নরসিংদী স্টেশন
ট্রেন দেখাতে গিয়ে কাটা পড়ে মা-শিশু নিহত
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মাখন দাস, নরসিংদী থেকে : নরসিংদীতে ট্রেনে কাটা পড়ে মা-শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয় অন্য আরেক শিশু। গতকাল শনিবার বিকাল ৫টা ৫৭ মিনিটে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের ৩ নম্বর লাইনে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেসে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো শিবপুর উপজেলার ইটাখোলা পূর্ব মুনসেফেরচর এলাকার বাসিন্দা মালয়েশিয়া প্রবাসী জয়নাল আবেদিনের স্ত্রী সাবিনা বেগম (২৫) ও তার দেড় বছর বয়সি কন্যা মায়মুনা আক্তার। এ সময় গুরুতর আহত হয় তার অন্য কন্যাসন্তান সিনহা আক্তার (৪)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, সাবিনা বেগম তার দুই মেয়েকে নিয়ে নরসিংদীতে শপিং করতে আসেন। বাড়ি ফেরার সময় শিশুদের ট্রেন দেখাতে স্টেশন এলাকায় অবস্থান করেন। এ সময় মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে মগ্ন থাকায় রেললাইনে চলে যায় সিনহা আক্তার। পরে কোলে থাকা ময়মুনাকে সঙ্গে নিয়েই সিনহাকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে মা সাবিনা বেগম। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেসের নিচে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মা-মেয়ের করুণ মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় সিনহাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠায়।
দুর্ঘটনার সময় নিহত সাবিনার সঙ্গে থাকা তার ভাগ্নে তানিম জানায়, বিকালে আমরা ৪ জন নরসিংদীতে আসি। আমরা ইনডেক্স প্লাজা শপিং মলে কেনাকাটা করি। কেনাকাটা শেষে আমরা রেলস্টেশনে ঘুরতে আসি। এ সময় আমরা স্টেশনে ছবি তুলছিলাম। সিনহা আমাদের থেকে দূরে চলে যায়। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনেটি নরসিংদী স্টেশন অতিক্রম করছিল। হঠাৎ মামি ট্রেনের শব্দ শুনে দেখতে পান সিনহা রেললাইনের কাছাকাছি চলে গেছে।
এ সময় কোলে থাকা মাইমুনাকে নিয়ে মামি সিনহাকে বাঁচাতে যায়। এ সময় ট্রেনে কাটা পড়ে মামি ও মাইমুনার মৃত্যু হয়।
নরসিংদী স্টেশন মাস্টার এটি এম মুছা জানান, চট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনেটি নরসিংদী স্টেশন অতিক্রম করছিল। ওই সময় ট্রেনটির নিচে পরে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়। একটা শিশু বাচ্চা গুরুতর আহত হয়। তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা ডা. মাহামুদুল বাশার কমল জানান, আহত শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শহিদুল্লাহ বলেন, কারণ অনুসন্ধানসহ বিস্তারিত জানান চেষ্টা চলছে। পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।