সাবেক প্রাণিসম্পদমন্ত্রী, তিন এমপির দুর্নীতি তদন্তে দুদক
প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কাগজ প্রতিবেদক : দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জন এবং পাচারের অভিযোগে সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমানসহ চার সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাকি তিন সংসদ সদস্য হলেন, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার (ছেলুন), সাবেক হুইপ ও দিনাজপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. ইকবালুর রহিম এবং মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর। তারা সবাই আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ছিলেন।
গতকাল বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় তাদের দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দুদক সূত্রে জানা গেছে, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে ফরিদপুরের মধুপুরে ভবন নির্মাণ, রাজউকসহ (পূর্বাচল) বিভিন্ন জায়গায় জমি কেনা, নিজ নামে মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসি, দ্য সিটি ব্যাংক পিএলসি ও সোনালী ব্যাংক পিএলসিতে সঞ্চয়পত্র, তার স্ত্রী মির্জা নাহিদা হোসেনের নামে শান্তা দিগন্ত টাওয়ার-২, করবী, ফ্ল্যাট নম্বর-৩ ই, ৩/৩ এ, পরীবাগ ঢাকায় চারটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়া দেশের বাইরে টাকা পাচার করে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন ও কানাডায় একাধিক বাড়ি কেনার তথ্য গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে ঢাকার উত্তরা মডেল টাউনে ৫ কাঠা জমির উপর বাড়ি (নম্বর-১২, সেক্টর-১০, রোড-১২), ধানমন্ডিতে ফ্ল্যাট, দুটি গাড়ি, দিনাজপুরের উথরাইল মৌজা, পুচকুর মৌজা, রামপুর মৌজা ও জালালপুর মৌজায় বিপুল পরিমাণ জমি রয়েছে। এছাড়া তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে সাইফুজ্জামান শিখরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে মাগুরা জেলার জাগলা এলাকায় প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে অটোব্রিকস ফিল্ডের ব্যবসা, মাগুরার চাওলিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত নগর পদ্মবিলে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে মৎস্য খামার, নিজ নামে ১০টি ট্রাক, শ্যালকের নামে দুটি ও খালকুড়া নবাবের ছেলের নামে দুটি গাড়ি ক্রয়, মাগুরা সদরে তার মালিকানাধীন মনোয়ারা কমপ্লেক্স নামীয় বহুতল মার্কেট, মাগুরার বিভিন্ন জায়গায় অনেক জমি ও নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দারের (ছেলুন) বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে চুয়াডাঙ্গা সদরে তিন তলা বিশিষ্ট বিলাস বহুল ‘জোয়ার্দ্দার কুটির’ নামীয় বাড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় জমি ক্রয়, প্রায় ৮০-১০০টি এসি-ননএসি বাসসহ ১৫-২০টি ট্রাক, স্ত্রী ও নিজ নামে সঞ্চয়পত্র, একটি প্রাডো গাড়িসহ তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।