×

শেষের পাতা

পূর্ণ অনুমোদন ও বাস্তবায়নে স্থবিরতা কাটেনি ৪০ বছরেও

আন্তর্জাতিক সিডও দিবস আজ

Icon

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পূর্ণ অনুমোদন ও বাস্তবায়নে  স্থবিরতা কাটেনি ৪০ বছরেও

সেবিকা দেবনাথ : ক্ষমতার পালাবদলে কোনো সরকারই আন্তর্জাতিক সিডও (নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ) সনদের পূর্ণ অনুমোদন ও বাস্তবায়নে খুব বেশি আগ্রহ দেখায়নি। কখনো সরকারের পক্ষ থেকে সিডও রিপোর্ট জমা দেয়ার ক্ষেত্রে দেখা গেছে অনাগ্রহ, কখনোবা বলা হয়েছে সমাজ প্রস্তুত নয়। এই করে কেটে গেছে সনদ স্বাক্ষরের ৪০ বছর। এক্ষেত্রে স্থবিরতা কিছুতেই কাটছে না।

নারী ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়নে দেশে অনেক আইন আছে। আন্তর্জাতিক অনেক সনদে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু সিডও সনদের পূর্ণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে কোনো সরকারই আন্তরিকতা দেখায়নি। দীর্ঘদিন ধরে সনদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘সংরক্ষণ’ রাখার বিষয়টি দেশে নারীবান্ধব কর্মকাণ্ডকেও প্রশ্নের সম্মুখীন করছে। তারা বলছেন, বর্তমানে দেশে নির্বাচিত কোনো সরকার নয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। তারা চাইলে এক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।

১৯৮৪ সালের ৬ নভেম্বর সিডও সনদ স্বাক্ষর করেছিল বাংলাদেশ সরকার। অনুমোদনের সময় সরকার সিডওর ১৬টি ধারার মধ্যে ৪টিতে (ধারা-২, ১৩(ক) এবং ১৬.১(গ) ও (চ) ধারা) আপত্তিসহ স্বাক্ষর করেছিল। পরে জাতীয় পর্যায়ে গঠিত রিভিউ কমিটির সুপারিশ ক্রমে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ১৩(ক) ও ১৬.১(চ) ধারা থেকে আপত্তি প্রত্যাহার করে নেয় বাংলাদেশ। তবে ধারা ২ এবং ১৬.১(গ) এই দুটি ধারায় আপত্তি বহাল রেখেছে। সিডওর ২ নম্বর ধারাকে বলা হয়ে থাকে সিডওর প্রাণ। এই ধারায় বলা আছে, নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য নিরসনে শরিক দেশগুলো আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে এবং আইনের সংস্কার করবে। ১৬.১(গ) ধারায় বিয়ে এবং বিয়ে বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকার ও দায়িত্বের কথা বলা হয়েছে।

সিডও সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ভোরের কাগজকে বলেন, সিডও সনদের পূর্ণ সমর্থন ও বাস্তবায়নে আমরা দীর্ঘসময় ধরে স্থবির অবস্থায় আছি। ২০২১ সালে জাতিসংঘ সিডও সনদবিষয়ক কমিটিকে রিপোর্ট দেয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। করোনা মহামারির কারণে তা হয়নি। এরপর ২০২৪ সালে রিপোর্ট জমা দেয়ার কথা ছিল। বেসরকারিভাবে আমরা আমাদের রিপোর্ট জমাও দিয়েছি। কিন্তু সরকার রিপোর্ট দিতে পারেনি। আমরা জানি, দেশে এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকার কতদিন রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষমতায় থাকবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। সিডও সনদ অনুমোদন বা বাস্তবায়নে তাদের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

এ প্রসঙ্গে মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির ভোরের কাগজকে বলেন, সিডও সনদের মূল জায়গাতেই আমরা এখনো সংরক্ষণ রেখে দিয়েছি। মূল ধারাগুলোতে সংরক্ষণ রেখে এই সনদের কোনো সুফল মিলবে না। ব্যক্তিগত জীবনে আমার নিশ্চয়তা নিশ্চিত না হলে বাকি ক্ষেত্রে কী হবে? কোনো সরকারই এ সনদের ক্ষেত্রে আন্তরিকতা দেখায়নি। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায়। যেহেতু তারা নির্বাচিত নয়, তাই তাদের ‘পপুলারিটি কনটেস্ট’ এর দরকার নেই। এই সরকার যদি সত্যিকার অর্থেই চায় তাহলে তা হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে আমি সন্দিহান। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তারা যেহেতু নির্বাচিত নয়। দেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব তাদের দেয়া হয়েছে। দেশ এবং দেশের মানুষ যদি তাদের কাছে প্রধান হয়, তাহলে তাদের অন্য দিকে তাকানো উচিত নয়।

এই প্রেক্ষাপটে আজ মঙ্গলবার পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক সিডও দিবস। ১৯৭৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এই সনদ গৃহীত হয়। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে ১৯৮১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে সনদটি কার্যকর হতে শুরু করে। এরপর থেকেই এই সনদে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো প্রতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক সিডও দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ বেলা ১১টায় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে ‘নারীর প্রতি বৈষম্য নিরসনে চাই সিডও সনদের পূর্ণ অনুমোদন ও বাস্তবায়ন’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

ঢাবি অধিভুক্ত ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য সুখবর

ঢাবি অধিভুক্ত ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য সুখবর

ঠিকানা বদল করছেন দীপিকা-রণবীর

ঠিকানা বদল করছেন দীপিকা-রণবীর

হাসানের তিন শিকারে দারুণ সকাল বাংলাদেশের

হাসানের তিন শিকারে দারুণ সকাল বাংলাদেশের

আন্দোলনের সময় হওয়া মামলা তুলে নেয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের

আন্দোলনের সময় হওয়া মামলা তুলে নেয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App