×

শেষের পাতা

সরকার-নাগরিক যৌথভাবে কাজ করলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব

এডিস মশা নিধনে বিকল্প পদ্ধতি ভাবার পরামর্শ

Icon

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

এডিস মশা নিধনে বিকল্প  পদ্ধতি ভাবার পরামর্শ

কাগজ প্রতিবেদক : ডেঙ্গুরোগের বাহক এডিস মশা নিধনে বর্তমান কর্মপদ্ধতির ব্যর্থতায় বাড়ছে এ রোগের ব্যাপকতা। এ কারণে এডিস নিধনে বিকল্প পদ্ধতি ভাবার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি গ্রহণ এবং যথাযথ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যা বিশ্বে বহু দেশে প্রমাণিত হয়েছে। সরকার ও নাগরিকরা যৌথভাবে কাজ করলে, বাংলাদেশেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। ডেঙ্গুজনিত প্রতিটি মৃত্যুকে রুখে দেয়াও সম্ভব।

‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধান ও করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় গতকাল রবিবার বক্তারা এসব কথা বলেন। সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক) যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে। সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পবার নির্বাহী সভাপতি ডা. লেলিন চৌধুরী। পবার সহসভাপতি হাফিজুর রহমান ময়নার সভাপতিত্বে সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ ড. রুমানা হক, বারসিকের পরিচালক পাভেল পার্থ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বলেন, এডিস মশাকে ধোঁয়া ও মেডিসিন দিয়ে নিধন করার চিন্তা করলে হবে না। এডিস ও কিউলেক্স মশা এক নয়। এডিস মশা নিধনে সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করতে হবে। অথচ এটি নির্ধারণে সিটি করপোরেশনের পর্যাপ্ত কিট তত্ত্ববিদ নেই। স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মিত ল্যাব নেই। এভাবে মশা নিধন সম্ভব নয়। রোগী শনাক্তের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ডেঙ্গু শহর ছেড়ে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। অথচ সেখানে শনাক্ত ও চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা নেই। এ অবস্থায় ম্যালেরিয়ার মতো রেপিড টেস্টের মাধ্যমে গ্রামে ডেঙ্গু শনাক্তকরণের ব্যবস্থা করতে হবে। সা¤প্রতিক যে গাইড লাইন প্রণয়ন করা হয়েছে তা প্রতিরোধমূলক নয়।

অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, এডিস মশা এখন আর নগরের মশা নেই। সে এখন

তার রাজত্ব সারাদেশে ছড়িয়েছে। এজন্য পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা করতে হবে। অন্য প্রাণী দিয়ে তা নিধন করতে হবে। কিন্তু আমরা তা ধ্বংস করে দিয়েছি। এখন ফড়িং খুঁজে পাওয়া দায়। ফলে আমরা মশা মারতে কীটনাশক ব্যবহার করেছি। এটা ক্ষতিকর।

ডেঙ্গুর আর্থিক ক্ষতির তথ্য তুলে ধরে অধ্যাপক ড. রুমানা হক বলেন, ডেঙ্গু চিকিৎসায় জটিল অবস্থায় আমরা হাসপাতালে ভর্তি হই। আমাদের টেস্ট ও চিকিৎসা বাবদ ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা ব্যয় হয়। আক্রান্ত ব্যক্তি এ সময় কাজে যেতে পারেন না। ফলে এখানেও কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। আবার সরকারও এখানে অনেক ভর্তুকি দিচ্ছে। যা সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতি।

পাভেল মাহমুদ বলেন, রাষ্ট্রের অবহেলার কারণে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা পরিবেশ ধ্বংস করেছি। পরিবেশগত ব্যবস্থাপনায় জোর দিতে হবে।

ধারণাপত্রে ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ডেঙ্গু এডিস মশাবাহিত সংক্রামক ভাইরাসজনিত রোগ। ডেঙ্গু ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ঢাকাসহ কয়েকটি শহরে সীমাবদ্ধ ছিল। তবে এর মাঝে সুসমন্বিত কার্যকর উদ্যোগের অভাবে দিন দিন এডিস মশার উৎপাত বেড়েছে। এ অবস্থায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মশা নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলে কেন্দ্রীয়ভাবে পরিকল্পনা করে স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। ধারণাপত্রে বলা হয়, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের দুটি অংশ রয়েছে। একটি হচ্ছে, এডিস মশার নিয়ন্ত্রণ এবং অপরটি হচ্ছে ডেঙ্গুরোগীর চিকিৎসা।

এ সময় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে পবা ও বারসিকের পক্ষে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো- মশা নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি পরিকল্পনা প্রস্তুত করা; স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগকে মশা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিতভাবে কাজ করা; পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জনসাধারণকে যুক্ত করা; মশক নির্মূলে রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণ, জিনগত নিয়ন্ত্রণ এবং জৈব নিয়ন্ত্রণ বা বায়োলজিকাল কন্ট্রোলের যুগপৎ এবং ক্ষেত্র অনুযায়ী বা প্রয়োজনভিত্তিক প্রয়োগ করা; রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকর, পরিবেশবান্ধব মশা বিধ্বংসী ওষুধ প্রয়োগ করা; স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে পাড়া মহল্লায় সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা প্রভৃতি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

ডেঙ্গুতে মৃত্যু আরো ১ জনের

ডেঙ্গুতে মৃত্যু আরো ১ জনের

চীন-চট্টগ্রাম রুটে প্রথম সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু, ৯ দিনে নোঙর

চীন-চট্টগ্রাম রুটে প্রথম সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু, ৯ দিনে নোঙর

ভারতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে যে অভিযোগ করলেন মোদি

ভারতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে যে অভিযোগ করলেন মোদি

সেই ঘটনার ১১ বছর পর আসাদুজ্জামান নূরসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সেই ঘটনার ১১ বছর পর আসাদুজ্জামান নূরসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App