×

প্রথম পাতা

কোয়াত্রার সফরে ঢাকার আলোচনায় সীমান্ত হত্যা

Icon

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কোয়াত্রার সফরে ঢাকার আলোচনায় সীমান্ত হত্যা
কাগজ প্রতিবেদক : দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা। বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর এটি দিল্লির কোনো প্রতিনিধির প্রথম ঢাকা সফর। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। এর আগে গত ২০ এপ্রিল ঢাকায় আসার কথা ছিল তার। তবে হঠাৎ কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত করে নয়াদিল্লি। জানা গেছে, এক দিনের ঢাকা সফরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন কোয়াত্রা। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরসহ দুই দেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন কোয়াত্রা। আশা করা হচ্ছে, সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেবেন তিনি। জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের আমন্ত্রণপত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে পৌঁছে দিতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা সফর করেছিলেন। ওই সময়ও তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কোয়াত্রার সফরে সীমান্ত হত্যার প্রসঙ্গটি তোলা হবে। তিনি বলেন, ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে নানা বিষয় আছে। স্বাভাবিকভাবে নানা বিষয় আলোচনা হবে। তিনি আসার পর আমরা বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে রণচণ্ডী বিজিবি ক্যাম্পের আওতাধীন সীমান্তের ৪৪৭ পিলার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, আমরা অবশ্যই সীমান্ত হত্যার বিপক্ষে। গতকাল (মঙ্গলবার) যে ঘটনা ঘটেছে সেটি দুঃখজনক। দুই দেশে এটি যাতে না হয় সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি এবং সীমান্তে যারা প্রহরী, দুই পক্ষে যারা আছেন তারা যেন কোনো ক্ষেত্রে এমন বলপ্রয়োগ না করে। প্রাণহানি ঘটে সেটির জন্য আমরা রেগুলার কনসালটেশনের মধ্যে আছি। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আসলে আমরা এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও রাষ্ট্রদূত শমসের মবিন চৌধুরী বিশ্বাস করেন, অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিকভাবে সংযোগ শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়া পিছিয়ে আছে। ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি এবং এটি কীভাবে বাংলাদেশ এবং এর বাইরে প্রযোজ্য তা নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন বলে মত দেন তিনি। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে ভারত বাংলাদেশকে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হতে সাহায্য করার পর কানেক্টিভিটি প্রথম আলোচ্য বিষয় হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি। তবু দেরিতে, সড়ক, রেল, বিমানের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সংযোগ দ্রুতগতিতে বেড়েছে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে বলে তিনি আশাবাদী। তিনি বলেন, উত্তর ইউরোপের কোপেনহেগেন থেকে কেউ যদি দক্ষিণ জার্মানি বা এমনকি গ্রীসে যেতে পারে, তবে আমি কেন বাংলাদেশ থেকে বা ভারত থেকে থাইল্যান্ড যেতে পারব না? এই যোগাযোগ না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিকে বাধা হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, থাইল্যান্ডের কর্মকর্তারা মিয়ানমারকে থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ‘পাহাড়’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। সেখানকার পরিস্থিতি রাতারাতি বদলাবে না বলে স্বীকার করে তিনি বলেছেন, সামুদ্রিক যোগাযোগ সেই ব্যবধান পূরণে সাহায্য করতে পারে। ‘চট্টগ্রাম, ঢাকা বা কলকাতা থেকে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া’র মধ্যে নির্বিঘেœ যাতায়াত হলে পর্যটন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে এবং ভারতের লুক/অ্যাক্ট ইস্ট নীতির সঙ্গে সহজেই মানিয়ে যাবে। তিনি ইন্দো-প্যাসিফিকের দিকে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেয়া উচিত জানিয়ে যুক্তি দিয়ে বলেন, আমি আমার জীবদ্দশায় এমন একটি দিনের অপেক্ষায় আছি যেদিন আমি আগরতলায় সকালের নাশতা, ঢাকায় ইলিশের খাবার এবং একই দিনে কলকাতায় দেরিতে রাতের খাবার খেতে পারব। কিন্তু এই মুহূর্তে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের জনসাধারণের ধারণা হলো, ভারত যা প্রতিশ্রæতি দেয় তা পূরণ করে না। অন্যদিকে চীন যদি আজ কিছু প্রতিশ্রæতি দেয়, কাল তা পূরণ করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App