×

খবর

পতন থামছেই না

রিজার্ভ ১৯.৯৭ বিলিয়ন ডলার

Icon

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কাগজ প্রতিবেদক : নানা পদক্ষেপেও ডলার সংকট কাটিয়ে উঠতে পারছে না সরকার। আমদানি ব্যয় মেটাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ডলার কিনছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে। এদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে আসার কারণে কমতির দিকেই দেশের অর্থনীতির সূচক। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত সপ্তাহের মতো ২০ বিলিয়ন বা ২ হাজার কোটি ডলারের নিচেই রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, ২৪ এপ্রিল শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৯৯৭ কোটি ডলারে। এ সময় মোট রিজার্ভের পরিমাণ ২৫ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৫৩৮ কোটি ডলার। গত বছরের এই সময়ে মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ১১৮ কোটি ডলার। ঈদের আগে গত ৮ এপ্রিল বিপিএম-৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ১১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১১ কোটি ডলার। এদিন মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৩৯ কোটি ডলার। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী, তা দাঁড়ায় ২৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়িয়েছিল। বিদেশ থেকে ঋণ নেয়াসহ বিভিন্ন উপায়ে ওই সময় রিজার্ভ বাড়ানো হয়। এরপর সংকটের কারণে ২৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ কমে গত নভেম্বর শেষে ১৯ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। এরপর আবারো বেড়ে ডিসেম্বরে ২১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার হয়েছিল। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি শেষে আবার কমে ১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে যায়। মার্চের শেষ তিন সপ্তাহ ধরে রিজার্ভের নি¤œগতি দেখা যায়। সূত্র বলছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ডলার সংকটে রয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে জ্বালানি ও নিত্যপণ্য আমদানি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরেও রিজার্ভ থেকে ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ডলার বিক্রি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। গত অর্থবছরের শুরুর দিকে দেশে ডলারের সংকট দেখা দিলে আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সময় নিত্যপণ্য বাদে বিলাসীপণ্য আমদানিতে শতভাগ মার্জিন দেয়া হয়। এতে এলসি নিষ্পত্তি ও পরিশোধ কমে যায়। তবে রেমিট্যান্সে বড় বিপর্যয়ের পর আবারো ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসীরা ২১৬ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ আয় দেশে পাঠিয়েছেন। আগের মাস জানুয়ারিতে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২১০ কোটি ডলার। জানুয়ারি মাসের তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাস ২ দিন কম হলেও প্রবাসী আয় বেশি এসেছে। এদিকে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ১৫৬ কোটি ১০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৩৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, নীতিগত ভুলের কারণে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে আর কোনো পথ নেই। জরুরি এলসি নিষ্পত্তির জন্য বাধ্য হয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে এখনো। তাই ডলারের সরবরাহ বাড়ানোর পদক্ষেপ খুব একটা কার্যকর হচ্ছে তা দৃশ্যমান না। রিজার্ভ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের নিচে গেলে আমদানিতে ঝামেলা হতে পারে। এদিকে আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের দুই কিস্তির অর্থ পাওয়ার পর তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়ার কথা। অথচ বাংলাদেশের নিট রিজার্ভের উন্নতি হয়নি। এমন বাস্তবতা সামনে রেখে ঋণের শর্ত পর্যালোচনা করতে আইএমএফের একটি বিশেষ দল ঢাকায় এসেছে গত বুধবার। বৈঠক চলবে আগামী ৮ মে পর্যন্ত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App