×

এই জনপদ

রেমালের তাণ্ডবে ভোলায় ১০ কি.মি. বাঁধের ক্ষতি

নির্মাণসামগ্রী ভেসে যাওয়ায় সংস্কারকাজ অনিশ্চিত

Icon

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

 নির্মাণসামগ্রী ভেসে যাওয়ায় সংস্কারকাজ অনিশ্চিত

এইচ এম নাহিদ, ভোলা থেকে : ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ভোলায় ১০ কিলোমিটার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের জন্য রাখা সিমেন্ট ও বালুসহ বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী রেমালের জলোচ্ছ¡াসে ভেসে গেছে। এতে করে তীর সংরক্ষণ নির্মাণকাজ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

সরজমিন মেঘনা নদীর তীরবর্তী বেড়িবাঁধ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সদর উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর বেশ কয়েকটি জায়গা দিয়ে পানির স্রোতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসাননগর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের নির্মাণসামগ্রী জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তীর সংরক্ষণ কাজে দুইটি প্যাকেজের প্রায় চার হাজার ব্যাগ সিমেন্ট পানিতে ভিজে শক্ত হয়ে গেছে। সেখানে রাখা বালুস্তূপ থেকে অধিকাংশ বালু নদীতে ভেসে গেছে। সেখানে থাকা নির্মাণকাজের মিক্সার মেশিনসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভোলা পনি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ভোলার সাত উপজেলায় প্রায় ১০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-১ এ ৫ কিলোমিটার, ডিভিশন-২ এ ৫ কিলোমিটার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার বিচ্ছিন্ন উপজেলা মনপুরা। সেখানে প্রায় ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়া জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য রাখা চার হাজার ব্যাগ সিমেন্ট ও ৫০ হাজার ঘনফুট সিলেটস্যান্ট বালু ও ৯ থেকে ১০ হাজার ঘনফুট পাথর বন্যায় নষ্ট হয়েছে। অপরদিকে সদর উপজেলার ইলিশা লঞ্চঘাট এলাকায় বাঁধ নির্মাণের জন্য রাখা একটি ৩০০ টনের বিকে বার্জ হারিয়ে গেছে। এতে প্রায় ১.৫ কোটি থেকে ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অলি উল্লাহ কাজল জানান, ঘূর্ণিঝড়ে তার এলাকার বেড়িবাঁধের চারটি পয়েন্ট দিয়ে ভেঙে যায়। বন্যা চলে গেলেও বাঁধগুলো সংস্কার না করায় এখনো দৈনিক দুই বার এ এলাকাগুলোতে পানি ওঠে। এতে করে প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি থাকেন।

এছাড়াও উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের সোনারচর ও চরযতিন এলাকার পূর্বপাশে বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। এতে ওই এলাকায় জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেন ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন হাওলাদার।

বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসাননগর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর তীরবর্তী বাঁধ নির্মাণের কাজে নিয়োজিত এস-এম জয়েন ভেঞ্চার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা এ জেড এম মনিরুল ইসলাম জানান, ওই এলাকায় তাদের ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে দুইটি প্যাকেজে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ চলছিল। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে তারা কাজ শুরু করেন। ইতোমধ্যে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সেই কাজের জন্য সেখানে সিমেন্ট, বালু ও পাথরসহ নির্মাণসামগ্রী এনে রেখেছিলেন। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তাদের সেখানে প্রায় ৮-১০ ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। এতে তাদের প্রায় চার হাজার ব্যাগ সিমেন্ট পানিতে গলে শক্ত হয়ে যায়। প্রায় ৫০ হাজার ঘনফুট সিলেট সিমেন্ট, বালু ও ৯-১০ হাজার ঘনফুট পাথর পানিতে ভেসে গেছে। এতে করে তাদের প্রায় ১.৫ কোটি থেকে ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে সঠিক সময়ে এ কাজ শেষ করা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

তিনি আরো জানান, মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণের অপর একটি কাজের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ভাড়া করা একটি ৩০০ টনের বিকে বার্জ সদর উপজেলার ইলিশা ঘাটে বেঁধে রাখা হয়। ঝড়ের দিন ২৬ মে গভীর রাতে অ্যাংকর ছিঁড়ে বার্জটিও হারিয়ে যায়। সেটি উদ্ধারের জন্য ডুবুরি ও ডিজিটাল ডিভাইস দিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়। কিন্তু বার্জটির সন্ধ্যান এখনো পাওয়া যায়নি। এখন পানি উন্নয়ন বোর্ড সহায়তা না করলে এ কাজ সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না।

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান জানান, তার আওতাধীন তিনটি উপজেলায় পাঁচ কিলোমিটার বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশি ক্ষতি হওয়া বাঁধ সংস্কারে তারা কাজ করছেন। বাকি জায়গাগুলোও পর্যায়ক্রমে সংস্কার করবেন। এছাড়াও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হওয়া নির্মাণসামগ্রীর বিষয়ে এই মুহূর্তে তাদের কিছু করণীয় নেই।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসান মাহমুদ জানান, ঘূর্ণিঝড়ে তার নিয়ন্ত্রণাধীন চারটি উপজেলায় ৫ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে তিন হাজার ২০০ মিটারই হলো মনপুরা উপজেলায়। এ উপজেলায় ১২টি পয়েন্ট দিয়ে ১৬৫ মিটার বাঁধ ভেঙে গেছে। তারা এ বাঁধগুলো মেরামতের কাজ করছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বাঁধগুলো সংস্কার করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

রাজপাকসের ক্ষমতাচ্যুতির পর শ্রীলংকায় প্রথম ভোট আজ

রাজপাকসের ক্ষমতাচ্যুতির পর শ্রীলংকায় প্রথম ভোট আজ

মব কিলিং সরকার সমর্থন করে না: উপদেষ্টা নাহিদ

মব কিলিং সরকার সমর্থন করে না: উপদেষ্টা নাহিদ

পার্বত্য জেলায় সংঘর্ষ:  নিহত ৪, আহত অর্ধশতাধিক

পার্বত্য জেলায় সংঘর্ষ: নিহত ৪, আহত অর্ধশতাধিক

পলাতক তালিকার শীর্ষে ডিআইজি হারুন

পলাতক তালিকার শীর্ষে ডিআইজি হারুন

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত
নির্বাহী সম্পাদক: এ কে সরকার

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App