার কার্যক্রমে একাধিক ব্যক্তি রোলিকে সহযোগিতা করেছেন। ঢাকায় আটকদের পতেঙ্গা থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
তিনি জানান, রোলি বাহামার একটি স্টোরের বিক্রয়কর্মী। তিনি অবিবাহিত। বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন। চিকিৎসার প্রয়োজন দেখিয়ে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। এর বাইরে তার কাছ থেকে অন্যকোনো তথ্য জানা যায়নি। তবে আমরা ধারণা করছি, কোকেন চোরাচালানকারী চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করার অপচেষ্টা করছিলেন।
চট্টগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মেট্রো দক্ষিণের উপপরিচালক রাজিব মিনা বলেন, গ্রেপ্তার রোলিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাহিদ হোসেন মোল্লা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মেট্রো উত্তরের উপপরিচালক খন্দকার হুনায়ুন কবির, এপিবিএন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম মিজানুর রহমান, এপিবিএন ঢাকা বিমানবন্দরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জিয়াউল হক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মেট্রো উত্তরের সহকারী পরিচালক রামেশ্বর দাস।