লুটপাট, নৈরাজ্যের দ্রুত অবসান হোক
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে একটি ক্রান্তিকাল চলছে। খুব সহজে এই ক্রান্তিকাল কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয় বলে সর্বমহলের ধারণা। এর মধ্যে এক অনিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি বিরাজ করছে চারপাশে। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে এক ভয়ানক নৈরাজ্যের সৃষ্টি করেছে দুর্বৃত্তরা। একরাতেই দেশজুড়ে বহু হতাহত ও খুনের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল গণভবন দিয়েই শুরু হয় এই দুর্বৃত্তায়ন। এর পরপর সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু ভবন, বিজয় সরণিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, প্রধান বিচারপতির ভবন, পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএনসিসির ভবন, ঢাবি উপাচার্যের ভবন, সুধা সদন, গণমাধ্যম ভবন, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কার্যালয়, শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকাসহ থানায় থানায় ভাঙচুর, আগুন ও লুটপাট করে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া দেশের ২৯টি জেলায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। এর মধ্যে চার জেলায় ৯টি মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে তারা দাবি করেছে। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় শূন্যতা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার মতো কেউ নেই। নতুনভাবে যারা দায়িত্বশীল তাদের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। যদিও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দিয়েছিল সেনাপ্রধান। যত দ্রুত সম্ভব জানমালের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে তাদের ভাবা উচিত। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দিয়ে পরিচালিত হতে যাচ্ছে দেশ। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তিন বাহিনী প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করা হয়েছে। কিন্তু মারমুখী যে পরিবেশ রয়েছে, তা কবে শান্ত হবে বলা যাচ্ছে না। সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় না নিয়ে আসা পর্যন্ত অরাজকতার আশঙ্কা বরাবরই থেকে যায়। তবে আমরা আর কোনো অশান্তি চাই না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ বিভিন্ন দলের নেতারাও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন। তাও কিছু দুর্বৃত্তের লাগাম টেনে ধরতে যত দ্রুত সম্ভব শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিহিংসা বাদ দিয়ে আমাদের শান্তি রক্ষায় দায়িত্ববান হতে হবে। লুটপাট-নৈরাজ্য অবসান ঘটাতে আমাদের সবার সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার সঙ্গে অবস্থান করতে হবে।