বন্যা মোকাবিলাই অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার
ড. মিহির কুমার রায়
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বন্যা মোকাবিলাকে সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার উল্লেখ করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও দেশবাসীকে তা মোকাবিলায় সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, সরকার এই মুহূর্তে বন্যা মোকাবিলাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। আমাদের অবশ্যই এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। সবাইকে এ দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে। গত ২৪ আগস্ট বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। উপকূল ও দুর্গত এলাকায় কর্মরত ৪৪টি এনজিওর কর্তাব্যক্তিরা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। বন্যা মোকাবিলায় উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ বিতরণসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. ইউনূস বলেন, বন্যা মোকাবিলায় সরকার, এনজিওসহ যারা যারা কাজ করছেন, তাদের সবার মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে হবে। সম্ভব হলে জেলা পর্যায়েও বন্যা মোকাবিলার কাজে সমন্বিতভাবে করতে হবে। তিনি আরো বলেন, কোটি কোটি মানুষ বন্যায় উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে আসছে। তাদের মহৎ উৎসাহের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি। এজন্য আমাদের সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরে আরো বেশি কাজ করতে হবে বলে উল্লেখ করে বন্যা-পরবর্তী খাদ্য ও স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব পক্ষকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কেবল বন্যা মোকাবিলায় গুরুত্ব দিলে হবে না, কীভাবে দেশকে বন্যামুক্ত রাখা যায় সেদিকেও মনোযোগী হতে হবে।
এখানে উল্লেখ্য, বাংলাদেশ আবারো ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, চলমান এই আকস্মিক বন্যায় দেশের ১২টি জেলায় প্রায় ৫৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, চাঁদপুর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, ল²ীপুর ও কক্সবাজার। গত ২২ আগস্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ত্রিপুরার গোমতী নদীতে ভারতীয় বাঁধ থেকে পানি ছাড়ার কারণে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর ক্যাচমেন্ট (অববাহিকায়) এলাকায় কয়েক দিন ধরে এ বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশে বন্যা মূলত বাঁধের ভাটির দিকের এই বৃহৎ ক্যাচমেন্টের পানির কারণে ঘটেছে।’ এদিকে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেও বলেছেন, ত্রিপুরায় এবার যে বন্যা হয়েছে, তা নজিরবিহীন। সেখানে ৫০ হাজারের মতো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ওই সাক্ষাৎকারে বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি উচ্চতর কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস; যাতে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে দুই দেশ যৌথভাবে মোকাবিলা করতে পারে।
৩১ আগস্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে, সম্প্রতি বন্যায় দেশের ১২ জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব জেলায় এখনো পানিবন্দি রয়েছে ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৯৯৫টি পরিবার। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫৪ লাখ ৫৭ হাজার ৭০২ জন। সূত্রে জানা যায়, বন্যায় দেশের মোট ১২টি জেলার ৬৮টি উপজেলার ৫০৪টি ইউনিয়ন বা পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলাগুলো হলো- ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, চাঁদপুর, ল²ীপুর ও কক্সবাজার। এর মধ্যে চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, সিলেট, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও ল²ীপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। বন্যায় ৭০ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৪ জন, মহিলা ৭ জন, শিশু ১৯ জন। মৃতদের মধ্যে কুমিল্লা ১৯, ফেনী ২৮, চট্টগ্রাম ৬, খাগড়াছড়ি ১, নোয়াখালী ১১, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১, ল²ীপুর ১, কক্সবাজার ৩ ও মৌলভীবাজার ১ জন। আরো ১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। পানিবন্দি বা ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দিতে মোট ৩ হাজার ৯২৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩০৫ জন লোক এবং ৩৬ হাজার ১৩৯টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে মোট ৫১৯টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের এ পর্যন্ত ত্রাণ দেয়া হয়েছে, ৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে নগদ, ২০ হাজার ৬৫০ টন চাল, ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৩৫ লাখ টাকার শিশু খাদ্য এবং ৩৫ লাখ টাকার গোখাদ্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সরকারি-বেসরকারিসহ সব পর্যায় থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে।
কৃষি খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষয়ক্ষতির ফলে অনেক পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস নষ্ট হয়ে গেছে, যা খাদ্য নিরাপত্তার ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া যোগাযোগব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অনেক এলাকায় মোবাইল টাওয়ার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তরা পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছেন। সেনাবাহিনী ত্রাণ প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে এবং খাদ্য ও অন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করছে। তবে পরিস্থিতির তীব্রতার কারণে এই প্রচেষ্টা এখনো অপর্যাপ্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছেন। তারা ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মাধ্যমে ত্রাণ সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এই ত্রাণ সংগ্রহ অভিযানটি বন্যার্তদের জন্য খাদ্য, পানি এবং অন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করতে সহায়ক হচ্ছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে, ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ধরনের ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহের জন্য বুথ স্থাপন করেছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সহায়তা আহ্বান করছেন। তারা বিভিন্ন দাতা সংস্থা, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তির মাধ্যমে প্রাপ্ত ত্রাণসামগ্রী বন্যার্তদের কাছে পৌঁছানোর জন্য পরিকল্পনা করছেন।
