×

সম্পাদকীয় ও মুক্তচিন্তা

চিকিৎসকদের কর্মবিরতি

রোগীদের দুর্ভোগ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের প্রয়োজনীয়তা

Icon

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রোগীদের দুর্ভোগ ও স্বাস্থ্য  সুরক্ষা আইনের প্রয়োজনীয়তা

চিকিৎসকদের নিরাপত্তাসহ তিন দফা দাবিতে ডাকা কর্মবিরতিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের সেবা বন্ধ রয়েছে। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ খোলা রেখেছেন চিকিৎসকরা। তৈরি হয়েছে চরম চিকিৎসা সংকট। এমন অবস্থা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সারাদেশেই একটি খারাপ সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। ভুল চিকিৎসা, উপযুক্ত মনোযোগ না দেয়া কিংবা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে এক শ্রেণির মানুষ চিকিৎসকদের ওপর হামলা চালায়, হাসপাতালে ভাঙচুর করে কিংবা হাসপাতালের কর্মচারীদের মারধর করে। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। যা দুঃখজনক। গণমাধ্যমগুলোতে রোগীদের দুর্ভোগের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হচ্ছে। পাশাপাশি উঠে আসছে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিও। জানা গেছে, রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার আহসানুল হক দীপ্ত নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস টেকনোলজির ছাত্র ছিলেন। এরপর তার কয়েকজন সহকর্মী দলবদ্ধ হয়ে ঢামেক হাসপাতালে ওই দিন রাতে ৩ দফায় হামলা ও চিকিৎসক-নার্সদের মারধর করে। রাতেই কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, হামলার ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। অন্য চিকিৎসকরাও তাদের কর্মবিরতিতে সংহতি জানালে পরদিন দুপুর থেকে হাসপাতালের সব বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়। সারাদেশ থেকে আসা হাজার হাজার রোগী চরম দুর্ভোগে পড়ে। ভর্তি থাকা রোগীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হয়। চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে অনেক রোগীকে। চিকিৎসকদের স্পষ্ট দাবি, হামলাকারীদের আটক ও শাস্তির ব্যবস্থা করা এবং সারাদেশে চিকিৎসক ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দাবি নিয়ে চিকিৎসকরা সরব হলেও সেসব মেনে নেয়ার আশ্বাস না মেলায় রবিবার সারাদেশে সব চিকিৎসাকেন্দ্রে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। সঙ্গে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। ওই দিন সন্ধ্যায় সংকট নিরসনে হাসপাতালের ছয় চিকিৎসকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে কিছু শর্ত জুড়ে দিয়ে কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা দেন চিকিৎসকরা। এসব শর্ত না মানা হলে আবার শাটডাউন কর্মসূচিতে ফিরবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের দাবিগুলোকে আমরা যৌক্তিকভাবে দেখছি। চিকিৎসকদের ওপর হামলার এই ঘটনায় আবারো স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নের জোর দাবি উঠেছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনটি প্রণয়নের কাজ দীর্ঘদিন ধরে চলমান থাকলেও এখনো সম্পন্ন করা যায়নি। ২০১৪ সালে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের একটি খসড়া তৈরি করা হয়। ২০১৬ সালে চিকিৎসকদের বাধার মুখে খসড়ায় কিছু বিষয় সংযোজন-বিয়োজন করে ‘রোগী এবং স্বাস্থ্যসেবাদানকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সুরক্ষা আইন- ২০১৬’ নামকরণ করা হয়। খসড়ায় চিকিৎসক, রোগী, রোগীর স্বজনদের আচরণ ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়। পরবর্তী সময়ে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা এবং রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। ফলে আইনটি দ্রুত পাস করার বিষয়টি সামনে আসে। কিন্তু চিকিৎসকদের বাধার মুখে ২০১৭ সালে আইনটি করা সম্ভব হয়নি। বর্তমান সরকার সতর্কতার সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবার জন্য পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়নে নজর দিতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

পেশাদার সাংবাদিকতা করেছি, আমি সরকারের সুবিধা নেইনি

রিমান্ড শুনানিতে শ্যামল দত্ত পেশাদার সাংবাদিকতা করেছি, আমি সরকারের সুবিধা নেইনি

১৭ সেপ্টেম্বর: সারাদিন যা যা ঘটলো

১৭ সেপ্টেম্বর: সারাদিন যা যা ঘটলো

শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র কতটা গুরুত্ব বহন করে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র কতটা গুরুত্ব বহন করে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

কবির, নূরুল, তৌফিকসহ আরো যারা গ্রেপ্তার হলেন

কবির, নূরুল, তৌফিকসহ আরো যারা গ্রেপ্তার হলেন

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App