সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া
অনলাইনে জুয়া টিম আছে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি
প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কাগজ প্রতিবেদক : সাড়ে ছয় হাজারের বেশি অনলাইন জুয়া টিম আছে, যারা বিভিন্ন উপায়ে অপরাধ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া। গতকাল রবিবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে ‘সাবমিশন অব রিসার্চ রিপোর্ট অন চ্যালেঞ্জ অব কন্ট্রোলিং ইলিগ্যাল মানি ট্রান্সফার থ্রæ মোবাইল অ্যাপস : এ স্টাডি অন অনলাইন গ্যাম্বলিং’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ ও মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি।
সিআইডিপ্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, অনলাইনভিত্তিক, ট্রেডভিত্তিক আন্ডার ও ওভার ইনভয়েজের মাধ্যমে যে পরিমাণ টাকা পাচার হয় সেটি ই-মানির মাধ্যমে হচ্ছে। এর কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য আমাদের কারো কাছে নেই। ডাটাবেজ থাকলে এসব জানা সহজ হতো। আমরা যখন কাউকে ধরি, তখন কিছু তথ্য পাই। তবে এই মুহূর্তে আমরা দেখতে পাচ্ছি, সাড়ে ছয় হাজারের বেশি অনলাইন জুয়া টিম আছে, যারা বিভিন্ন উপায়ে অপরাধ করে যাচ্ছে। ফেসবুক স্ক্রল করলেই ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের অনলাইন গ্যাম্বলিংয়ের (জুয়া) বিজ্ঞাপন চোখ পড়ে- এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তির দিকে না গিয়ে আইনের মধ্যে থাকতে হবে। অনলাইন জুয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ও তা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। অনলাইন গ্যাম্বলিং (জুয়া) নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন বলে করেন মোহাম্মদ আলী মিয়া। তিনি বলেন, সিআইডিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা ও ডিভাইস জব্দসহ অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে পারত। কিন্তু নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে অবৈধ অর্থ পাচারের ধারায় এখন সেটি সম্ভব হচ্ছে না। আমরা সহজে কিছু করতে পারছি না। নতুন আইন হওয়ার পর অনলাইন গ্যাম্বলিংয়ের অভিযোগে কোনো মামলা হয়নি। অথচ অনলাইন গ্যাম্বলিংয়ে অবৈধভাবে অর্থপাচার বাড়ছে। এখনই দরকার অনলাইন গ্যাম্বলিং নিয়ন্ত্রণ আইন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের একটা ট্র্যাডিশনাল আইন আছে। প্রকাশ্যে যারা জুয়া খেলে, তিন বা চার তাস, এর শাস্তি ছিল ৫০-১০০ টাকা জরিমানা। কিন্তু এখন যেটা হচ্ছে সেটি অনলাইন জুয়া, যা অনলাইনভিত্তিক অপরাধ। এটা নিয়ন্ত্রণে দেশে আলাদা কোনো আইন নেই। যে আইনটা ধরে আমরা কাজ করেছি, সেটি হলো সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট। সেটিতে বলা হয়েছে, অবৈধ ই-মানি ট্রানজেকশন। এই ধারা আগে ছিল কগনিজেবল। এখন সেটি ননকগনিজেবল করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রমাণের আগে পুলিশ কাউকে ধরতে না পারায় বিষয়টি এখন আমাদের জন্য অনেক কঠিন।
আইন সংশোধন বা অনলাইন জুয়া নিয়ন্ত্রণে আলাদা আইন করার বিষয়ে পুলিশের প্রস্তাব রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চাচ্ছি এটা দ্রুত সংশোধন করা হোক। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে প্রস্তাবনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। যতটুকু জানি, এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে যায়নি। আমরা চাই এটার দ্রুত বাস্তবায়ন, যেন আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারি।
বাংলাদেশে কী পরিমাণ মানুষ অনলাইন জুয়ায় আসক্ত বা জুয়া খেলছে, এর মাধ্যমে কী পরিমাণ টাকা পাচার হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কতজন লোক জুয়া খেলছে, তারা কারা। যারা জুয়া অর্গানাইজ করছে তারাই বা কারা। বাংলাদেশে এর ওপরে কোনো রিসার্চ নেই, ডাটা নেই। এ জন্যই চাচ্ছি একটা ডাটা সেন্টার হোক।