×

প্রথম পাতা

জনদুর্ভোগের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি

Icon

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জনদুর্ভোগের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি

ঝর্ণা মনি : কোটাবিরোধীদের আর ছাড় দেবে না সরকার। আদালতের রায়ের পরও জনদুর্ভোগ সৃষ্টির এই আন্দোলন নিয়ে আর কোনো সহনশীলতা দেখাতে রাজি নয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এদিকে কোটাবিরোধীরাও দিনে দিনে সরকারবিরোধী রাজনীতির দিকে আরো বেশি হেলে পড়ছে। আন্দোলনে প্রকাশ্য হয়েছে বিএনপি-জামায়াতসহ উগ্রবাম সংগঠনের মদত। সরকারদলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর চীনযাত্রার প্রাক্কালে তার নির্দেশনার কারণে এতদিন সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংযত ছিল। কিন্তু আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায় স্থগিতের পর পরিস্থিতি পাল্টেছে। পুলিশও আর আগের মতো নীরব ভূমিকা পালন করবে না।

ইতোমধ্যেই কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের যানবাহন ভাঙচুর, পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা এবং মারধরের ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে। সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি, পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ধাক্কাধাক্কি করা, কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের মারধর করে জখম করাসহ আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। সংশ্লিষ্টতের মতে, আজ রবিবার থেকে অ্যাকশনে যাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আন্দোলনের নামে কোনো ধরনের জনভোগান্তি সহ্য করা হবে না। এছাড়া আদালতের রায়ে পর আন্দোলনের নামে এই জনভোগান্তি সরাসরি আদালত অবমাননা। এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ বলেন, কেউ যদি আদালতের আদেশ না মানে, পুলিশের কথা না মানে, আন্দোলনের নামে জানমালের ক্ষতি করে, সড়ক অবরোধ করে- তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে যৌক্তিক কাজ সেটাই করা হবে। আমাদের করার কি আছে? আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে ক্ষমতা আমরা সেটাই করব। কয়েকদিন ধরে শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাসে না গিয়ে বিভিন্ন সড়কে বসে সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘœ ঘটাচ্ছে। অনেক জায়গায় গাড়িতে তারা হাত দিচ্ছে এবং একটি মামলাও হয়েছে।

আন্দোলনের নেপথ্যে রাজনীতি : কোটাব্যবস্থা শুধু বাংলাদেশে নয়; বিশ্বের অনেক দেশেই প্রচলন রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে কোটার বিরোধিতাকারীরা আপিল বিভাগের রায়ের পরও আন্দোলন করছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুরু থেকেই কোটা আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত যুক্ত ছিল এবং তারা এই আন্দোলনটাকে একটা পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। এখন কোটা আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরিভাবে যুক্ত হতে যাচ্ছে তারা। কোটা আন্দোলনকারীরা যেন কঠোর কর্মসূচি দেয় সেজন্য বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ছাত্রদল এবং জামায়াত নিয়ন্ত্রিত ছাত্রশিবিরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি-জামায়াত এবং নির্বাচন বর্জনকারী সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো একযোগে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচির পরিকল্পনা নিয়েছে। তাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে যুক্ত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তরুণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুঁজি করে বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি অপরাজনীতি এবং ষড়যন্ত্র করছে- এমন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, যে কোনো আন্দোলন হলেই বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা সেটাকে হাতিয়ার করে ক্ষমতায় যাওয়ার দুঃস্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়ে। এখন তারা কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আন্দোলনের কাছে জিম্মি হয়ে পড়লে তরুণ শিক্ষার্থীদের ওপর জনগণ আস্থাহীন হয়ে পড়বে।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, কোটা পরিবর্তনের

আন্দোলন নয়, তাদের অন্য কোনো দুরভিসন্ধি রয়েছে কিনা সেটাই এখন প্রশ্ন। আন্দোলনকারীদের দাবির সঙ্গে সরকারের ইচ্ছে সঙ্গতিপূর্ণ, তবে কিছু মানুষ এটিকে ভিন্ন পথে নিচ্ছে। যে কোনো আন্দোলনে দেশবিরোধী একটি অপশক্তি প্রবেশ করে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করে, এটি উদ্বেগের বলে মন্তব্য করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী।

কমিশন গঠনের কোনো সুযোগ নেই : কোটাব্যবস্থার সংস্কার চায় সরকারও। তবে এটি অবশ্যই নিয়মতান্ত্রিক এবং বাস্তবসম্মত হবে। এক্ষেত্রে কমিশন গঠনের কোনো সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেছেন সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা। সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের দাবি ও অনেক বক্তব্য আমাদের সংবিধানের, সাংবিধানিক রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বিরোধী। সাংবিধানিক রাষ্ট্র পরিচালনা সরকারি আলোকেই হবে। সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে যারা আন্দোলন করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

এদিকে আপিল বিভাগের রায়ের পর কোটা নিয়ে সরকারের কমিশন গঠনের কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি বলেন, এবার তারা জাতীয় সংসদে কোটা সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়েছেন। আদালতের বিষয় নির্বাহী বিভাগের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব নয়; জেনেবুঝেও নির্বাহী বিভাগের মাধ্যমে কোটা সমস্যা সমাধানের দাবি করছেন আন্দোলনকারীরা। কোটা সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণেই একেক সময় একেক দাবি করছেন আন্দোলনকারীরা। সরকারের পক্ষ থেকে কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে সরকারের অবস্থান জানানো হয়েছে উল্লেখ করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আদালতে প্রক্রিয়া শেষ হলে এটির একটি সুন্দর সমাধান হবে। শিক্ষার্থীদের দাবির পক্ষেই সরকারপক্ষ আইনি লড়াই করছে। তবে এখন যে আন্দোলনের নামে রাস্তা অবরোধ সেটা অযৌক্তিক। সামনে জনদুর্ভোগ হলে সরকার আইন অনুযায়ী কাজ করবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

টাকার বিছানায় ঘুমান দুর্নীতির প্রাণপুরুষ সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল

টাকার বিছানায় ঘুমান দুর্নীতির প্রাণপুরুষ সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল

এস আলমের গৃহকর্মী মর্জিনাও কোটিপতি

এস আলমের গৃহকর্মী মর্জিনাও কোটিপতি

কোহলির ছক্কায় ভাঙল চিদাম্বরম স্টেডিয়ামের দেয়াল

কোহলির ছক্কায় ভাঙল চিদাম্বরম স্টেডিয়ামের দেয়াল

আয়নাঘর সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদ, প্রয়োজনে যে কাউকে তলব, প্রজ্ঞাপন জারি

আয়নাঘর সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদ, প্রয়োজনে যে কাউকে তলব, প্রজ্ঞাপন জারি

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App