বার্কিং টাউন স্কয়ারে চ্যারিটি মেলা
লন্ডনে মেয়র মঈন কাদেরীর উদ্যোগ
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আজিজুল আম্বিয়া, লন্ডন (যুক্তরাজ্য) থেকে : লন্ডন বারা অব বার্কিং অ্যান্ড ডেগেনহাম কাউন্সিলের মেয়রের পক্ষ থেকে গত রবিবার দিনব্যাপী বিশেষ চ্যারিটি ইভেন্টের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে বার্কিং টাউন স্কয়ারে আয়োজিত মেলায় অংশ নেন বিপুলসংখ্যক বাঙালি। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মেয়র মঈন কাদেরী সবাইকে সেখানে স্বাগত জানান। আড়ম্বরপূর্ণ মেলায় ব্রিটেনের মূলধারার মানুষের পাশাপাশি বিশেষ করে এশিয়ান মানুষের উপস্থিতি নজর কেড়েছে। ছিলেন বাংলাদেশি মেয়র, কাউন্সিলর এবং বাংলাদেশি কমিউনিটি পুলিশ থেকে শুরু করে অফিসার, ভলান্টিয়ার ও ব্যবসায়ীরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি শিল্পীরা গানের মাধ্যমে দেশপ্রেম এবং জাতিগত নিজস্বতা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেন।
মেলায় এসে উচ্ছ¡াস প্রকাশ করেন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ। ইস্ট লন্ডন ও এসেক্স অঞ্চলের বারাসমূহ থেকে আসা স্বদেশি মানুষের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়ে অনেকেই ছিলেন আনন্দিত। মেলার মাধ্যমে সৃষ্টি হয় ভালোবাসা ও উদারতার মেলবন্ধন।
মেলায় স্থান পায় বিভিন্ন পণ্য সামগ্রীর স্টল। বিশেষ আকর্ষণ ছিল খাবারের স্টল। ঝাল চানাচুর, নারকেলের চিড়া, ডিমের ঝিনুক পিঠা, গুড়ের বাতাসা- এমন মজাদার সব খাবার। সচারচর এসব খাবার সব জায়গায় পাওয়া যায় না।
গত কয়েক বছরে লন্ডনের অনেক এলাকা থেকে বাড়ি বদলে বার্কিং অ্যান্ড ডেগেনহামে এসেছেন কয়েকশ বাংলাদেশি পরিবার। এছাড়া বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বাসা ভাড়া নিয়েছেন এই এলাকায়। মেলা উপলক্ষে তাদের মধ্যে সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় হয়েছে।
ঊনিশ শতকের প্রথম দিকে সিলেট অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে চায়ের চাষ শুরু হলে চা রপ্তানির কাজে সিলেটের মানুষ বিলেত যাত্রা শুরু করেন। এরপর জাহাজ শ্রমিক হিসেবে ব্যাপক হারে মানুষ বিলেতে পাড়ি জমান। উচ্চতর শিক্ষার জন্যও এসেছেন অনেকে।
ভ্রমণ, কর্মসংস্থান এবং স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ নিয়ে সারাদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ প্রবাসী হয়েছেন।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ব্রিকলেন বাংলা টাউন থেকে শুরু করে ইস্ট লন্ডনের বিভিন্ন এলাকায় অনেক প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড বাংলায় হয়েছে। মসজিদ, দোকানপাট, হাসপাতাল, পার্ক- সর্বত্র বাংলার ব্যবহার বেড়েছে। বার্কিং, ডেগেনহাম, নিউহাম, ওয়েস্টহাম, ক্যামডেন, বার্মিংহাম, ম্যানচেস্টার, কার্ডিফ ও নিউক্যাসলের মতো এলাকাগুলোয় অনেক প্রতিষ্ঠান ও রাস্তার নাম বাংলায় লেখা আছে। বলা যায়, এগুলো বাঙালিদের অবদানের জন্য হয়েছে।
ব্রিটেনে নিজেদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধরে রাখার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিরা গড়ে তুলেছেন মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজ এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ইভেন্টে বাংলায় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষা চর্চা হয় সমান্তরালভাবে। যেমনটি এবারের মেলাতেও ছিল। বিশ্বায়নের এ যুগে বাংলাভাষী মানুষ যেখানেই সমাজবদ্ধ হয়েছেন, সেখানেই মুখরিত হয়েছেন নিজেদের সংস্কৃতি ও ভাষা চর্চায়। এভাবেই অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে বিশ্বময় বাংলাভাষা ও বাংলাদেশি সমাজ।