বিদ্যুৎ-পানি বন্ধ
রাতভর সংসদ ও আবাসিক ভবনে লুটপাট
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কাগজ প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের ঘটনার পরে পরেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী ও একদল লুটেরা জাতীয় সংসদ ভবন ঢুকে ব্যাপক লুটপাট চালায়। গত সোমবার বেলা সোয়া ৩টার দিকে সংসদ ভবনে ঢুকে পড়ে হাজারো মানুষ। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংসদ ভবন গেট থেকে সরে পড়ে। লুটেরারা সোমবার রাতভর লুটপাট চালায় এবং ভ্যানে করে, মাথায় করে লুটের জিনিসপত্র নিয়ে যায়। তারা স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, সংসদ সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাসায়ও লুটপাট চালায়, তাদের গ্যারেজে থাকা প্রায় ২০-২৫টি গাড়িতে আগুন দেয়।
গতকাল মঙ্গলবার সকালেও একদল উন্মত্ত জনতা সংসদ ভবনে ঢুকে পড়ে এবং প্রতিটি রুমের তালা ভেঙে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, টিভিসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে চলে যায়। সংসদ সচিবালয়ে কর্মরত মো. শোয়াইব জানান, সোমবার বিকাল থেকে রাতভর একদল লুটেরা সংসদ ভবনের প্রায় সব কক্ষেই লুটপাট চালায়। তারা অনেকেই আবার সকালে তালা ভাঙার জিনিসপত্রসহ চলে আসে এবং কক্ষের তালা ভেঙে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, টিভি, ফ্রিজসহ মূল্যবান কাগজপত্র লুটপাট করে এবং কক্ষের সব জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। এ সময় তারা সংসদ ভবনের বিদ্যুৎ ও পানির লাইন বন্ধ করে দেয়।।
তিনি বলেন, বেলা ১১টার দিকে সংসদ ভবনে সেনাবাহিনী চলে আসে, সঙ্গে সংসদ সচিবালয়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তাদের সঙ্গে সংসদ ভবনের নিরাপত্তা বিধানে কাজ করে। তারা সচিবালয়ের কর্মচারী-কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি। তাদের সহয়োগিতায় এগিয়ে আসে একদল ছাত্র, যারা লুটের মালপত্র ফেরত দেয়ার অনুরোধ জানায় এবং কিছু জিনিসপত্র লুটেরাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে সংসদের একটি কক্ষে রেখে দেয়। তবে সংসদ ভবনে স্পিকারের রুম থেকে ডেপুটি স্পিকারসহ প্রায় সব কর্মকর্তার রুমে ব্যাপক লুটপাট ভাঙচুর হয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংসদ সচিবালয়ের একজন যুগ্ম সচিব জানান, সোমবার বিকালে হঠাৎ হাজারো আন্দোলনকারী সংসদ ভবনে প্রবেশ করে শুধু সংসদ সচিবালয়ের নয়, সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসনে লুটপাট চালায়। তারা রাতভর লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেখা পাওয়া যায়নি। লুটেরা-সন্ত্রাসীরা গাড়িতে আগুন দেয়, বাসা থেকে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফ্যান, এসি, টিভি এসব খুলে নিয়ে যায়। পুরো সংসদ ভবন এলাকার বিদ্যুৎ ও পানির লাইন বন্ধ করে দেয়। এর ফলে সংসদের কর্মচারীরা সবাই সংসদ এলাকা ছেড়ে বাইরে চলে যেতে বাধ্য হন। অনেকেই বন্ধু বা আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।