×
Icon ব্রেকিং
সাবেক বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী গ্রেপ্তার

সম্পাদকীয় ও মুক্তচিন্তা

চালু হোক ছাত্র সংসদ

Icon

প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

চালু হোক ছাত্র সংসদ

ছাত্র রাজনীতি হলো ছাত্রদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে কোনো ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য সুষ্ঠু রাজনীতি চর্চা। ছাত্র রাজনীতির উদ্দেশ্য হলো নেতৃত্ব দেয়ার গুণ শেখা। আমাদের দেশে ছাত্র রাজনীতির সোনালি একটি ইতিহাস রয়েছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা আন্দোলনসহ প্রতিটি ঐতিহাসিক অর্জনে ছাত্রসমাজ সক্রিয় অংশগ্রহণের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের দেশের ছাত্র রাজনীতির নামে যা হচ্ছে তা হলো তোষামোদি, গুণ্ডামি ইত্যাদি। যে যত বড় মাস্তান সে তত বড় ছাত্রনেতা। আগে ছাত্ররা রাজনীতি করত সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে ও মানুষের কল্যাণে; কিন্তু এখন ছাত্র রাজনীতির নামে চলে হলের সিট বাণিজ্য, র‌্যাগিং, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, শিক্ষক নিয়োগে প্রভাব খাটানোসহ নানা রকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। ছাত্রদের অধিকার আদায়ে তাদের কোনো ভূমিকা রাখতে দেখা যায় না। উল্টো তারা ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে দাপটের সঙ্গে ঘুরে বেড়ায়। শিক্ষার্থী হিসেবে তাদের যে উদ্দেশ্য তা বাদ দিয়ে তারা করছে ছাত্র রাজনীতি। ছাত্ররা করবে ছাত্রদের রাজনীতি। যেই রাজনীতির মাধ্যমে ভালোর চর্চা করবে, আদর্শের চর্চা করবে।

তবে আমাদের দেশে চলে তার উল্টো চিত্র, যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তখন দেখা যায় ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনগুলোর প্রথম টার্গেট থাকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ন্ত্রণের জন্য তারা হলগুলোর নিয়ন্ত্রণ দখল করে। হল দখলের পর এসব সংগঠনের প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা। তাদের জোর করে যেমন দলের কাজে লাগানো হয়, তেমনি দলের রাজনৈতিক কর্মী বানানোরও চেষ্টা করা হয়।

দেখা যায়, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ছাত্রদল বা শিবির একেবারেই নিশ্চুপ। আবার বিএনপি এবং জামায়াত জোট সরকারের আমলে শুধু শিবিরের ভয়ে ছাত্রলীগের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।

জাতীয় রাজনীতি ছাত্র রাজনীতিকে বিষাক্ত করে তুলেছে। ছাত্রলীগ বা ছাত্রদলের মতো ছাত্র সংগঠনগুলো যতদিন মূল সংগঠন থেকে আলাদা হতে না পারবে, ততদিন এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

ছাত্ররা রাজনীতি করবে ছাত্র সংসদের ভিত্তিতে। ছাত্র সংসদ থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ছাত্রদের কথা বলার একটা জায়গা তৈরি হবে। দেশে বহুকাল ধরে নিষ্ক্রিয় ছাত্র সংসদ। সর্বশেষ ২০১৯-২০ সালে প্রায় তিন দশক পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচন অনুষ্ঠানেও ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যথেষ্ট অনীহা। এরপর আর নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং কলেজে একই অবস্থা। সর্বশেষ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন হয়েছে ১৯৯২ সালে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৯৯০ সালে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৯৯০ সালে। অন্যদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র সংসদের বিধানই নেই।

বাংলাদেশের মানুষ এখন স্বপ্ন দেখে একটি প্রগতিশীল আদর্শ রাষ্ট্রের। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব জনগণের জন্য কল্যাণকর রাজনীতি চর্চার মাধ্যমে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের শুরুটা হোক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে ক্ষমতাসীন দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বাদ দিয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন পুনরায় চালু করার মধ্য দিয়ে।

ফারজানা ইয়াছমিন : শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

মেট্রোরেল মেরামতে ব্যয় কমলো যেভাবে

মেট্রোরেল মেরামতে ব্যয় কমলো যেভাবে

সাবেক তিন আইজিপি ও র‌্যাবের দুই মহাপরিচালকসহ ৮৮ পুলিশের নামে মামলা

সাবেক তিন আইজিপি ও র‌্যাবের দুই মহাপরিচালকসহ ৮৮ পুলিশের নামে মামলা

কিউবার জালে ব্রাজিলের ১০ গোল

কিউবার জালে ব্রাজিলের ১০ গোল

নীলফামারীতে স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল

নীলফামারীতে স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App