তিস্তা ব্যারেজের বাঁধে ধস, আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট থেকে : এবারো দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের পাশে জেলার হাতীবান্ধা শহর রক্ষা চন্ডিমারী বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের সাধারণ মানুষের মাঝে। যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
জানা গেছে, তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাসের পাশে সাধুর বাজার থেকে দক্ষিণ দিকে হাতীবান্ধা শহর রক্ষার্থে নির্মিত বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এই বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্মাণ করেছে। বাঁধটি এলাকায় চন্ডিমারী বাঁধ নামে পরিচিত। সেই বাঁধের ৬০-৭০ ফুট অংশ ধসে যাচ্ছে। বাঁধের ধস ঠেকাতে ফেলা জিও ব্যাগও পানিতে ভেসে গেছে। কয়েক দিন ধরে এই বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এছাড়া পানি কমে যাওয়ায় ভাঙন বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ধসে যাওয়া বাঁধ পরির্দশন করলেও বাঁধ রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করতে পারেনি। বাঁধের এই অবস্থায় নদীপাড়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। এই বাঁধ ভেঙে গেলে তিস্তা নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে। পানি প্রবেশ করবে হাতীবান্ধা শহরে। নদীপাড়ের সাধারণ মানুষদের পানি উন্নয়ন বোর্ড নিয়ে নানা দুর্নীতির অভিযোগ। তাদের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজোশে সঠিকভাবে কাজ করে না। নানাভাবে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। তিস্তা পাড়ে ৬ মাস হয়নি, বেশকিছু জায়গায় কোটি কোটি টাকা খরচ করে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। তার মধ্যে একটি ছিল মহিষখোচা ইউনিয়নে। সেখানে ৮টি গ্রুপে ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। সেই বাঁধেও ধস দেখা দিয়েছে। বাঁধ এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, তিস্তা নদীর পানি বাঁধের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাঁধের উপর দিয়ে পানি লোকালয়ে ঢুকে জলাবদ্ধা সৃষ্টি করেছে।
বাঁধ পাড়ের বাসিন্দা সেফাউল জানান, সাবেক মন্ত্রীর এপিএস ও তার স্বজনরা বাঁধ নির্মাণের সাবঠিকায় কাজ করেছে। বাঁধের পাশ থেকে তিস্তা নদীর বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা বিক্রি করছে। এখনো সেখানে অবৈধভাবে উত্তোলন করা বালুর পাহাড় সমান ঢিবি রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ দৌলা জানান, স্থানীয়রা বলার পরে ওই স্থানে কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছিল। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হঠাৎ করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে। ধস ঠেঁকাতে জিও ব্যাগ ও ব্লক ফেলা ছাড়া এই মুহূর্তে কিছুই করার নেই। আশা করছি ওই স্থানে বড় ধরনের ক্ষতি হবে না।