সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : সুন্দরগঞ্জে তীব্র গরমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাড়ছে শিশু রোগীর চাপ। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে ৪ থেকে ৫ জন করে শিশু রোগী। ভর্তি থাকা রোগীর পাশাপাশি বহিঃবিভাগে গরমজনিত কারণে দেখা দিয়েছে নতুন রোগীর চাপ। এছাড়া প্রতিদিন তিন থেকে চারজন ডাক্তার বহিঃবিভাগে ৩ থেকে ৪শ রোগীকে সেবা প্রদান করছেন। এতে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। এদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা দিয়েছে ওষুধ সংকট। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রচণ্ড গরমে জনজীবনে নেমেছে এসেছে ভোগান্তি। গত ১৪-১৫ দিন ধরে তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪২ সেলসিয়াসে ডিগ্রি ওঠানামা করছে। ফলে বিভিন্ন বয়সি রোগীর পাশাপাশি শিশুরা জ¦র, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায়সহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসছেন। এদের মধ্যে কেউ ভর্তি হচ্ছে, কেউ আবার চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে যাচ্ছে। ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একসঙ্গে এত শিশু রোগীকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্মরত ডাক্তার ও নার্সদের। এক শিশু রোগীর বাবা আল-আমিন বলেন, প্রচণ্ড গরমে আমার মেয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করি। এখানে এসে দেখি শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। ডাক্তার ও নার্সরা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে, কিন্তু সব ওষুধ বাইরে থেকে আনতে হচ্ছে। নার্সদের কাছে ওষুধ চাইলে তারা ওষুধ সংকট বলে টোকেন দিয়ে বাইরে থেকে ওষুধ কিনে আনতে বলে। বাধ্য হয়ে আমাদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এত বড় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারেটর বা বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় গরমে রোগী ও রোগীর স্বজনদের হাঁসফাঁস অবস্থা। রাতে বিদ্যুৎ না থাকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নবজাতক শিশুর টিকা নিতে আসা মা শারমিন আক্তার বলেন, শিশুর টিকা দেয়ার জন্য কয়েকদিন ধরে আসছি, কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা শেষ হয়ে গেছে, কখন আসবে তাও জানেন না। টিকাপ্রদানকারী নার্স জানান, প্রায় ১ মাস থেকে ডিপিটি, পিসিভি ও বিওপিভি টিকার সংকট দেখা দিয়েছে, টিকা না থাকলে আমাদের কিছু করার নাই। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. তারিকুল ইসলাম জানান, সারাদেশের মতো সুন্দরগঞ্জে তাপদাহ বেশি হচ্ছে। ফলে রোগীর সংখ্যা আগের থেকে বেড়েছে। তবে এখনো হিটস্ট্রোকে কেউ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়নি। গরমের কারণে শিশু ও বৃদ্ধরাই বেশি অসুস্থ হয়ে ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালের আরেক ডা. রেজয়ানুর রহমান জানান, প্রচণ্ড গরমে শিশু ও বয়স্করা বেশি অসুস্থ হচ্ছে, ফলে রোগীর চাপ একটু বেশি। ওষুধ সংকটের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বছর শেষে কিছু ওষুধ ও শিশুদের টিকার সংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদা পাঠানো হয়েছে, আশা করি দ্রুত ওষুধ ও টিকা আসবে। এ বিষয়ে জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়্যিদ মুহাম্মদ আমরুল্লাহ সঙ্গে মোবাইল ফোনে অনেকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।