নদ-নদী ফুঁসছে
সিলেট অঞ্চলে ফের বন্যার শঙ্কা
প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সিলেট অফিস ও সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : আবহাওয়ার পূর্বাভাসকে সত্যি করে সিলেট ও সুনামগঞ্জে গত রবিবার মধ্য রাত থেকে টানা বৃষ্টি হয়। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। ফলে বেড়েছে সিলেটের সব নদনদীর পানি। এতে জেলা দুটিতে তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিস গতকাল সোমবার দুপুরে জানিয়েছে, রবিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ১২টা পর্যন্ত ৩০ ঘণ্টায় সিলেটে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। আজ মঙ্গলবারসহ আগামী কয়েকদিন সিলেটে আরও বৃষ্টি হবে বলে পূর্বাভাসও দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এছাড়া ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে বলে জানা গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয়ের তথ্যমতে, সোমবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিদৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এসময় পানি ছিলো বিদৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপরে। কিন্তু রবিবার পর্যন্ত এ পয়েন্টে পানি বিদৎসীমার নিচে ছিল। এছাড়া কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি রয়েছে বিদৎসীমার ৮১ সেন্টিমিটার উপরে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সিলেট ও ভারতে বৃষ্টিপাত হয়। ভারতের পাহাড়ি ঢলও আসছে। তাই গত রবিবার সকাল থেকে জেলার সব নদনদীর পানি বাড়তে শুরু করে। সোমবার পানি আরো বেড়েছে। এতে সিলেটে আবারো বন্যা হতে পারে। দুর্ভোগে পড়তে পারেন লাখ লাখ মানুষ।
এদিকে গত রবিবার রাত থেকে টানা বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, ধর্মপাশা, মধ্যনগর, জামালগঞ্জ, ছাতক, দোয়ারাবাজার ও দিরাই উপজেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে করে এসব উপজেলার গ্রামীণ রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে নি¤œাঞ্চলের এসব উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে ফের চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
জেলার প্রধান নদী সুরমার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সঙ্গে জেলার বিভিন্ন উপজেলার নদীগুলোর পানি বেড়ে হাওরের পানিও ফুলে ফেঁপে উঠেছে। এদিকে জেলার পর্যটন উপজেলা তাহিরপুরের সঙ্গে জেলা সদর সুনামগঞ্জের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গত দুদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ বিশ্ব সড়কের শক্তিয়ারখলা ১০০ মিটার ব্রিজ থেকে দুর্গাপুর ও মোকামবাড়ি ৫ কিলোমিটার সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে করে চার উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জেলার বিভিন্ন উপজেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে জানিয়ে বলেন, গতকাল সোমবার সুনামগঞ্জের প্রধান নদী সুরমার পানি বিপৎসীমার ৭ দশমিক ৮৩ সে.মি. ছাতকে ৮.৯১ সে.মি. এবং তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত নদী যাদুকাটার পানি ৯ দশমিক ০১ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।