মেঘনার নিউ আল-শেফা হাসপাতাল
ভুল চিকিৎসায় নারীর পেটে ছড়িয়ে পড়ল ইনফেকশন
প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মেঘনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি : মেঘনা উপজেলার মানিকারচর বাজারে নিউ আল-শেফা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজার অপারেশনের পর পেটে গজ রেখেই সেলাই করে দেয়া হয় এক নারীর। এরপর কয়েকবার অসুস্থ হয়ে পড়লেও ভুল চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে নারায়ণগঞ্জের একটি হাসপাতালে অপারেশন করলে সেখানকার চিকিৎসকরা পেটে গজ দেখতে পান। এ কারণে ওই নারীর পেট থেকে পায়খানার রাস্তা পর্যন্ত ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযোগে জানা যায়, ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর এই হাসপাতালে ভুক্তভোগী নারীকে সিজারিয়ান অপারেশন করানো হয়। এর দুদিন পর ভর্তি থাকা অবস্থায় তার পেট ফুলে যায়। স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ লিখে দিয়ে ছাড়পত্র দিয়ে দেন। বাড়িতে চলে যাওয়ার কিছুদিন পর আবার ব্যথা অনুভব করলে তাকে ওই হাসপাতালে আনা হয়। এরপর রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে আগের ফাইলপত্র রেখে দিয়ে আবারও গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ লিখে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর রোগীর প্রায় সময়ই পেটে ব্যথা করত এবং প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে পুঁজ বের হতো, যা দেখে রোগী মনে করতেন সাদা স্রাব। প্রায় ১৯ মাস ব্যথা ও পুঁজ যাওয়া বন্ধ না হলে স্বজনরা ওই হাসপাতালেই একটি আল্ট্রাসনোগ্রাম করান। টিউমারের মতো কিছু একটা দেখা যায় বলে জানান সনোলজিস্ট। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হলে স্বজনরা ঢাকায় না নিয়ে নারায়ণগঞ্জের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে টিউমারের মতো কিছু দেখা পেয়ে অপারেশন করা হয়। এ সময় তার পেটে টিউমার নয়, একটি গজ পাওয়া যায়। এই গজের কারণে পেট থেকে পায়খানার রাস্তা পর্যন্ত ইনফেকশন হয়ে পচে যায় বলে জানান সার্জন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়মা রহমান বলেন, আমাকে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমি চিকিৎসার সব কাগজপত্র এর সঙ্গে সংযুক্ত করে দিতে বলেছি। কাগজপত্র হাতে পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগেও এই হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তখন ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা হলে বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। পরে নামের আগে ‘নিউ’ শব্দ বসিয়ে অনুমোদন নিয়ে পুনরায় চালু করা হয় হাসপাতালটি।