রাউজানের শতবর্ষী কালাচান হাট করাতকলের দখলে
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
এম. রমজান আলী, রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে : রাউজানের চিকদাইর ইউনিয়নের দক্ষিণ সর্তা এলাকার খালের পাড়ে শতবর্ষী বাজারটির নাম কালাচান চৌধুরী হাট। ব্রিটিশ আমলে বাজারটি নিজের জায়গায় প্রতিষ্ঠা করেন তৎকালীন জমিদার কালাচান চৌধুরী। সপ্তাহে দুই দিন রবি ও বুধবার বাজার বসতো। শতাধিক নিত্যপণ্যের দোকান ছিল বাজারে। রাউজান, হাটহাজারী ও ফটিকছড়ি উপজেলার মানুষ কাঁচা পণ্য বেচাকেনা করতেন এ বাজারে। তবে গত একযুগ ধরে বাজারের জায়গায় গড়ে উঠেছে একাধিক অবৈধ করাতকল। সাপ্তাহিক বাজার বসার জায়গা দখল করে রাখা হয়েছে গাছের গুঁড়ি। কাঠ ব্যবসায়ীদের কারণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে প্রসিদ্ধ কালাচান চৌধুরী কাঁচা বাজার।
সরজমিন দেখা গেছে, ছোট পরিসরে বসেছে ঐতিহ্যবাহী গহিরা হাট বা কালচান চৌধুরী হাট। ২০১৩ সালে ক্রেতা-বিক্রেতার সুবিধার্থে রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী সরকারি অর্থায়নে নির্মাণ করে দেন তিনটি বাজার শেড। এর মধ্যে দুটি শেড দখল করে নিয়েছে কাঠ ব্যবসায়ীরা। একটি শেড আসবাব তৈরির কারখানা হিসেবে ব্যবস্থা করছেন এক ব্যবসায়ী। একটি শেডের সামান্য উন্মুখ জায়গায় নানা ধরনের সবজি বিক্রি করতে এসেছেন মাত্র ছয়জন বিক্রেতা। পাশে গাদাগাদি করে মাছ বিক্রি করতে বসেছেন রফিক নামে একজন ব্যবসায়ী। ক্রেতা ছিলেন হাতেগোনা কয়েকজন।
৬৫ বছর বয়সি সবজি বিক্রেতা আনোয়ার পাশা বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে এ বাজারে সবজি বিক্রি করছি। নিজের জমিতে উৎপাদিত শাকসবজিই বিক্রি করি। এক সময় লোকে লোকে লোকারণ্য থাকত এই বাজার। এখন মানুষ আসে না এ হাটে। আমি এখনো পুরনো অভ্যাস ধরে রেখেছি, নিজের জমিতে অল্প পরিমাণ শাকসবজি আবাদ করে বাজারে নিয়ে আসি।
গহিরা কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোজাফফর হোসেন তালুকদার বলেন, গহিরা চৌমুহনীতে সকাল-বিকাল বাজার পাওয়া যায়। সেজন্য কালাচান চৌধুরী হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। কাঠ ব্যবসায়ীদের দখলের বিষয়ে তিনি বলেন, খালি জায়গা পড়ে রয়েছে, তাই সেখান গাছের গুঁড়ি রেখেছেন কেউ কেউ।
ইউপি চেয়ারম্যান প্রিয়তোষ চৌধুরী বলেন, কালাচান চৌধুরী হাটটি একসময় উত্তর চট্টগ্রামের প্রসিদ্ধ বাজার ছিল। এখন স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ীদের রাখা কাঠের গুঁড়ির কারণে সাপ্তাহিক বাজার বসার পরিবেশ হারিয়েছে। তাই ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম হয় না। সংসদ সদস্যের পরামর্শে অবৈধ দখলে যাওয়া বাজার শেড ও অন্য জায়গা উদ্ধার করে দোকানঘর নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
রাউজান উপজেলা সহকারী (ভূমি) মো. রিদুয়ানুল ইসলাম বলেন, কালাচান চৌধুরী হাটের জায়গা বেদখল হয়েছে কি না- তা আমার জানা নেই। খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।