ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস
ধীরগতিতে বাড়ছে সুরমা কুশিয়ারার পানি
প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সিলেট অফিস ও সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : এবার ধীর গতিতে বাড়ছে সুরমা-কুশিয়ারার পানি। ফলে ফের আরেক দফা বন্যার মুখে পড়তে হতে পারে সিলেটবাসীকে। সিলেটে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে বলে সতর্কবাণী দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বর্ষণের কারণে ফের বন্যা এবং কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কার কথাও বলা হয়েছে।
গতকাল রবিবার সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মো. সজীব হোসেন জানান, বাংলাদেশের উপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ৩০ জুন বিকাল ৪টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারি (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারি (৮৯ মিমি/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। ভারি বর্ষণের কারণে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। আবার টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল নামলে সিলেটে ফের বন্যা হতে পারে।
বৃষ্টিপাত কমায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদনদীর পানি গত কিছুদিন ধরে কমছিল। তবে এর মধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় গত শনিবার থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। ফলে ফের সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বন্যা তথ্যকেন্দ্র থেকে গত শুক্রবার জারিকৃত পূর্বাভসে বলা হয়েছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও সংলগ্ন উজানে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ সময় এই অঞ্চলের নদনদীর পানি বাড়তে পারে। এ সময় সুরমা, কুশিয়ারা, পুরাতন সুরমা ও সারিগোয়াইন নদনদীর পানি দ্রুত বেড়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নি¤œাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হওয়ায় বাড়ছে সুনামগঞ্জের প্রধান নদী সুরমা, জাদুকাটা, রক্তি, বৌলাই, পাঠলাই, কুশিয়ারা এবং কালনী নদীর পানি। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১৮৬ মি.মি. বৃষ্টিপাত হওয়ায় জেলার প্রধান নদী সুরমাসহ বিভিন্ন নদীর পানি বেড়েছে ২৮ সে. মি.। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে নদীর পানি বাড়লেও বিপৎসীমার ৩৯ সে. মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। সে অনুযায়ী এখনো জেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়নি। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী এখনো সুনামগঞ্জের নি¤œাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা কাটেনি।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বাসিন্দা জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক বিজন সেন রায় বলেন, গত কয়েকদিন আগের বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই গত দুদিনে বৃষ্টিতে যেভাবে নদীর পানি হুহু করে বাড়ছে তাতে জেলাবাসীর রাত কাটছে ফের বন্যার আশঙ্কায়।
মধ্যনগর উপজেলার বংশিকুণ্ডা দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল আহমদ বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুলেফেঁপে উঠছে হাওরের পানিও। ফলে হওরবাসীর মধ্যেও দেখা দিয়েছে বন্যার আশঙ্কা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার সুনামগঞ্জের প্রধান নদীসহ বিভিন্ন উপজেলার নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত জেলায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী জেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তবে গতকাল রবিবার বিকাল পর্যন্ত জেলার কোথাও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।