নালিতাবাড়ী পৌরসভা ভাঙচুর
সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে বাসিন্দারা
প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
খোরশেদ আলম, শেরপুর থেকে : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১১ দিনেও বন্ধ রয়েছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌরসভার নাগরিক সেবা কার্যক্রম। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে পৌরসভার বাসিন্দারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর নালিতাবাড়ী পৌরসভা কার্যালয়ে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে তিন তলা বিশিষ্ট পৌরসভা কার্যালয়ের ১২টি শাখার প্রায় সব মালামাল লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া পৌরসভার ময়লা আবর্জনা পরিবহনে ব্যবহৃত তিনটি ড্রাম ট্রাকও পুড়িয়ে দেয়া হয়। এতে পৌরসভার প্রায় ৫ কোটি ২৩ লাখ ৯২ হাজার ৯০০ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে আছেন পৌর মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি নিজের বাড়িতেও নেই বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া ৫ আগস্ট বিকালে মেয়রসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার অফিস ও বাসাবাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে দুর্বৃত্তরা।
গতকাল বৃহস্পতিব পৌর কার্যালয় চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, পুড়ে যাওয়া তিনটি ড্রাম ট্রাক পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া পৌরভবনের নিচ তলায় কয়েকজন কর্মকর্তা বসে গল্প করছেন। পাশেই একজন পাহারাদার বসে আছেন। এরই মধ্যে লুট হওয়া একটি কম্পিউটার টেবিল নিয়ে আসেন এক ভ্যানচালক। কার্যালয়ের প্রতিটি শাখার কক্ষে ভাঙা কাচের টুকরো ও ছাইয়ের স্তূপ দেখা যায়। কোন কোন কক্ষে কাগজপত্র ছড়িয়ে আছে এবং ভাঙা চেয়ার টেবিল পড়ে আছে। একটি কক্ষে বসে কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী পুনরায় কার্যক্রম চালু করতে মালামালের তালিকা করছেন এবং পাশেই আরেকটি টেবিলে কয়েকজন কাউন্সিলর গল্প করে অলস সময় পার করছেন।
এ সময় সহকারী কর আদায়কারী জমির উদ্দীন বলেন, পৌরসভার ১২টি শাখার কোন কক্ষেই আসবাবপত্র ও যন্ত্রাংশ অক্ষত নেই। অধিকাংশ মালামাল লুট হয়ে গেছে। অবশিষ্ট সব কিছুই আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। তাই আমরা নাগরিক সেবা দিতে পারছি না।
জানতে চাইলে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হজ বলেন, আমরা ডিসি স্যারের কাছে গিয়েছিলাম। স্যার বলেছেন পুলিশ এসে কার্যালয় পরিদর্শনের পর যেন আমরা ভবন পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু করি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা বলেন, আমি পৌরসভা পরিদর্শন করেছি। পৌরসভা থেকে লুট হওয়া মালামাল ফিরিয়ে দিতে মাইকিং করা হয়েছে। অনেকেই ফিরিয়েও দিচ্ছেন। তবে নাগরিক সেবা সচল রাখতে যা যা প্রয়োজন তা কিনে কার্যক্রম শুরু করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন খাত থেকে তা সমন্বয় করা হবে।