বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি
৮৭ কর্মচারীর চাকরি স্থায়ী করার আল্টিমেটাম
প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মোস্তাফিজুর রহমান বকুল, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) থেকে : দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডে (বিসিএমসিএল) কর্মরত ৮৭ জন আউটসোর্স কর্মচারী হাইকোর্টের রায়ের আলোকে চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে আল্টিমেটাম দিয়েছে। আগামী ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চাকরি স্থায়ী করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া না হলে বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন, কর্মবিরতিসহ কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে বলে খনি কর্তৃপক্ষকে গত ২৫ আগস্ট লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছেন আউটসোর্সিং কর্মচারীর পক্ষে হাইকোর্টে রিটকারী সোহেল রানা।
খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছে জমা দেয়া লিখিত আল্টিমেটামে বলা হয়েছে, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে প্রায় ২০ বছর ধরে ৮৭ জন আউটসোর্সিং কর্মচারী রয়েছেন। ২০০৯ সালের ১৫ মে খনি কর্তৃপক্ষ ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর মধ্যে সম্পাদিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী এসব কর্মচারীর স্থায়ী নিয়োগ দেয়ার কথা। কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষ নানা টালবাহানা করে তাদের স্থায়ী নিয়োগ আটকে রেখেছে। চাকরি স্থায়ী না হওয়ায় প্রফিডেন্ট ফান্ড, পেনশন, ইনক্রিমেন্ট, প্রফিট বোনাস ও ডাস্ট এলাউন্সসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত তারা। দীর্ঘদিন কর্মরত থেকে দক্ষতা অর্জন করার পরও পদোন্নতির কোনো সুযোগ নেই। অনেক ক্ষেত্রে গ্রেড পরিবর্তনের মাধ্যমে ডিমোশন করা হয়েছে। কর্মচারী পদে বহু স্থায়ী পদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন আউটসোর্স হিসেবে রেখে আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানকে বিপুল পরিমাণ অর্থ কমিশন দেয়া হচ্ছে। চাকরির কোনো স্থায়িত্ব না থাকায় যে কোনো সময়ে বিনা কারণে চাকরিচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্থনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক দুরবস্থার মধ্যে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে চাকরি স্থায়ী করার লক্ষ্যে ৮৭ জন আউটসোর্সিং কর্মচারীর পক্ষে সোহেল রানা হাইকোর্টে রিট পিটিশন (নম্বর-১২৮৮/২০১৮) দায়ের করেন। ২০১৮ সালে হাইকোর্ট উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে এবং কাগজপত্র পর্যালোচনা করে রায় দেন যে, খনিতে কর্মরত আউটসোর্স কর্মচারীদের বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করে ২০০৯ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির অধীনে সেই সময়ে বিদ্যমান বিসিএমসিএলের সাংগঠনিক কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) অনুযায়ী কর্মচারী পদে স্থায়ী নিয়োগে অগ্রাধিকারপূর্বক নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ৩ (তিন) মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেন। হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে বিসিএমসিএল আপিল বিভাগে করে।
পরবর্তীতে বিসিএমসিএল সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দায়ের করে। আপিল বিভাগ পূর্বের আদেশ বহাল রেখে রিভিউ পিটিশন ডিসমিস করে দেয়। এরপরও খনি কর্তৃপক্ষ স্থায়ী নিয়োগদানের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চাকরি স্থায়ী করার বিষয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নিলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বিঘিœত হলে তার দায়ভার খনি কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে লিখিত আল্টিমেটামে বলা হয়েছে।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির এমডি সাইফুল ইসলাম আউটসোর্স কর্মচারীদের দাবিনামা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।