জীবনযুদ্ধে জয়ী হতে চান আত্রাইয়ের প্রতিবন্ধী লিটন
প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আব্দুল মজিদ মল্লিক, (নওগাঁ) থেকে : বর্ষা মৌসুমে প্রতি রাতে মাছ শিকার আর সকালে মুখে মাছের পাতিল নিয়ে বাজারে বিক্রি করেন। মাছ বিক্রির অর্থ দিয়ে দুই সন্তান নিয়ে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিবন্ধী মো. লিটন (৩৫)। জীবনযুদ্ধে হার মানেননি তিনি। প্রতিদিন সংগ্রাম করে চলেছেন। লিটন উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের উঁচলীকাশিমপুর গ্রামের আমজাদ মণ্ডলের ছেলে।
দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয় প্রতিবন্ধী লিটন। এভাবেই পিতার সংসারে বেড়ে ওঠার পর বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী চাপড়া গ্রামের এক নারীকে। তাদের দাম্পত্য জীবনে জন্ম নেয় ২ ছেলে। বড় ছেলে নাবিউল (১০) একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। সে মাদ্রাসায়ই থাকে। ছোট ছেলে নূরনবী (৩) বাবার সঙ্গেই থাকে। তিনি কেবল দুই হাতের উপর ভর দিয়ে চলাফেরা করেন। প্রায় দুই বছর হলো দুই ছেলেকে রেখে স্ত্রী তাকে ডিভোর্স দিয়ে চলে গেছেন। এতে সন্তানদের নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন।
এদিকে বাবার সংসার থেকে আলাদা হওয়ায় সন্তানদের প্রতিপালন তাকেই করতে হচ্ছে। জীবন সংগ্রামে পরাজিত হয়ে কারো কাছে হাত পাতা নয় বরং নিজের রোজগার দিয়ে জীবিকা নির্বাহে আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠেন লিটন। তাই এই বর্ষা মৌসুমে ছোট একটি নৌকা ও একটি জাল কিনে মাছ ধরা শুরু করেন। সারা রাত মাছ ধরে সেই মাছ পাতিলে নিয়ে ওই পাতিল মুখে নিয়ে ছোটডাঙ্গা বাজারে বেচতে আসেন। যে দৃশ্যটি স¤প্রতি ক্যামেরাবন্দি করেন এই প্রতিবেদক। মাছ বিক্রির করে যে টাকা পায় তা দিয়ে কোনোমতে দুই সন্তান নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। এছাড়া অন্য মৌসুমে বাড়িতে হাঁস-মুরগি পালন করে সংসার চালান তিনি। নিজে সংগ্রাম করে চলতে চান লিটন।
উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে সামান্য প্রতিবন্ধী ভাতা পায় লিটন। তাও আবার অনেক সময় হ্যাকারদের চক্রে পড়ে সেই টাকাটাও খোয়া যায়। শাহাগোলা ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মামুন বলেন, প্রতিবন্ধী লিটন খুবই মানবেতর জীবনযাপন করেন। আমরা পরিষদের পক্ষ থেকে যে কোনো সুযোগ-সুবিধা আসলে তাকে দেয়ার চেষ্টা করি। উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সোহেল রানা বলেন, লিটনের চলাচলের জন্য অতি দ্রুত একটি ট্রাইসাইকেলের ব্যবস্থা করা হবে এবং প্রতিবন্ধীসংক্রান্ত সব সুযোগ-সুবিধা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাকে দেয়া হবে।