×

সম্পাদকীয় ও মুক্তচিন্তা

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মডেল নিয়ে ভাবা যায়

Icon

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মডেল নিয়ে ভাবা যায়
নতুন করে রাজধানীতে বেড়েছে এডিস মশার প্রকোপ। ফলে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এখনই মশক নিধনে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া না হলে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। মশক নিয়ন্ত্রণে নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হলেও তা কার্যকরে কিছু আমরা দেখিনি। মশক নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য দেশের আইডিয়া নিয়ে কাজ হতে পারে- এমন প্রতিবেদন গতকাল ভোরের কাগজে প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাফল্য দেখিয়েছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও কলকাতা মডেল। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও মশা গবেষক অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশারও কেবি (কবিরুল বাশার) মডেল নামে একটি মডেল তৈরি করেছেন। এর আগে গত বছর আগস্ট মাসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস জানিয়েছিলেন, তারা সিঙ্গাপুরের মডেল অনুসরণ করে মাঠপর্যায়ে মশার আধার নির্মূলে কাজ করছেন। এসব উদ্যোগ ধরে সংশ্লিষ্টরা এগোতে পারেন। জানা গেছে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কলকাতা মডেল বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। মালয়েশিয়ায় জনসম্পৃক্ততা; ব্যক্তি, সমাজের নেতা এবং বিভিন্ন সংস্থার সক্রিয় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণ করেছে। কঠোর অনুশাসনের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর সরকার জনগণের শতভাগ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সফলতা প্রমাণ করেছে। এছাড়া ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার প্রায় শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে পেরেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিজের মডেল সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি মডেল তৈরি করা হয়েছে। এই মডেল অনুযায়ী ৫ বছর কার্যক্রম চালাতে পারলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ হবে। এ বছর আনুমানিক ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে তাদের মডেলটি বাস্তবায়নে যে ব্যয় হবে, তা মোট নিয়ন্ত্রণ ব্যয়ের চেয়ে অনেক কম। উপরোক্ত মডেলগুলো গুরুত্ব রাখে বলে মনে করি। ২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে ডেঙ্গু রোগে তখন ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, যথাযথ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া অনুসরণ ও জনসচেতনতা সৃষ্টি হলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এখনো ডেঙ্গুজ¦রের কোনো প্রতিষেধক বের করতে পারেনি সরকার। ডেঙ্গু থেকে রেহাই পেতে হলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আইইডিসিআরের তথ্য মতে, সাধারণত জুন-জুলাই থেকে শুরু করে অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ডেঙ্গুর বিস্তার থাকে। সাধারণত মশক নিধন কার্যক্রমের স্থবিরতা, গাইডলাইনের অভাব এবং মানুষের অসচেতনতাই ডেঙ্গুর প্রকোপের জন্য দায়ী। হঠাৎ থেমে থেমে স্বল্পমেয়াদি বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা খুব বেশি মাত্রায় প্রজনন সক্ষমতা পায়। ফলে এডিস মশার বিস্তারও ঘটে বেশি। এ মশা যত বেশি হবে ডেঙ্গুর হারও তত বাড়বে। উৎস বন্ধ না করতে পারলে ডেঙ্গুর ঝুঁকি থেকেই যাবে। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে দুই সিটির তেমন কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে দেখা যায়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা পরিচালিত এক জরিপে উত্তর সিটির ৬৩টি এবং দক্ষিণ সিটির ৯৬টি বাড়িতে এডিস মশা অতিরিক্ত মাত্রায় চিহ্নিত করা হয়েছে। জরিপে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ২২টি ওয়ার্ডে বিভিন্ন মাত্রার ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়। প্রথমত, ঝুঁকি চিহ্নিত ওয়ার্ডগুলোতে মশা নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। বিশেষ করে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এডিস নিধন এবং এডিসের বংশবিস্তার রোধে জোরদার অভিযান পরিচালনা করবে- এ প্রত্যাশা নগরবাসীর।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App