বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
১৬ দিন পর মর্গে পাওয়া যুবকের লাশ দাফন
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে গত ৪ আগস্ট নিখোঁজ হন ময়মনসিংহের গফরগাঁও চরআলগী ইউনিয়নের চর কামারিয়া গ্রামের কামরুজ্জামান। এ ঘটনার ১৬ দিন পর গত সোমবার রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তার গুলিবিদ্ধ মরদেহের সন্ধান পেয়েছেন স্বজনরা। গত মঙ্গলবার সকালে গফরগাঁও উপজেলার চর কামারিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
কামরুজ্জামান চর কামারিয়া গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী মো. আব্দুর রাজ্জাকের দ্বিতীয় ছেলে। কামরুজ্জামানের শিশু বয়সি দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে।
কামরুজ্জামানের স্ত্রী শামীরা জাহান পপি বলেন, আমার স্বামী ঢাকার উত্তরায় থেকে ভাড়ায় প্রাইভেটকার চালাতেন। তবে কিছুদিন আগে তিনি পোল্যান্ড যাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। এরই মধ্যে দেশে আন্দোলন শুরু হলে গত ৪ আগস্ট তিনি উত্তরায় ছাত্রদের সঙ্গে মিছিলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিখোঁজ হন। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আমরা তার সন্ধান পাইনি। গত সোমবার আমরা জানতে পারি, তার লাশ রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছে বলে জানতে পারি। এর আগে গত ৪ আগস্ট থেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পর থেকে হাসপাতাল মর্গে অজ্ঞাত হিসেবে তার মৃতদেহ পড়ে ছিল। স্থানীয়রা জানান, প্রাইভেটকার চালিয়ে সংসার চালাতেন কামরুজ্জামান (৩০)। বাবা থাকেন সৌদিতে, বড় ভাই থাকেন বেলজিয়ামে। এ কারণে তিনিও ঢাকার উত্তরায় বসবাস করে ড্রাইভিং করার পাশাপাশি পোল্যান্ড যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
কামরুজ্জামানের শ্যালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মর্গে পড়ে থাকা মরদেহের আঙুলের ছাপ মিলিয়ে পরিচয় শনাক্তের পর পুলিশ আমাদের খবর পাঠায়। পরে মর্গে গিয়ে শনাক্ত করে বাড়ি নিয়ে এসেছি। এ মরদেহের মাথা ও শরীরে ৮টি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।
জাহাঙ্গীর আরো বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্ত করে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে কামরুজ্জামান কোনো দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না।
এই বিষয়ে চর কামারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিক বলেন, ঢাকা থেকে পুলিশের এক কর্মকর্তা আমার কাছে ফোন করে কামরুজ্জামানের ছবি পাঠায়। ওই ছবি দেখে চিনতে পেরে আমি কামরুজ্জামানের পরিবারকে জানালে তারা মৃতদেহ শনাক্ত করে বাড়িতে এনে দাফন করেছে। ঘটনাটি অনেক মর্মান্তিক।