এই কার্যক্রমটি শুধু ত্রাণ সংগ্রহই নয়, বরং বন্যার্তদের জন্য একটি নৈতিক সমর্থন এবং সহযোগিতার বার্তা প্রদান করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা তাদের সংগঠনের মাধ্যমে এই সংকটকালে সমাজের প্রতি দায়িত্বশীলতা এবং মানবিকতা প্রদর্শন করছেন, যা খুবই প্রশংসনীয়। বন্যার্তদের সহায়তায় বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নিজেদের কাজের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এই সংকটের সময়ে সহায়তার জন্য তাদের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা সত্যিই প্রশংসনীয়। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অর্থ, খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং চিকিৎসাসামগ্রী সরবরাহ করছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সমাজকর্মীরা নিজেরা কিছু পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ করে তা বন্যার্তদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। অনেক ব্যক্তি ব্যক্তিগত উদ্যোগে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ করছেন, যাদের সহায়তার ফলে অনেক বন্যার্তের খাবারের অভাব মেটানো সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছে। তারা বন্যার্তদের জন্য খাদ্য বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা প্রদান এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বিভিন্ন প্রকার সহায়তা করছেন। কিছু সংস্থা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম পাঠাচ্ছে এবং পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব রোধে সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করছে।
দেশে বন্যার প্রকৃতি ও ক্ষয়ক্ষতি মূলত তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। প্রথমত, উজান থেকে কী পরিমাণে পানি আসছে। দ্বিতীয়ত, কত দ্রুত বা ধীরগতিতে পানি আসছে আর কতদিন ধরে সেই পানি বাংলাদেশে থাকছে। তৃতীয়ত, দেশের নদী-নালা-খাল-বিলে পানির ধারণক্ষমতা। উজানের ভারতীয় অঞ্চলে এবং দেশের ভেতরের প্রাকৃতিক স্বাভাবিকতা বিনষ্ট হওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এ তিন ক্ষেত্রেই জটিলতা বেড়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতি বেশি হচ্ছে। বিশেষত উজান থেকে আসা পলির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে নদীর তলদেশের গভীরতা কমে নদীর পাড়ভাঙন বাড়ছে। আবার শুকনো মৌসুমে নদীগুলোর পানি পরিবহন ক্ষমতা কমে যাওয়ার ফলে এ পলি নদীর তলদেশে জমা হয়ে নদী ভরাট করে ফেলছে। আবার দেশের ভেতরের নদ-নদীর নাব্যতা কমে যাওয়া, চ্যানেলগুলো বন্ধ হওয়ার কারণেও দিন দিন বন্যা বাড়ছে। এসব সংকটের সমাধান করতে না পারলে বন্যার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে না। বন্যা মোকাবিলায় সব কর্তৃপক্ষকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘন ঘন বন্যা আরো তীব্র আকার ধারণ করছে। এটি একটি আপদকালীন অবস্থা, যা প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট উভয় কারণেই আরো খারাপ হয়েছে। পুকুর, খাল ও হাওর যেগুলো একসময় এ অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত ছিল এবং বন্যার সময় অতিরিক্ত পানির জলাধার হিসেবে কাজ করত, গত কয়েক দশকে সেগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অবিবেচনাপ্রসূত উন্নয়ন, নগরায়ণ এবং ত্রæটিপূর্ণ সরকারি নীতির কারণে এমনটা হয়েছে। ওই এলাকায় অনেক নদ-নদীও দখল করা হয়েছে। এতে গ্রীষ্মকালে এগুলো শুকিয়ে যায় এবং স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি বৃষ্টি হলেই উপচে পড়ে। দেশের প্রধান নদীগুলোকে দখল ও দূষণের হাত থেকে রক্ষা করে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই পরিকল্পনা নিতে হবে। বছর বছর নদী খননের জন্য অর্থ বরাদ্দ হলেও সে অনুপাতে কাজ হয় না। দেশের নিম্ন এলাকার মানুষকে বন্যার হাত থেকে বাঁচাতে হলে লোক দেখানো নদী খননের কাজ বন্ধ করতে হবে। টেকসই ও পরিকল্পিত উপায়ে নদী খননে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এরপর প্রত্যেকের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে হবে। বিশেষ করে যাদের ঘরবাড়ি ও কৃষি, মৎস্য খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ঘর মেরামত করতে হবে তাকে আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। যার কৃষি উপকরণ দরকার তাকে উপকরণের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতির সুযোগ নেই। আশা করি, জাতীয় ও স্থানীয় প্রশাসন সমন্বিতভাবে কাজটি করবে। ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের লক্ষণ এখনো দেখা না গেলেও অচিরেই আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সামনে ভয়াবহ বন্যার যে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তা আমলে নিয়েই সরকারের এখন থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেয়া উচিত। বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়ানো আমাদের আয়ত্তের বাইরে। এ সংকট থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়ায়, ভবিষ্যতের দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা গড়ে তোলার এক বিশেষ সুযোগ রয়েছে। তবে এটি সরকারের, নাগরিক সমাজের এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং বিনিয়োগের ওপর নির্ভর করছে। সম্মিলিত পদক্ষেপের মাধ্যমেই বাংলাদেশ ভবিষ্যতে বন্যার ক্ষতি কমাতে এবং এর সাধারণ জনগণের জীবন ও জীবিকা রক্ষা করতে সক্ষম হবে বলে প্রত্যাশা।
ড. মিহির কুমার রায় : কৃষি অর্থনীতিবিদ ও গবেষক।