গত এপ্রিলে বলি সুপারস্টার সালমান খানের বাড়িতে গুলি চালিয়েছিল দুষ্কৃতরা। সেই ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। এই ধৃতদের মধ্যেই ভিকি কুমার গুপ্তা নামে এক অপরাধী গত সোমবার এই মামলায় জামিনের আবেদন করেন। পুলিশ আগেই সালমানের বাড়িতে গুলি চালানোর ঘটনায় জেলবন্দি গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইর যোগ পেয়েছিল। তবে এবার অভিযুক্ত ভিকি কুমার গুপ্তা অন্যরকমই দাবি করলেন।

ভিকি কুমার গুপ্তার দাবি, এই মামলায় লরেন্স বিষ্ণোইর কোনো যোগ নেই। লরেন্স বিষ্ণোইর নাম অকারণে টেনে আনা হচ্ছে। ভিকি কুমারের কথায়, ২৬ বছর আগে দুটি কৃষ্ণসার হরিণ মারার অভিযোগে সালমান খানকে ভয় দেখানোই ছিল এই গুলি চালনার মূল উদ্দেশ্য। এদিকে গত মাসে দিল্লির এক আদালতে এই মামলার চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। সেই চার্জশিটে লরেন্স বিষ্ণোই, তার ভাই আনমোল বিষ্ণোই এবং এই চক্রের মূল সদস্য রোহিত গোধারাকে গুলি চালানোর ঘটনায় ‘ওয়ান্টেড’ অপরাধী হিসেবে দেখানো হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ১৪ এপ্রিল সকালে বান্দ্রার অভিজাত গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় ভিকি কুমার গুপ্তা ও সাগর পাল নামে দুই মোটরবাইক আরোহী। পরে গুজরাট থেকে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যা লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের কাজ বলে জানিয়েছে পুলিশ। এরপর ৫ আগস্ট সোমবার ভিকি কুমার গুপ্তা ও তার আইনজীবী অমিত মিশ্র, সুনীল মিশ্র এবং পঙ্কজ ঘিলদিয়ালের মাধ্যমে মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অব অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যাক্টের অধীনে গঠিত বিশেষ আদালতে জামিনের আবেদন করেন। বিশেষ বিচারক বিডি শেল্কে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের জবাব চান এবং ১৩ আগস্ট পরবর্তী শুনানির জন্য বিষয়টি মুলতবি করা হয়েছে।

এদিকে জামিনের আবেদনে বলা হয়েছে, আবেদনকারী আসলে বৈদ্যুতিন, প্রিন্ট, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের চরিত্র দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। এছাড়া ভিকি বিষ্ণোইর নীতিগুলোর প্রতি আকর্ষিত হয়েছিলেন বলেও জানানো হয়। জেলে থাকা গ্যাংস্টার যিনি ‘ভগৎ সিংয়ের একনিষ্ঠ অনুগামী’ বলেও জামিনের আবেদনে দাবি করা হয়েছে। ধৃত ভিকি কুমার গুপ্তা বলেন, তিনি গরিব পরিবার থেকে এসেছেন, তার বাড়ি বিহারের একটা প্রত্যন্ত গ্রামে। এছাড়া তিনি ঋণগ্রস্ত ছিলেন। আর সেটাই তাকে অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হতে বাধ্য করেছিল।

পিটিশনে আরো বলা হয়েছে, ১৯৯৮ সালে রাজস্থানে বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের পূজিত দুটি কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার বিষয়ে সালমান খানকে ভয় দেখানোই ছিল উদ্দেশ্য। কারণ অভিনেতা এখনো নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাননি। রাজস্থানের এক কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলায় মিস্টার খানকে দোষী সাব্যস্তও করেছিল। তবে পরে হাইকোর্ট তাকে মুক্তি দেয়। অভিযুক্তের দাবি, গুলি চালানোর ঘটনায় লরেন্স বিষ্ণোইর কোনো ভূমিকা নেই। তিনি লরেন্স বিষ্ণোইর কাছ থেকে কোনো ফোন পাননি বা কোনো দালাল তাকে গ্যাংস্টারের সঙ্গে কথা বলার জন্য প্ররোচিতও করেননি।