আসামিদের পক্ষে শুনানি করতে দেয়া হয়নি
আনিসুল হক-সালমান এফ রহমান ১০ দিনের রিমান্ডে
প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কাগজ প্রতিবেদক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে হত্যার ঘটনায় নিউমার্কেট থানার মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদের আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে আনা হয় দুই আসামিকে। পথে তাদের উদ্দেশে ডিম ছুড়তে দেখা যায় অনেককে। তারা আদালত চত্বরে পৌঁছানোর পরপরই বিএনপি ও জামায়াতপন্থি আইনজীবী এবং বিক্ষুব্ধ হাজার হাজার মানুষ নানা স্লোগান ও গালি দিতে থাকেন। সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে তাদের আদালত চত্বরে আনা হয়। এরপর আদালতের গারদখানায় রাখা হয়। সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটের দিকে দুই আসামিকে ওঠানো হয় আদালতের এজলাসে। তখন ‘খুনিদের ফাঁসি চাই’ স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে পরিবেশ। আইন অমান্য করেই সবাই এজলাসের ভেতর ভিডিও
করতে থাকেন। এ সময় বিচারক সবাইকে শান্ত হতে বললেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
আসামি পক্ষে ওকালতনামা জমা দিয়ে শুনানি করতে গেলে তোপের মুখে পড়েন কয়েকজন আইনজীবী। এদের মধ্যে আইনজীবী বদিউল আলম, বেলাল হোসেন, এ কে ফজলুল হকের নাম জানা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেশ কয়েকজন আইনজীবী আসামিপক্ষের ওকালতনামা দিতে গেলে বিএনপি-জামায়াতপন্থি আইনজীবীরা তাদের আদালত থেকে বের করে দেন। এরপর মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার সাব-ইন্সপেক্টর মো. সজিব মিয়া আসামিদের প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত ১০ দিনের রিমান্ডই মঞ্জুর করেন।
এরপর প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে কড়া নিরাপত্তায় গারদখানায় নেয়ার সময় অনেকে আসামিদের ওপর চড়াও হন। অনেকে ডিম ছুড়ে মারেন। পরবর্তীতে আসামিরা চলে গেলে আদালত প্রাঙ্গণে ঝাড়ু মিছিলও করতে দেখা যায়।
এর আগে গত মঙ্গলবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সদরঘাট থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেন। ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিউমার্কেট থানার একটি মামলায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে দুজন নিহত হন। তাদের একজন ছাত্র ও অন্যজন দোকান কর্মচারী। এর মধ্যে দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে হত্যার অভিযোগে তার মা আয়শা বেগম (৪৫) একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়। সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে ওই মামলাতেই গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তারা ডিবি হেফাজতে ছিলেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ পান ঢাকা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও শিল্পপতি সালমান ফজলুর রহমান ওরফে সালমান এফ রহমান। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পরও তাকে একই পদে বহাল রাখা হয়।
অন্যদিকে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা) আসন থেকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আনিসুল হক। ওই মেয়াদেই তাকে আইনমন্ত্রী করে সরকার। এরপর থেকে তিনি আইনমন্ত্রীর পদে ছিলেন।