×

শেষের পাতা

সালাহউদ্দিনের দুঃখ প্রকাশ

এস আলমের গাড়িতে ওঠা ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’

Icon

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

এস আলমের গাড়িতে  ওঠা ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’

কাগজ প্রতিবেদক : আলোচিত ও সমালোচিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের মালিকানাধীন গাড়িতে চড়ে সংবর্ধনা নিতে যাওয়ার বিষয়টি ‘অসাবধানতা ও অনিচ্ছাকৃত ভুল’ দাবি করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল সোমবার দুপুরে গুলশানে নিজের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলন করে এই দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

গত ২৮ আগস্টের ঘটনা তুলে ধরে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর পর আমার নিজ নির্বাচনী জেলায় সেদিন সংবর্ধনা অংশ নিয়েছিলাম। আমি বিমানবন্দর থেকে নেমে কোনো গাড়িতে করে যাব, সেটা তো আমি ঠিক করিনি। যারা সংবর্ধনা আয়োজন করেছিল, চকরিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক তা ঠিক করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, বিমানবন্দরে নামার পর আমাদের নেতাকর্মীরা বলেছে- এই গাড়িতে উঠেন। এখন সেই গাড়িটি কার তা খোঁজ নেয়ার চিন্তা-ভাবনার মধ্যে আমি ছিলাম না। ১০ বছর পর নিজ জেলায় যাচ্ছি, তাই আবেগাপ্লুত ছিলাম। মনের মধ্যে বাসনা ছিল কখন মা-বাবার কবর জিয়ারত করব।

সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরে জানতে পারি এই গাড়িটি আমার এক ছোট ভাইয়ের। যিনি এস আলম গ্রুপে চাকরি করেন। তিনি কোম্পানির বিভিন্ন জমির বিষয়গুলো দেখে থাকেন। এ জন্য তাকে চলাচলের জন্য গাড়ি দিয়েছে। আমার ওই ছোট ভাই খুব আনন্দিত যে, আমি তার গাড়িতে উঠেছি। তবে যদি জানতাম এটা কোম্পানির গাড়ি, তাহলে আমি সাবধানতা অবলম্বন করতাম।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমি এস আলম কোম্পানির গাড়ি ব্যবহার করেছি- এ নিয়ে গণমাধ্যমে রিপোর্ট হওয়ার পর জনমনে কিছু বিভ্রান্তির সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। আমি যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে দেশবাসী ও কারো মনে কোনো কষ্ট দিয়ে থাকি তার জন্য দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চাচ্ছি।

গাড়িচালক পরিচিত ছিল বলে আপনার (সালাহউদ্দিন) উদ্ধৃতি দিয়ে একটি গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সালাহউদ্দিন আহমেদের বলেন, এই কথা আমি ওই পত্রিকার রিপোর্টারকে বলিনি। এটা কীভাবে লিখেছেন আমি জানি না। এটা মিস কোট করা হয়েছে। ওইখানে একটা মাইক্রোবাস ছিল, যার ড্রাইভার আমার এলাকার ছিল। আমি মনে হয় ওই গাড়িতে উঠতে চেয়েছিলাম। তবে হুড খোলা নেই বলে আমাকে সেই গাড়িতে উঠতে দেয়া হয়নি। হয়তো এই কথাগুলো মিস কোট করে লেখা হয়েছে। তবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে যা কিছু, এগুলো পরিহার করলে আমরা মনে হয় ভালো হয়। তারপরও আমার অসাবধানতার জন্য আবারো দুঃখ প্রকাশ করছি।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৪ জুন কক্সবাজারে জেলা জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে সালাহউদ্দিন নিখোঁজ হন। ৬২ দিন পর ওই বছরের ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি দেশে ফেরেন। এরপর গত ২৮ আগস্ট কক্সবাজারে নিজ নির্বাচনী জেলায় গিয়ে সংবর্ধনা নেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। এদিন দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। এরপর দলের নেতাকর্মীদের গাড়ি বহরের সঙ্গে পেকুয়ায় পৌঁছান। কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদের গাড়িবহর পেকুয়ায় পৌঁছানোর বিভিন্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

এ রকম একটি ভিডিওতে দেখা যায়, যে গাড়িতে (জিপ) চড়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ কক্সবাজার থেকে পেকুয়ায় আসেন, সেটির নম্বর চট্ট মেট্রো ঘ-১১-১৫৩৩। এটি মিতসুবিশির স্টেশন ওয়াগন ব্র্যান্ডের জিপ। তিনি সামনে সিটে বসে হাত নেড়ে আশপাশের লোকজনকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিববহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চট্টগ্রাম কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জানা যায়, সালাহউদ্দিন আহমেদকে বহন করা গাড়িটি (চট্ট মেট্রো ঘ-১১-১৫৩৩) এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন। এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে এটি ২০১০ সালে নিবন্ধন করা। ঠিকানা লেখা আছে এস আলম ভবন, চট্টগ্রাম নগরের আছদগঞ্জ। এটি এস আলম গ্রুপের প্রধান কার্যালয়।

প্রসঙ্গত, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান হলেন মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম)। দেশের ছয়টি ব্যাংকের মালিকানা ছিল এই গ্রুপের। দেশে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর একে একে সামনে আসে এস আলম গ্রুপের দুর্নীতি। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডির) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল ইসলাম (এস আলম) ও তার সহযোগী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরের কালুরঘাট এলাকার একটি কারখানা থেকে বিলাসবহুল কয়েকটি গাড়ি বের হওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, একটি কারখানা থেকে একের পর এক দামি গাড়ি বের হচ্ছে। সেখানে কয়েকজন ব্যক্তি তা তদারক করছেন। যারা ভিডিওটি শেয়ার করেছেন, তাদের ভাষ্য, এগুলো শিল্প গ্রুপ এস আলমের গাড়ি এবং যারা তত্ত্বাবধানে আছেন, তারা বিএনপির নেতাকর্মী। এ ঘটনার পর দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানসহ তিন নেতাকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেয় দলটি। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে দুঃখ প্রকাশ করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

৯ সেপ্টেম্বর: সারাদিন যা যা ঘটলো

৯ সেপ্টেম্বর: সারাদিন যা যা ঘটলো

সীমান্ত হত্যা ভারত-বাংলাদেশ সুসম্পর্ক জোরদারে বড় বাধা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সীমান্ত হত্যা ভারত-বাংলাদেশ সুসম্পর্ক জোরদারে বড় বাধা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

শাহরিয়ার আলম ও দিলীপ আগরওয়ালার ব্যাংক হিসাব তলব

শাহরিয়ার আলম ও দিলীপ আগরওয়ালার ব্যাংক হিসাব তলব

র‌্যাবের গাড়ি থেকে আ’লীগ নেতাকে ‘ছিনিয়ে নিলো’ বিএনপি নেতারা

র‌্যাবের গাড়ি থেকে আ’লীগ নেতাকে ‘ছিনিয়ে নিলো’ বিএনপি নেতারা

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App