×

সম্পাদকীয় ও মুক্তচিন্তা

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সময়োপযোগী হোক

Icon

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সময়োপযোগী হোক

দেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। একই সঙ্গে তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়া তামাক ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে। চিত্রটি ভয়াবহ। দিন দিন এ সংখ্যা বাড়বে, কমবে না। তামাক ব্যবহারে কোম্পানিগুলো বিশেষ করে তরুণ সমাজকে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে তামাকপণ্যের প্রচার ও বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ হলেও কার্যকর বাস্তবায়নের অভাবে তামাক কোম্পানির কূটকৌশল ও চটকদার বিজ্ঞাপনের ফলে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে দেশের তারুণ্য। তাই বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) যুগোপযোগী করে তরুণদের রক্ষার দাবি বিভিন্ন মহল থেকে করা হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বললে চলে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে তামাক নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা বাস্তবায়নে জোর দাবি জানিয়েছে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো। সংগঠনের প্রতিনিধিরা বলছেন, দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকা প্রকাশ। এই নির্দেশিকার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে। গত বুধবার এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর অডিটোরিয়ামে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকা প্রকাশ ইতিবাচক। মাঠ পর্যায়ে কার্যকর কী হয়, সেটা দেখার বিষয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, হৃদরোগজনিত মৃত্যুর প্রায় ১২ শতাংশের জন্য দায়ী তামাক ব্যবহার এবং পরোক্ষ ধূমপান। হৃদরোগের কারণ হিসেবে উচ্চ রক্তচাপের পরেই তামাকের অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০০৫ থেকে ২০১৬ সময়কালে বাংলাদেশে অকালমৃত্যুর কারণের তালিকায় হৃদরোগ ৭ম স্থান থেকে ১ম স্থানে উঠে এসেছে। এই পরিবর্তনের হার প্রায় ৫৩ শতাংশ। এই মৃত্যুর জন্য দায়ী হিসেবে তামাকের অবস্থান চতুর্থ। ধূমপান শুধু ব্যবহারকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে না, উপরন্তু যারা তাদের আশপাশে থাকে তারাও এর ক্ষতির প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে পারে না। তারা না চাইলেও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। বিশেষভাবে শিশু, নারী ও নারীর গর্ভের সন্তান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি ও বিপণনের জন্য বাংলাদেশে কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। এমনকি তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের সঙ্গে সম্পৃক্তদের নির্ধারিত কোনো ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণের ব্যবস্থাও নেই। যে কারণে শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রের আশপাশের এলাকা, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, খাবারের দোকান, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন স্থানে অনিয়ন্ত্রিতভাবে তামাকজাত পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। তাই তারুণ্যগ্রাসী তামাকজাত দ্রব্য সব মাদক বিস্তার এখন জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত। তামাকের থাবা রুখতে হবে যে কোনো মূল্যে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকার মিয়ানমার অংশে ইয়াবাসহ নানারকম মাদক তৈরির কারখানাগুলো নিষ্ক্রিয় করা জরুরি। ঢাকা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে যেসব চিহ্নিত প্রভাবশালী মাদক কারবারি রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ব্যবসায় জড়িত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সদস্য তাদের সহায়ক, সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। প্রশাসনিক কঠোর অবস্থান, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং জনসচেতনতাই পারবে সব ধরনের তামাকের শিকড় উপড়ে ফেলে এর বিস্তার ঠেকাতে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

১৩ সেপ্টেম্বর: সারাদিন যা যা ঘটলো

১৩ সেপ্টেম্বর: সারাদিন যা যা ঘটলো

ডোনাল্ড লু’র নেতৃত্বে আজ ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধিদল

ডোনাল্ড লু’র নেতৃত্বে আজ ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধিদল

রাজধানীতে ট্রাফিক পুলিশকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

রাজধানীতে ট্রাফিক পুলিশকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

বিএনপি নেতা আশফাকের নেতৃত্বে বায়রার ইসি বৈঠকে হামলা-ভাঙচুর

বিএনপি নেতা আশফাকের নেতৃত্বে বায়রার ইসি বৈঠকে হামলা-ভাঙচুর

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App